ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নারী জঙ্গী বানানোর ভয়ঙ্কর ফাঁদ ‘লাভ জিহাদ’

প্রকাশিত: ২২:১৪, ৩ অক্টোবর ২০২০

নারী জঙ্গী বানানোর ভয়ঙ্কর ফাঁদ ‘লাভ জিহাদ’

শংকর কুমার দে ॥ ‘লাভ জিহাদ’-নারী জঙ্গীদের সংখ্যা বাড়াতে জঙ্গী সংগঠনের দলে ভেড়ানোর এক ভয়ঙ্কর মরণফাঁদ। বড় ধরনের নাশকতার ছক কষে এই ফাঁদে আটকানো হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান-এই তিন দেশের নারী জঙ্গী। অনলাইনে ফেসবুক আইডিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে, ধর্মান্তরিত করে, বিয়ের মাধ্যমে ঘর সংসার করার আশ্বাসে জঙ্গী বানানো হচ্ছে নারী। আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আফগানিস্তানের আল কায়েদা, সিরিয়া-ইরাকের ইসলামিক স্টেটস (আইএস) এর কায়দা-কৌশলে তিন দেশের নারীদের নিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে জঙ্গী নেটওয়ার্ক। দেশীয় জঙ্গী সংগঠন জামা‘আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি), নব্য জেএমবি, আনসার আল ইসলাম- এই তিন জঙ্গী সংগঠন নারী জঙ্গীদের লাভ জিহাদের ফাঁদে ফেলে (আত্মঘাতী) সুইসাইড স্কোয়াড তৈরি করছে। লাভ জিহাদের ফাঁদে পড়ে বেশ কয়েকজন তরুণী জঙ্গী সংগঠনে যোগ দিয়েছে এবং বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান-এই তিন দেশে অন্তত অর্ধশত নারী জঙ্গী গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া নারী জঙ্গীদের বেশিরভাগই জামায়াতে ইসলামীর নারী ও ছাত্রী শাখার সদস্য-এই ধরনের তথ্য পেয়েছে আন্তঃরাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, নারী সদস্য জঙ্গী দলে টানতে লাভ জিহাদের পাতা ফাঁদে বেশকিছু তরুণীর পা দেয়ার তথ্য পেয়েছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা। আফগানিস্তানের আল-কায়েদা ও সিরিয়া-ইরাকের আইএস যেই পদ্ধতিতে নারীদের জঙ্গী সংগঠনে টেনেছে, ঠিক একই কায়দা-কৌশলে নারীদের জঙ্গী সংগঠনে টানার পর বাংলাদেশ থেকে হুগলির ধনেখালির এক তরুণীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া ওই তরুণী জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে, জঙ্গীদের ‘লাভ জিহাদের’ শিকার হয়েছেন। এ ছাড়া দক্ষিণবঙ্গের তিন জেলার আরও পাঁচ তরুণীর হঠাৎ করেই অন্তর্ধান রহস্য ঘিরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। যে পাঁচ তরুণীকে নিয়ে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে দুজন মুর্শিদাবাদ, একজন পুরুলিয়া ও বাকি দুজন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বাসিন্দা। তাদের মোবাইলের কললিস্ট ও নেট ঘেঁটে গোয়েন্দাদের ধারণা, জঙ্গীদের লাভ জিহাদের ফাঁদে পড়েছে তারা। নারী সদস্যকে আরও বেশি করে নিয়োগ করতেই জঙ্গীরা এখন লাভ জিহাদের ফাঁদ তৈরি করেছে। তাই সামাজিক মাধ্যমকে হাতিয়ার করে অনলাইনে বন্ধুত্ব তৈরি করে তারা নিজেদের প্রচার করতে ব্যস্ত রয়েছে। ফলে স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের নিজেদের দিকে টেনে আনছে জঙ্গীরা। ওই তরুণীরা বাড়ির সঙ্গে কোন ধরনের যোগাযোগ রাখে না। বাড়ি থেকে চলে যাওয়া নারীরা এখন কোথায় বা কাদের সঙ্গে রয়েছে তা জানার চেষ্টা করছে গোয়েন্দারা। ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদ ॥ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টানা অভিযানের মুখে জঙ্গী কার্যক্রম স্তিমিত হওয়ায় ফেসবুকে তরুণীদের প্রেম ও বিয়ের ফাঁদে ফেলে জঙ্গীবাদে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। বরিশাল ও ঢাকার ডেমরা থেকে জান্নাতুল নাঈমা ও আফজাল হোসেন নামে দুই জঙ্গী সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য। তাদের ফাঁদে পড়ে বাসা থেকে পালানো চট্টগ্রামের এক তরুণীকেও উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ওই তরুণী চট্টগ্রামের একটি কলেজের বিবিএ’র শিক্ষার্থী। তিনি উদ্ধারের পর র‌্যাবকে বলেছেন, ফেসবুকে নাঈমাসহ বেশ কয়েকজন নারীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সেখানে একটি গ্রুপে নাঈমা ও অন্য নারী সদস্যদের ফেসবুক বন্ধু বরিশালের সহিফুল ওরফে সাইফের সঙ্গে পরিচয় হয়। নাঈমা ও অন্য নারীদের প্ররোচনায় সাইফের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। এক পর্যায়ে ফেসবুক গ্রুপে থাকা অপর নারী ও পুরুষ বন্ধুদের প্ররোচনায় তিনি সাইফকে বিয়ে করার প্রস্তুতি নেন। এজন্য ২৬ জুন তিনি নাঈমার সহযোগিতায় তার সঙ্গে বরিশালে সাইফের কাছে যান। পরে সাইফ তাকে বিয়ের জন্য মাদ্রাসায় পড়ার শর্ত জুড়ে দেয় এবং বরিশালের একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করে। তাকে বিয়ের প্ররোচনায় জঙ্গীবাদে প্রলুব্ধ করা হয়। গ্রেফতার নাঈমা র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, সে চট্টগ্রামের একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। ফেসবুকের একটি গ্রুপে বিভিন্ন নারী সদস্যের মাধ্যমে প্ররোচিত হয়ে আনসার আল ইসলাম নামের জঙ্গী সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত হয়। এরপর থেকে সংগঠনে নারী সদস্য বাড়ানোর জন্য নানা কৌশলে দাওয়াতি কাজ চালাচ্ছিল সে। এরই অংশ হিসেবে কয়েকজন নারীকে দলে ভেড়াতেও সমর্থ হয়। ফেসবুকে পাওয়া সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চট্টগ্রামের ওই তরুণীকে তারা জঙ্গীবাদে ভেড়াতে ফাঁদ পাতে। দলের সদস্য সাইফ ওই তরুণীর সঙ্গে প্রেমের ফাঁদ পাতে। এরপর সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ওই তরুণীকে সে বরিশাল নিয়ে নিজের আপন বোন পরিচয়ে একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করে। গ্রেফতার আফজাল র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, সে ঢাকার কাছেই একটি এলাকায় আনসার আল ইসলামের স্থানীয় সংগঠক হিসেবে কাজ করছে। ভারত থেকে বাংলাদেশে এসে ধর্মান্তরিত ॥ ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে নব্য জেএমবির নারী শাখার অন্যতম সদস্য ভারতীয় এক নাগরিককে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। তার নাম আয়েশা জান্নাত মোহনা ওরফে জান্নাতুত তাসনিম ওরফে প্রজ্ঞা দেবনাথ। এ সময় তার কাছ থেকে একটি ভারতীয় পাসপোর্ট, বাংলাদেশের জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট, বাংলাদেশী জাতীয় পরিচয়পত্র ও দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। গত ৪ ফেব্রুয়ারি মতিঝিল থানায় দায়ের হওয়া সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ওই মামলায় গতকাল তার সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হলে আদালত চার দিন মঞ্জুর করে। আয়েশা একজন ভারতীয় নাগরিক। তার বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার ধনিয়াখালি থানার পশ্চিম কেশবপুর গ্রামে। ২০০৯ সালে নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় তিনি সনাতনধর্ম থেকে ইসলামে দীক্ষিত হন। তার পর থেকে ধর্মীয় বিষয়ে পড়াশোনায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে