ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সিলেট-লন্ডন রুটে বিমানের সরাসরি ফ্লাইট চালু

প্রকাশিত: ২১:৫৫, ৫ অক্টোবর ২০২০

সিলেট-লন্ডন রুটে বিমানের সরাসরি ফ্লাইট চালু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চালু হয়েছে সিলেট-লন্ডন রুটে বিমানের সরাসরি ফ্লাইট। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সপ্তাহের প্রতি বুধবার এই ফ্লাইট পরিচালনা করবে। রবিবার সকালে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই ফ্লাইটের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী ফ্লাইটটি সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে ২৩২ যাত্রী নিয়ে লন্ডনের উদ্দেশে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়র প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী এমপি বলেন, হযরত শাহজালাল (রহ.) স্মৃতি বিজড়িত পুণ্যভূমি সিলেটের অধিবাসীদের জন্য আজকের দিনটি আনন্দের। আজ তাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সিলেট-লন্ডন ফ্লাইট শুরু হয়েছে। এই সরাসরি ফ্লাইট সিলেটবাসী ও যুক্তরাজ্যে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশী ভাই-বোনদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার। এই উপহারের জন্য সিলেটের মানুষের পক্ষ থেকে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সরাসরি এই বিমান যোগাযোগের ফলে দেশপ্রেমিক প্রবাসী ভাই-বোনদের সঙ্গে দেশের যোগাযোগ আরও দৃঢ়, সহজ ও আরামদায়ক হবে। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মফিদুর রহমান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মোকাব্বির হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুদ উদ্দিন আহমেদ প্রমূখ। বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বিমানের বর্তমান অতীত ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে এখন আরও আধুনিক ও তারুণ্যদীপ্ত। তার ঐকান্তিক আগ্রহ ও প্রচেষ্টায় জাতীয় পতাকাবাহী এই প্রতিষ্ঠানের বিমান বহরে যুক্ত হয়েছে বোয়িং ৭৮৭ (ড্রিম লাইনার), ৭৭৭ ও ৭৩৭ মডেলের বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ১২টি উড়োজাহাজ। এই ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে আমরা কানাডা কর্মাশিয়াল কর্পোরেশন (সিসিসি) থেকে স্বল্প পাল্লার তিনটি নতুন ড্যাশ-৮ কিউ৪০০ ক্রয় করেছি। অচিরেই এই বিমানগুলো আমাদের বহরে সংযুক্ত হবে। কেননা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ অপারেশনের পরিধি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করা হচ্ছে। নতুন গন্তব্য সংযোজন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আকাশের পঞ্চম স্বাধীনতা নিশ্চিত করে আমরা বিমান চলাচল চুক্তি সম্পাদন করেছি। এর ফলে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের যেকোন শহরে, যেকোন সংখ্যক বিমান চলাচল করতে পারবে। ঢাকা-নিউইয়র্ক সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে এটি একটি বড় অগ্রগতি। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ফ্লাইট এ্যাডমিনিস্ট্রেশনের নির্ধারিত ক্যাটাগরি-১ অর্জনের কাজেও সন্তোষজনক অগ্রগতি হয়েছে। কোভিড-১৯-এর কারণে এফ এ এ কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে পরিদর্শন কাজ সম্পন্ন করতে না পারায় তা অনলাইনে সম্পাদন করবে বলে তারা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। এই পরিদর্শন কাজ সম্পন্ন হলেই আমরা ঢাকা-নিউইযর্ক ফ্লাইট চালু করতে পারব বলে আশাবাদী। এছাড়া ঢাকা থেকে কানাডার টরেন্টোতে এবং জাপানের নারিতায় সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। এ ব্যাপারে যথেষ্ট অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। খুব দ্রুতই আমরা এই দুই দেশে সরাসরি বিমান পরিচালনা শুরু করতে পারব। তিনি জানান, সরকার জাতীয় প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে সত্যিকার অর্থে বিশ্বমানের একটি এয়ারলাইন্স হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধ পরিকর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বহুমাত্রিক নেতৃত্বে ও নির্দেশে বিমানের যাত্রীদের আন্তর্জাতিক মানের সেবা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছি। তার আগ্রহ, ঐকান্তিক ইচ্ছা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের স্পর্শে দ্রুত বিমান এবং এভিয়েশন খাতের চিত্র বদলে যাচ্ছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিমানের যাত্রী সেবা এখন পূর্বের যেকোন সময়ের তুলনায় উন্নত ও আন্তরিক। তিনি বলেন, জাতীয় পতাকাবাহী এই প্রতিষ্ঠানটির অনেক বদনাম আছে। এই বদনাম থেকে বিমানকে রক্ষা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশা অনুযায়ী বিমানে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে। ফলে গেল অর্থবছরে বিমান ২শ’ কোটি টাকার ওপরে লাভ করেছে। এ ছাড়া লন্ডনে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে ৯০ ভাগ সিলেটী। তাই ওসমানী বিমানবন্দরে যেন ৭৭৭ উড়োজাহাজ টেক অব করতে পারে সে ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে লক্ষ্যে ওসমানী বিমানবন্দরকে আধুনিকায়ন ও পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করার কাজ শুরু হয়। গত এপ্রিলে রানওয়ের শক্তি বৃদ্ধির কাজ শেষ হয়েছে। সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট চালুর আগে যুক্তরাজ্যের ডিএফটির প্রতিনিধি দল দু’দফা ওসমানী বিমানবন্দর পরিদর্শন করে গেছে। আগামীতে সিলেট থেকে ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা হবে। বিমানবন্দরের আধুনিকায়নের কাজ শেষ হলে বিদেশী এয়ারলাইন্সগুলোও ওসমানীতে তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করবে বলে আমরা আশাবাদী।
×