ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এ মাসে ঘূর্ণিঝড়

সাগরে লঘুচাপ কয়েকদিন ভারি বৃষ্টি হবে

প্রকাশিত: ২২:১২, ৩ অক্টোবর ২০২০

সাগরে লঘুচাপ কয়েকদিন ভারি বৃষ্টি হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রকৃতি থেকে বর্ষার বিদায় প্রায় সমাগত। কিন্তু বৃষ্টির ধারা এখনি যাচ্ছে না। এরই মধ্যে মৌসুমিবায়ু আরও একদফা সক্রিয় হয়ে পড়ছে। সাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। আগামী কয়েকদিন দেশে বিভিন্ন এলাকায় ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। আবহাওয়া অফিস জানায়, এরই মধ্যে সাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। দুইয়ের প্রভাবে আগামী কয়েকদিন দেশে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। এদিকে আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অক্টোবর মাসে দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা কিছুটা বেশি বৃষ্টি হতে পারে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে ২টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। যার মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমীবায়ু প্রবাহ (বর্ষা) বাংলাদেশ থেকে বিদায় নেবে। এরপর পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবেও দেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়তে পারে। তারা জানায়, এ বছর প্রাক-বর্ষা এবং বর্ষায় অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গেল সেপ্টেম্বরে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৩ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। গত আগস্টে দেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া আগস্টের তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছিল। এছাড়া সেপ্টেম্বরেও স্বাভাবিকের চেয়ে গড় তাপমাত্রা বেশি ছিল। আগস্টের চেয়ে সেপ্টেম্বরে বৃষ্টির পরিমাণ অনেক বেশি রেকর্ড হয়েছে। এই মাসে একদিনে রংপুর বিভাগে ২৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে গত ২৬ সেপ্টেম্বরে। এছাড়া ২১ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলে একটানা বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। ফলে ওই এলাকায় নদীর পানি বেড়ে বন্যা দেখা দেয়। এদিকে মৌসুমিবায়ুর বিদায় বেলায় আকাশে মেঘের আনাগোনা বেড়ে গেছে। রাজধানীতে সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এছাড়া দেশের বিভিন্নস্থানে ভারি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ইতোমধ্যে উত্তর -পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সাগরে এবং দেশের ওপর আরও এক দফা মৌসুমিবায়ু সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এর প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকে দেশের বিভিন্নস্থানে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। এটি আরও দুদিন অব্যাহত থাকতে পারে। মৌসুমিবায়ুর অক্ষ উত্তর প্রদেশ থেকে মধ্যপ্রদেশ এবং বাংলাদেশ হয়ে উত্তর-পূর্ব অসম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এটি দেশে ওপর সক্রিয় এবং সাগরে প্রবল সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। এ বছর গত জুনের প্রথম সপ্তাহেই দেশে মৌসুমিবায়ুর আগমন ঘটে। এই বায়ু দেশে আসার পর থেকে বর্ষা এই চারমাসে বলতে গেলে এবার একদিনও বৃিষ্টহীন ছিল না। প্রায় প্রতিদিন বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। কখনও কখনও তা একটানা একসপ্তাহ পর্যন্ত অব্য্হাত ছিল। তারা জানান, মৌসুমিবায়ুর বিদায়বেলা এবার দেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়ে গেছে। সেপ্টেম্বরের শেষ ১০দিনে উত্তরে পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। রংপুর, ঠাকুগাঁওসহ বিভিন্ন জেলায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগে কখনও মৌসুমিবায়ুর বিদায়বেলায় এত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়নি। এর ফলে দেশে পঞ্চম দফায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এদিকে দেশে চারমাস অবস্থান শেষে বিদায় নিতে যাচ্ছে মৌসুমিবায়ু। বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্ষায় এই মৌসুমিবায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। এর ফলেই দেখা দেয় বন্যা। এ বছর বর্ষায় চারমাসে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ কারণে আগাম বন্যার পাশাপাশি সম্প্রতি সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় আক্রান্ত হয় এবার। অক্টোবর মাসের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে- চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ হতে পারে দুই থেকে তিনটি। মাসের শেষদিকে একটি ঘূর্ণিঝড়ও আসতে পারে। লঘুচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কিছুদিন পরপর বৃষ্টিপাত হবে। এদিকে ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- ময়মনসিংহ, সিলেট, টাঙ্গাইল, বগুড়া, খুলনা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়োহাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
×