ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চতুর্থবার সভাপতি নির্বাচিত সালাউদ্দিন

প্রকাশিত: ২৩:৪৪, ৪ অক্টোবর ২০২০

চতুর্থবার সভাপতি নির্বাচিত সালাউদ্দিন

সালাউদ্দিন পেলেন ৯৪ ভোট নির্বাচনে অংশ নিয়ে নানা ঘটনার জন্ম দেয়া সভাপতি প্রার্থী বাদল রায় পেলেন ৪০ ভোট, অপর স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বী শফিকুল ইসলাম মানিক পেলেন ‘সবেধন নীলমণি’ মাত্র ১ ভোট! সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে সালাম মুর্শেদীই বহাল সহ-সভাপতি পদে নতুন মুখ ইমরুল-মানিক, চতুর্থ স্থানে ‘টাই’, এই পদের জন্য আবারও ভোট হবে রুমেল খান ॥ ৯৪, ৪০, ১ ... কিছু বোঝা গেল? না, হেঁয়ালি না করে খোলাসা করা যাক। এটা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) বহুল আলোচিত নির্বাচনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় সভাপতি পদের ভোট গণনার তিনটি আলাদা ফল। স্বাভাবিকভাবেই পরের প্রশ্নটা চলে আসবে কে কত ভোট পেলেন? উত্তর : সম্মিলিত পরিষদের কাজী মোঃ সালাউদ্দিন ৯৪, স্বতন্ত্র প্রার্থী বাদল রায় ৪০ এবং অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মানিক পেয়েছেন ১ ভোট! এই বিপুল ব্যবধানে জয়ের মাধ্যমে সভাপতি পদে টানা চারবার নির্বাচিত হলেন সাবেক কিংবদন্তি ফুটবলার, সাবেক কোচ ও সংগঠক সালাউদ্দিন। এবার আসা যাক দ্বিতীয় সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ-আকর্ষণীয় ‘সিনিয়র-সহ-সভাপতি’ পদের ফল নিয়ে। এই পদে প্রার্থী ছিলেন দু’জন। উভয়েই সাবেক তারকা ফুটবলার এবং একই বিভাগের (খুলনা) লোক। তাদের প্রাপ্ত ভোট যথাক্রমে ৯১ এবং ৪৪। কে কত ভোট পেয়েছেন, কৌতূহলটা মেটানো যাক। আব্দুস সালাম মুর্শেদী জিতেছেন। তার কাছে হেরেছেন শেখ মোঃ আসলাম। এর ফলে কাজী সালাউদ্দিনের মতো সালাম মুর্শেদীও সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে টানা চারবার নির্বাচিত হলেন, গতবার অবশ্য ২০১৬ নির্বাচনে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। সহ-সভাপতি পদ চারটি। এতে নির্বাচিত হয়েছেন সম্মিলিত পরিষদের ইমরুল হাসান (৮৯ ভোট), কাজী নাবিল আহমেদ (৮১) এবং আতাউর রহমান মানিক (৭৫)। সমন্বয় পরিষদের মহিউদ্দিন আহমেদ মহি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল দুজনেই পেয়েছেন সমান ৬৫ ভোট করে। তার মানে ‘টাই’ হয়েছে। ফলে নিয়ম অনুযায়ী এই পদের ফল নিষ্পত্তির জন্য আবারও ভোটগ্রহণ করা হবে। সহ-সভাপতি পদে নতুন মুখ ইমরুল এবং মানিক। ‘সালাউদ্দিন হটাও’ নিয়ে এত আন্দোলন-সমালোচনা-নিন্দার পরও দেখা যাচ্ছে ভোটাররা সভাপতি হিসেবে সালাউদ্দিনকেই সবচেয়ে বেশি যোগ্য মনে করেছেন। এছাড়া ‘নীরব বিপ্লব’ ঘটানোর যে ডাক দিয়েছিল বিরোধী প্রতিপক্ষ হিসেবে খ্যাত ‘সমন্বয় পরিষদ’ তারা বিপ্লব ঘটাতে গিয়ে নিজেরাই বিপ্লবের বলি হলো! সবচেয়ে অবাক করা বিষয় ছিল স্বতন্ত্র সভাপতি প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মানিকের মাত্র ‘১ ভোট’ পাওয়া নিয়ে। নির্বাচনের আগে নিজের জয়ের ব্যাপারে প্রবল আত্মবিশ্বাস ব্যক্ত করা মানিক না জিতলেও মোটামুটি ভালই ভোট পাবেন- এমনটাই ধারণা ছিল ক্রীড়ামোদীদের। কিন্তু তাদের ধারণা যে এভাবে ধুলায় মিশিয়ে মানিক সর্বসাকুল্যে ১ ভোট পেয়ে এভাবে ইজ্জত খোয়াবেন- এমনটা কেউই আশা করেননি। নির্বাচন ও গুজব যেন একে অপরের পরিপূরক। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) এবারের বহুল আলোচিত নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে ক্ষণে ক্ষণে হাওয়ায় ভেসেছে নানা গুজব। কখনও শোনা গেছে কাজী মোঃ সালাউদ্দিন আবারও সভাপতির মসনদে বসতে যাচ্ছেন। তার বিজয় সুনিশ্চিত হয়ে গেছে। আবার এর বিপরীতেও শোনা গেছে- যিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে গিয়েও পারেননি, মৌখিকভাবে তাকে ভোট দিতে মানা করেছিলেন এবং পরবর্তীতে আবারও ভোট চেয়ে সবাইকে অবাক করেছিলেন, সেই বাদল রায় দারুণ চমক দেখিয়েছেন। তিনিই অপ্রত্যাশিতভাবে সভাপতি নির্বাচিত হচ্ছেন! তিনি সব গুজবের অবসান ঘটিয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে সভাপতি ঘোষিত হন সালাউদ্দিনই। তবে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করলে এই নির্বাচনে সভাপতি পদে ফেবারিট ছিলেন সালাউদ্দিনই। তিনি ছিলেন একটি প্যানেলের ব্যানারে। কিন্তু তার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বাদল এবং মানিক কেউই অন্য কোন প্যানেলে ছিলেন না। ফলে শুরু থেকেই টেকনিক্যালি সুবিধাজনক অবস্থান নিয়ে এগিয়ে ছিলেন সালাউদ্দিন। প্রথমে জানানো হয়েছিল ভোট গ্রহণের সময়সীমা দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। কিন্তু পরে নির্বাচন কমিশনার শনিবার এজিএমের পর ভোট গ্রহণের সময়সীমা একঘণ্টা বাড়িয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত করে।
×