ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্ব প্রবীণ দিবসে ওয়েবিনার

প্রবীণদের সামাজিক সুরক্ষা বলয় বাড়ানোর দাবি

প্রকাশিত: ২১:৫৯, ৫ অক্টোবর ২০২০

প্রবীণদের সামাজিক সুরক্ষা বলয় বাড়ানোর দাবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রবীণ জনগোষ্ঠীর অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট আইন প্রণয়নের পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষার বলয় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। সেই সঙ্গে প্রবীণদের কর্মসংস্থানের বিষয়টির প্রতিও গুরুত্ব দেয়ার কথা বলেছেন বক্তারা। বিশ্ব প্রবীণ দিবস উপলক্ষে রবিবার প্রবীণ অধিকার মঞ্চ আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এ দাবি জানানো হয়। ‘বৈশ্বিক মহামারীর বার্তা-প্রবীণদের সেবায় নতুন মাত্রা’ প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে গত ১ অক্টোবর দিবসটি বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হয়েছে। প্রবীণ অধিকার মঞ্চের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মোঃ আশরাফ আলী খান খসরু। প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী মোঃ আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭ থেকে ৯ শতাংশ পবীণ হিসেবে গণনা করা হচ্ছে এবং মানুষের গড় আয়ু বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রবীণদের সংখ্যা বাড়চ্ছে। প্রবীণদের জন্য সরকার গৃহীত নানা পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে প্রায় ৪৪ লাখ প্রবীণকে বয়স্ক ভাতার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে এবং বিগত ২০১৯-২০ অর্থবছরে শুধু বয়স্ক ভাতা বাবদ সরকারের বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। করোনাকালীন প্রবীণদের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আরও ১১২ উপজেলায় ৫ লাখ প্রবীণের জন্য ৩শ’ কোটি টাকা বয়স্ক-ভাতা দেয়ার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে যা পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশের প্রতি উপজেলায় চালু হবে বলেও জানান তিনি। শুধুমাত্র সরকারের ওপর নির্ভরশীল না থেকে প্রবীণদের অবস্থানের উন্নয়নে সবাইকে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান তিনি। সভাপতির বক্তব্যে পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, প্রবীণদের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধের পরিচর্যার বিকল্প নেই। প্রবীণদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য নবীন-প্রবীণ মেলবন্ধনের পাশাপাশি সবাইকে একযোগে কাজ করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি। বাংলাদেশে প্রবীণ নীতিমালার পাশাপাশি প্রবীণ সুরক্ষায় স্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি। বক্তারা বলেন, ২০১৫ সালে বিশ্বে ৬০ বছরের বেশি মানুষের সংখ্যা ছিল মোট ৯০১ মিলিয়ন, যা ২০৩০ সালে বেড়ে হবে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন (বিশ্বের মোট জনসংখ্যার শতকরা ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ)। এই বর্ধিত প্রবীণ জনসংখ্যার প্রায় শতকরা ৬৭ শতাংশ হবে উন্নয়নশীল দেশসমূহের অধিবাসী। আগামী ২০৫০ সালে প্রবীণ জনসংখ্যা বেড়ে ২ বিলিয়নে দাঁড়াবে; যা মোট জনসংখ্যার শতকরা ২১ দশমিক ৫ শতাংশ। বাংলাদেশ বর্তমানে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট উপভোগ করছে। বর্তমানে মোট জনসংখ্যার শতকরা ৬২ শতাংশ কর্মক্ষম যুবক যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করছে। কিন্তু বাংলাদেশ এই সুবিধা আগামী ২০৩৫ সাল পর্যন্ত ভোগ করতে পারবে এবং এরপর থেকে কর্মক্ষম যুবকের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে যা আমাদের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে ওয়েবিনারের অংশগ্রহণকারীরা মন্তব্য করেন। ওয়েবিনারে প্রবীণদের কর্মসংস্থানের বিষয়টির প্রতিও গুরুত্ব দেয়া হয়। ওয়েবিনারে বক্তব্য রাখেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ, প্রবীণ অধিকার মঞ্চের কোষাধক্ষ্য ড. মোঃ জসীম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসিব খান, বিআইডিএসর সাবেক সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. শরীফা বেগমসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠনের কর্তাব্যক্তি ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
×