ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পাঁচ বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি

প্রকাশিত: ২১:১৩, ৪ অক্টোবর ২০২০

পাঁচ বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মতো ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে সরকারী বিভিন্ন সংস্থাও। সরকারী প্রতিষ্ঠান হয়েও প্রতি অর্থবছরে বেরিয়ে আসছে সরকারী বহু প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট ফঁাঁকি দেয়ার চিত্র। রাষ্ট্রায়ত্ত তিনটি তেল বিপণন কোম্পানি গত ৫ বছরে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) নিয়ন্ত্রিত এই তিনটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে পদ্মা অয়েল কোম্পানি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড ও যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড। চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট এর পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ভ্যাট ফাঁকির ঘটনা নিয়ে এই তিন সংস্থার প্রতি শোকজ নোটিস জারি করা হয়েছে। আরও দুটি প্রতিষ্ঠানে ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানকেও শোকজের প্রক্রিয়া চলছে। চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-২০১৯ অর্থবছরে পদ্মা অয়েলের ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ ১ হাজার ৯৫২ কোটি ৮৫ লাখ ২৫১ টাকা, মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ ৩১১ কোটি ৯৯ লাখ ৩১ হাজার ৯৯১ টাকা এবং যুমনা অয়েল কোম্পানি ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ২৫৭ কোটি ৪৭ লাখ ৮৬ হাজার ২৬১ টাকা। গত ২৭ আগস্ট এই তিন প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শার নোটিসে ভ্যাট ফাঁকির সচিত্র প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে ২০১৫-২০১৯ সাল পর্যন্ত অর্থবছরের প্রতিষ্ঠানসমূহে যাবতীয় ব্যবসায়িক কার্যক্রম এবং কর মেয়াদের দলিলপত্র যাচাই করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, মূসক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। পদ্মা অয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবরে প্রেরিত কারণ দর্শাও নোটিসে বলা হয়েছে, তাদের প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে আমদানি পর্যায়ে পার্থক্যজনিত অপরিশোধিত মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ১ হাজার ৮৭৯ কোটি ৪১ লাখ ৬২ হাজার ৬৪ টাকা। স্থানীয় পর্যায়ে অপরিশোধিত ব্যবসায়িক মূসক ৩০ কোটি ৬৭ লাখ ২১ হাজার ৭২টাকা এবং অপরিশোধিত উৎসে মূসক বাবত ৪২ কোটি ৪৪ লাখ ২১৫ টাকাসহ মোট ১ হাজার ৯৫২ কোটি ৭২ লাখ ৮৫ হাজার ২৫১ টাকা আদায়ের আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে মূসক আইনে উক্ত পরিমাণ অর্থ আদায়ে দাবিনামা জারি করা হলো। অনুরূপভাবে পদ্মা অয়েল কর্তৃপক্ষকে তাদের প্রতিষ্ঠানে পণ্য আমদানি পর্যায়ে পার্থক্যজনিত অপরিশাধিত মূসক ২৭৫ কোটি ৪০ লাখ ৭৮ হাজার ১৩৫ টাকা এবং অপরিশোধিত উৎসে মূসক বাবত ৩১১ কোটি ৯৯ লাখ ৩১ হাজার ৯৯১ টাকা আদায়ে দাবিনামা জারি করা হয়। অপরদিকে, যমুনা অয়েল কোম্পানি কর ফাঁকির মোট পরিমাণ ২৯৭ কোটি ৪৭ লাখ ৮৬ হাজার ২৬১ টাকা। এ কোম্পানিকে জারিকৃত পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে তাদের আমদানি পর্যায়ে পার্থক্যজনিত অপরিশোধিত মূসক ১৮২ কোটি ৯১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৩৬ টাকা, স্থানীয় পর্যায়ে অপরিশোধিত ব্যবসায়িক মূসক ৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৬ হাজার ৯০৫ টাকা এবং অপরিশোধিত উৎসে মূসক বাবত ২৩ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার ২০৫ টাকা।
×