ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইডেনের অধ্যক্ষ মাহফুজা হত্যা মামলায় দুই গৃহকর্মীর মৃত্যুদন্ড

প্রকাশিত: ২২:২০, ৫ অক্টোবর ২০২০

ইডেনের অধ্যক্ষ মাহফুজা হত্যা মামলায় দুই গৃহকর্মীর মৃত্যুদন্ড

কোর্ট রিপোর্টার ॥ ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী পারভীনকে হত্যা মামলায় তার বাসার দুই গৃহকর্মী রিতা আক্তার ওরফে স্বপ্না এবং রুমা ওরফে রেশমাকে মৃত্যুদন্ডের রায় দিয়েছে আদালত। রবিবার ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মোঃ কামরুজ্জামান আসামিদের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন। দেড় বছর আগে রাজধানীতে নিজ বাসায় খুন হন মাহফুজা। মাহফুজা চৌধুরী ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে নিজের বাসায় খুন হন তিনি। ওই ঘটনায় তার স্বামী ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসমত কাদির গামা নিউমার্কেট থানায় মামলা দায়ের করেন। অধ্যক্ষ মাহফুজার ছেলে সানিয়াত ইসমত অমিত তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। আদালত দুই আসামিকে হত্যার দায়ে সর্বোচ্চ সাজার আদেশ দেয়ার পাশাপাশি চুরির জন্য সাত বছর করে সশ্রম কারাদ- এবং ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের জেল দেয়। তবে ফাঁসির রায় কার্যকর হয়ে গেলে কারাদ-ের আদেশ আর প্রযোজ্য হবে না। বিচারক আবু জাফর মোঃ কামরুজ্জামান তার রায়ের পর্যবেক্ষণে গৃহকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে ছয়টি নির্দেশনা দিয়েছেন। দুই আসামিকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়ার ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, সর্বজন মান্য, মানুষ গড়ার কারিগর, সকলের শ্রদ্ধাভাজন ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষকে এভাবে হত্যাকারী আসামিরা কোনভাবেই অনুকম্পা পেতে পারে না। অধ্যক্ষ মাহফুজাকে হত্যার পর মামলা হলে পুলিশ ওই বাসার গৃহকর্মী স্বপ্না ও রেশমা এবং রুনু বেগম নামে এক নারীকে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নেয়। পরে স্বপ্না ও রেশমা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দেয়। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২১ জুলাই স্বপ্না ও রেশমাকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন নিউমার্কেট থানার এসআই আলমগীর হোসেন। সেখানে বলা হয়, বাসায় থাকা ২০ ভরি সোনা, একটি মোবাইল ফোন এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা চুরি করতে আসামিরা মাহফুজাকে নাকে-মুখে ওড়না পেঁচিয়ে ও বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। ওই বাসায় দুই গৃহকর্মীকে কাজে দিয়েছিলেন রুনু বেগম। হত্যাকান্ডে তার জড়িত থাকার প্রমাণ না পাওয়ায় অভিযোগপত্রে তাকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়। চলতি বছরের শুরুতে মামলাটি বিচারের জন্য দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। এরপর ৯ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচারক দুই আসামির বিচার শুরুর আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষে ২৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর মামলাটি বিচারের শেষ পর্যায়ে আসে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে বিচারক রায়ের তারিখ ৪ অক্টোবর ধার্য করেন। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন আবু আব্দুল্লাহ ভূঞা। আসামি পক্ষে আইনজীবী মতিউর রহমান মতি মামলাটি পরিচালনা করেন।
×