অনলাইনে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নব্য জেএমবির নারী শাখার সদস্যদের সঙ্গে পরিচয় ঘটে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের নব্য জেএমবির নারী শাখার প্রধান আসমানী খাতুন ওরফে আসমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন এবং সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। ২০১৬ সাল থেকে নিয়মিত ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াত করতেন আয়েশা। বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে সংগঠনের কাজে ব্যয় করতেন। সম্প্রতি বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার জন্য একটি ভুয়া জন্মনিবন্ধন তৈরি করেন এবং তা ব্যবহার করে ভুয়া বাংলাদেশী জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন। ইতোমধ্যে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক ওমান প্রবাসী আমির হোসেন সাদ্দামকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিয়ে করেন। আমিরের পরামর্শে ২০১৯ সালের ১৯ অক্টোবর বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য চলে আসেন। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন এবং ওই এলাকার বিভিন্ন মাদ্রাসায় পরিচয় গোপন করে শিক্ষকতা করতেন। আয়েশা সংগঠনের হয়ে দাওয়াতি কার্যক্রম ও সদস্য সংগ্রহের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু আসমানী গ্রেফতার হওয়ার পরপরই তিনি মাদ্রাসার চাকরি ছেড়ে আত্মগোপন করেন। তিনি অনলাইনে বিভিন্ন আইডি ব্যবহার করে সংগঠনের জন্য পুরুষ সদস্য রিক্রুট করা ও নারী সদস্যদের ধর্মীয় প্রশিক্ষণ প্রদান এবং বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করে নারী সদস্যদের মাঝে বিতরণ করতেন। ইতোমধ্যে কিছু সদস্য সংগঠনে রিক্রুট করেছেন। ফেসবুকে তৈরি হচ্ছে নারী জঙ্গী, কার্যক্রম এ্যাপসে ॥ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) নতুন ধারার (নব্য জেএমবি), আনসার আল ইসলামের জঙ্গী নেতারা অনলাইনে যোগাযোগের মাধ্যমেই নারী সদস্যদের সংগ্রহ করছেন। অনলাইনে খোঁজ করে তারা ধর্মভীরু শিক্ষিত তরুণীদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করছেন। জঙ্গী মতাদর্শ গ্রহণের পর তারা নিজেদের ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে নারী সদস্যদের জঙ্গী নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ করে দিচ্ছেন। মোবাইল ফোনে নির্দিষ্ট এ্যাপস ডাউনলোড করে কার্যক্রম পরিচালনা করার কৌশলও শেখানো হয়েছে নারী জঙ্গীদের। ঢাকা ও গাজীপুর থেকে গ্রেফতার চার তরুণীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পেয়েছেন র‌্যাব কর্মকর্তারা। ওই চার নারী জঙ্গীকে আদালতের মাধ্যমে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতার নারী জঙ্গীদের দলে আরও অন্তত এক ডজন তরুণী আছে, যাদের মধ্যে ১০ জনের নাম পেয়েছে র‌্যাব। তারা হলো, সাফিয়া ওরফে সানজিদা ওরফে ঝিনুক, মাইমুনা ওরফে মাহমুদা ওরফে লায়লা, তাসনুবা ওরফে তাহিরা, সায়লা ওরফে শাহিদা, সালেহা ওরফে পুতুল, দিনাত জাহান ওরফে নওমী ওরফে বানী, তানজিলা ওরফে মুন্নী, আলিয়া ওরফে তিন্নি ওরফে তিতলী, মনিরা জাহান ওরফে মিলি ও ছাবিহা ওরফে মিতু। এই সন্দেহভাজন নারী জঙ্গীদের খুঁজছে র‌্যাব ও পুলিশ। পাকিস্তানে আছে বাংলাদেশের নারী জঙ্গীরা ॥ ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি বাংলাদেশের জেএমবির আমির সাইদুর রহমানের মেয়ের জামাই ইজাজ ওরফে কারগলসহ ৪ বাংলাদেশী জঙ্গী মারা যায়। ইজাজের স্ত্রী এখনো পাকিস্তানেই আছে। সে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের বিভিন্ন ক্যাম্পে জঙ্গী প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। নিহত অপর তিনজন বাংলাদেশী জঙ্গী হচ্ছে জেএমবির আমির সাইদুর রহমানের আর এক মেয়ের জামাই পাকিস্তানে প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফেরার পর গ্রেফতার হওয়া জঙ্গী সখাওয়াতুল কবিরের ভাগ্নি জামাই অভি, পাকিস্তানে অবস্থানরত বাংলাদেশী নারী জঙ্গী ফাতেমার স্বামী সায়েম ও সায়েমের বোন জামাই শামীম। সখাওয়াতুল কবিরের ভাগ্নি, নিহত সায়েমের স্ত্রী ফাতেমা ও সায়েমের বোন এখনও পাকিস্তানেই রয়েছে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের বিভিন্ন ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিয়ে ওই দেশ দুটিতে বিভিন্ন অপারেশনে অংশ নিয়েছে। ভারতে বাংলাদেশের নারী জঙ্গী ॥ ২০১৪ সালে বছরের ২ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার খাগড়াগড়ে জেএমবির আস্তানায় বিস্ফোরণে জেএমবি জঙ্গী শাকিল গাজী ও সোবহান ম-ল ওরফে গোসবাহন শেখ নিহত হয়। ওই বাড়ি থেকে গ্রেফতার হয় শাকিলের স্ত্রী রাজিয়া বিবি ও সোবহান শেখের স্ত্রী আলিমা বিবি। তারা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে রীতিমতো পিলে চমকানোর মতো তথ্য দেয়। পরবর্তী সময়ে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সে তথ্য আদান-প্রদান হয়। প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক দুই নারী জানায়, শুধু ভারত নয়, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানেও জঙ্গীদের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরির কাজ চলছে। নারী জঙ্গী ভেড়ানো শুরু ॥ পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একজন কর্মকর্তা বলেন, ২০১৩ সাল থেকেই দলে ভেড়ানো হচ্ছে নারী জঙ্গীদের। তাদের দিয়ে জেএমবি নারী সুইসাইডাল স্কোয়াড গঠন করে দেশে বড় ধরনের নাশকতা চালাতে চায়। আর আনসার আল ইসলামের চাহিদা হলো রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের টার্গেট করে সুনির্দিষ্ট হত্যাকান্ড চালানো এবং এজন্য তারাও নারী জঙ্গীদের সুইসাইডাল স্কোয়াড গঠন করে চলেছে। চলতি বছরে পরিচালিত অভিযানে নব্য জেএমবি, আনসার আল ইসলাম, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের এ পর্যন্ত ১১ নারী জঙ্গী গ্রেফতার হয়েছে। এভাবে ২০১৬ সাল থেকেই নারী জঙ্গীরা গ্রেফতার হওয়া শুরু হয়। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের ভৌগোলিক কারণে এক দেশে বিপদে পড়লে আরেক দেশের সীমান্তের চোরাই পথে পালানোর সুযোগে জঙ্গী তৎপরতা বৃদ্ধির সঙ্গে নারী জঙ্গীদের দলে ভেড়ানোর কাজটির সুযোগ নিচ্ছে জঙ্গী সংগঠন। জেএমবি যেসব নারী জঙ্গীদের দলে ভেড়াতে সক্ষম হয়েছে, তাদের দিয়ে জেএমবি নারী সুইসাইডাল স্কোয়াড গঠন করে দেশে বড় ধরনের নাশকতা চালাতে চায়। আর আনসার আল ইসলামের চাহিদা হলো রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের টার্গেট করে সুনির্দিষ্ট হত্যাকা- চালানো এবং এ জন্য তারাও নারী জঙ্গীদের সুইসাইডাল স্কোয়াড গঠন করে চলেছে। বিশ্বজোড়া করোনা সংক্রমণ বিশেষ করে আমাদের এই উপমহাদেশের দেশগুলোতে ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণ মানুষকে যেভাবে অসহায়ত্তের শিকারে পরিণত করেছে- সেই অসহায় পরিবেশটি ধর্মান্ধ মতবাদ প্রচারের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে লাভ জিহাদ।
×