ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তাসকিনের সঙ্গে এ বাঁহাতির ব্যাট-বলের লড়াই

প্রস্তুতি ম্যাচে অনেক উপকার দেখছেন ইমরুল

প্রকাশিত: ২৩:২৩, ৬ অক্টোবর ২০২০

প্রস্তুতি ম্যাচে অনেক উপকার দেখছেন ইমরুল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের বিরতিতে সবধরনের ক্রিকেট কর্মকাণ্ড বন্ধ ছিল। তবু নিজের গ্রামে গিয়ে মাঠে নেমেছিলেন ইমরুল কায়েস ব্যাট হাতে। পরবর্তীতে প্রায় সাড়ে ৪ মাস পর ক্রিকেটারদের একক অনুশীলন শুরু হয়ে গেলে আসল অনুশীলনের স্বাদ পেতে শুরু করেন ইমরুল। তবে প্রথম যেদিন ব্যাট করেছেন, কিছুক্ষণ ব্যাট চালিয়েই তার হাতে ফোস্কা পড়ে যায়। ধীরে ধীরে মাঠের সঙ্গে ধাতস্থ হয়েছেন তিনি। বাকি ক্রিকেটারদেরও সংগ্রাম করতে হয়েছে। এখন সবাই ম্যাচ পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে ওঠার চেষ্টায় আছেন। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সোমবার জাতীয় দলের দ্বিতীয় দুইদিনের প্রস্তুতি ম্যাচে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন তাসকিন আহমেদ। তবে এর মধ্যেই ইমরুল ছিলেন দুর্দান্ত। তাসকিনকে দিনের প্রথম ছক্কাটা হাঁকিয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তাসকিনের বলেই সাজঘরে ফেরার আগে সর্বোচ্চ ৫৯ রানের ইনিংস খেলেছেন। দিনশেষে তার দল ওটিস গিবসন একাদশ ৮ উইকেটে ২৪৮ রান তোলে। ম্যাচশেষে দীর্ঘ বিরতিতে ব্যাটসম্যান-বোলারদের সামগ্রিক অবস্থা জানিয়ে ইমরুল দাবি করেন এই প্রস্তুতি ম্যাচ সবার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। প্রথম ২ দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে ইমরুল ৭ রানেই ডানহাতি পেসার তাসকিন আহমেদের বলে সাজঘরে ফিরেছিলেন ইমরুল। আসলে ক্রিকেট ম্যাচ দীর্ঘ সময় না খেলার অনভ্যস্ততা থেকেই নানা সমস্যা বোধ করেছেন, তাই মানিয়ে উঠতে সময় লেগেছে। ব্যাটসম্যানদের রান করতে খুব কষ্ট করতে হয়েছে। তবে ইমরুল মনে করেন বোলাররা দীর্ঘ সময় পরও দারুণ ছন্দ, গতি নিয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। তিনি বলেন, ‘যেটা হয় এ রকম লম্বা বিরতির পর সবাই প্রথম দুয়েকটা ম্যাচে একটু নার্ভাস থাকে বোলিংয়ে বা ব্যাটিংয়ে। আমার মনে হয় সবাই নিজের কাজটা যথাযথভাবে করেছে বিরতিতে। যার কারণে ওইরকম বড় সমস্যা হয়নি। প্রত্যেকটা বোলারই বেশ ছন্দ নিয়ে এবং পূর্ণ উদ্যমে বোলিং করেছে। মনেই হয়নি যে তারা ক্রিকেটের বাইরে ছিল। পেশাদারিত্বের দিক থেকে আমি বলব- প্রতিটি খেলোয়াড়ই অনেক সিরিয়াস হয়েছে যেটা আমাদের ক্রিকেটের জন্য অনেক জরুরী জিনিস। ব্যাটসম্যানরাও চেষ্টা করেছে উইকেটে থেকে রান করার। তবে সহজে রান করতে পারেনি, বোলাররা ওভাবে সুযোগগুলো সহজ করে দেয়নি, কষ্ট করে রান করতে হয়েছে।’ এই কষ্টের সুফল পেয়েছেন ইমরুল দ্বিতীয় ম্যাচে এসে। ৯৩ বলে ৮ চার, ১ ছক্কায় খেলেছেন ৫৯ রানের ইনিংস। এটি ছিল সোমবার ওটিস গিবসন একাদশের হয়ে সর্বোচ্চ রান। প্রথম ম্যাচে ৩ উইকেট নেয়া তাসকিন এদিনও আগুন ঝরিয়েছেন। সাইফ হাসান (৭) ও নাজমুল হোসেন শান্তকে (২) দিনের প্রথমেই সাজঘরে পাঠিয়ে ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন। তবে ইমরুলের সঙ্গে তার লড়াইটা জমে ওঠে। ম্যাচের প্রথম ছক্কাটা তিনি তাসকিনকেই হাঁকান। এদিন সবার আগ্রহ ছিল দীর্ঘ সময় পর তামিম ইকবাল খেলতে নামবেন, তার ব্যাটিং দেখবেন। কিন্তু তার দল রায়ান কুক একাদশ ফিল্ডিং পায়। ফিল্ডিংয়ে থেকেই তিনি সাবেক ওপেনিং সঙ্গীর ছক্কা হাঁকানোটা অনেকদূর থেকে তা তাকিয়ে দেখেছেন। ১১২ রানের মাথায় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ৮০ রানের জুটিটা ভেঙ্গে যায়। তাসকিনের উঠতি বল ঠেকাতে গিয়ে তাকেই ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ইমরুল। মাহমুদুল্লাহও এবার অর্ধশতক পেয়েছেন। তিনি ৫৬ রান করেন। এছাড়া লিটন কুমার দাসও রানে ফিরে করেছেন ৪৪। তাসকিন এদিনও ৩ উইকেট নিয়েছেন। আর আবার অফস্পিনের জাদু দেখিয়েছেন মোহাম্মদ মিঠুন। এবারও তিনি ২ উইকেট তুলে নেন। ৮ উইকেটে ২৪৮ রান করে ওটিস গিবসন প্রথমদিন শেষে। ম্যাচশেষে ইমরুল বলেন, ‘প্রথমে একটা ম্যাচ খেলেছিলাম সেখানে মানিয়ে নেয়াতে একটু সমস্যা হয়েছিল। ব্যক্তিগতভাবে আমি অতটা ভাল খেলতে পারিনি। ম্যাচটাতেও অনেক ভোগাচ্ছিল। তবে এই ম্যাচটাতে পরিকল্পনা মোতাবেক সব ঠিক ছিল। যেভাবে ব্যাটিং করতে চেয়েছি ওভাবেই করতে পেরেছি। এই দুটা ম্যাচ আসলে আমাদের জন্য খুবই জরুরী ছিল। কারণ অনেকদিন পর খেলতে গেলে পরিকল্পনাসহ সবকিছুই আসলে ওলট-পালট হয়ে যায়। কিন্তু এ রকম একটা সুযোগ পেয়ে সব ব্যাটসম্যান ও বোলারই ব্যক্তিগতভাবে তা কাজে লাগিয়েছে। অবশ্যই খেলা অনেকদিন পর শুরু হয়েছে এটা অবশ্যই আমাদের বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য অনেক বড় একটা স্বস্তির বিষয়। একজন খেলোয়াড় হিসেবে বাসায় বসে থাকা খুব কষ্টের।’
×