ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মমতাজ লতিফ

বখাটেদের সঙ্গে আসামি বাবা-মা ও বিবিধ

প্রকাশিত: ২০:৫৬, ১ অক্টোবর ২০২০

বখাটেদের সঙ্গে আসামি বাবা-মা ও বিবিধ

এটি বর্তমানে গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে যে, সমাজ-পাড়া-মহল্লাগুলো ক্রমেই বালিকা, কিশোরীদের শিক্ষিত হয়ে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের পথে বিশাল এক বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বখাটে-কিশোর-তরুণদের সীমাহীন দৌরাত্ম্যের ফলে। এটি অনস্বীকার্য যে, এসব পরিবারের সন্তান-কিশোর-তরুণদের নিয়মশৃঙ্খলা ভঙ্গ করা এবং স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে একটি কারণ তাদের বাবা-মাদের তারা শৈশব থেকে অনিয়ম-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে দেখে অভ্যস্ত হয়ে বড় হয়েছে। এদের অনেকের পিতা হিন্দু বা দরিদ্র ক্ষমতাহীন মানুষের ভূমি দখলকারী অথবা নদী-খাল দখলকারী, নদীর বালু-পাথর অবৈধভাবে উত্তোলন করে বিনা ব্যয়ে ব্যবসায়ী বনে যাওয়া, অনৈতিক পথে বাড়ি, গাড়ি, ফ্ল্যাটের মালিক হওয়া, তদুপরি নারী ও স্ত্রীর প্রতি অসম্মানজনক আচরণ করার অভ্যাসগুলো অবশ্যই পুত্র সন্তানদের চরিত্র গঠনে বিশাল ভূমিকা রেখেছে। সম্প্রতি প্রকাশ্য দিবালোকে ভাইকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে অসুস্থ নীলা রায় নামের মেধাবী বিজ্ঞান বিভাগে পাঠরত কিশোরীকে টেনে-হিঁচড়ে ছুরির আঘাতে হত্যা করার নির্মম অপরাধটি জাতির বিবেককে নাড়া দিয়েছে এ কারণে যে, ঐ যুবক নিজেকে কতখানি ক্ষমতাধর মনে করলে বিশেষত তার পিতার ক্ষমতা যেটা নানা আইন ভাঙ্গার কারণে, অবশ্যই তাকে উন্মত্ত করে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যাকারী করে তুলেছে! সেই মর্মান্তিক বর্ণনা পাঠক পাঠ করেছেন এবং শিউড়ে উঠেছেন নিশ্চয়ই। পাঠকের স্মরণে আছে নিশ্চয়ই এই কিছুদিন আগেই ফরিদপুরের কোন এক গ্রামে হিন্দু বৃদ্ধের একমাত্র পুত্র সন্তানকে পুলিশ সদস্য পিটিয়ে মেরে ফেলেছে! কিভাবে সম্ভব এসব ঘটনা ঘটানো? এ ঘটনাগুলো আমাদের অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালীর চরিত্র লক্ষণের ওপর কালিমা লিপ্ত করে বারবার আমাদের পরাজিত করে দিচ্ছে ঐ বিবেকহীন, লোভী অমানুষগুলোর কাছে। জানি না, সরকার পক্ষ থেকে ঐ পুলিশসহ ঠা-া মাথার খুনীদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা এবং ঐ বৃদ্ধ পিতার ভরণপোষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কিনা! ভূমিগ্রাসীদের একটি প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে হিন্দুদের একমাত্র উত্তরাধিকারীকে হত্যা ও বালিকা-কিশোরীদের ধর্ষণ করে তাদের বাসভূমি ত্যাগে মানসিক চাপ দেয়া। এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেশের গ্রামে-গঞ্জে বিগত দুই দশকে লক্ষণীয়ভাবে দেখা গেছে। আমরা লজ্জিত হয়েছি, বেশি কিছু করতে পারিনি। এই কারণে আমাদের, ’৭১-এর ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির প্রস্তাব ছিল ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’ প্রণয়ন ও ‘সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়’ গঠন। এ মন্ত্রণালয়ের অধীনে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ সব ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অন্তর্ভুক্ত থাকবে। প্রয়োজনে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে দেশের সব সংখ্যালঘুর কল্যাণ, সুরক্ষা, নিরাপত্তা ও তাদের জীবন-জীবিকার সব অধিকার নিশ্চিত করার জন্য একটি সমন্বিত মন্ত্রণালয় হিসেবে পুনর্গঠন করা। এর সঙ্গে সংখ্যালঘুদের ভূমি, বসতবাড়ি, বাগান, ক্ষেতখামার, পুকুর এবং তাদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’ প্রণয়ন এখন সময়ের দাবি। এ বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। কেননা, এ দাবিটি অনেক আগেই তোলা হয়েছিল এর প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করে। এর পাশে মুসলমান দরিদ্রের ছেলে ও মেয়ে উভয়েই বখাটে, মাদকাসক্ত এবং ভূমিগ্রাসী আইন ভঙ্গকারীদের সন্ত্রাসী হয়ে ওঠা পুত্রদের হাতে হত্যা ও ধর্ষণের শিকার হতে দেখা যাচ্ছে অহরহ। অনেক কিশোরী বখাটেদের অত্যাচারে, পিতা ও ভাইদের প্রাণ রক্ষার্থে আত্মহত্যার আশ্রয় নিচ্ছে! কি দুর্ভাগ্য, আমাদের কোন দরিদ্র কৃষক, ভ্যানচালক, রিক্সাচালক, তাদের মেধাবী, শিক্ষায় আগ্রহী ছেলেদের জীবন দুর্বৃত্তের হাত থেকে রক্ষা করতে পারছে না, পারছে না মেধাবী কন্যাদের প্রাণ রক্ষা করতে! সাধারণভাবে দেখা যাচ্ছে কিছু তরুণের মধ্যে নারী ধর্ষণের প্রবণতা অনেক বেশি। বিদেশে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে উন্নয়নশীল দেশের নারীরা ঘরের কাজ করতে গেলেও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়। বাধা দিলে বর্বর দৈহিক নির্যাতনের শিকার হয়ে চিরতরে পঙ্গু হয়ে, নতুবা কিশোরী কুলসুমের মতো নিহত হয়! অথচ, সে দেশে ইসলামের নবী মোহাম্মদ জন্ম গ্রহণ করেছেন এবং সম্ভবত আরবের উপজাতিগুলোর মধ্যে অনাচার ও অশান্তির বীজ-উগ্র আচরণ, নারীর প্রতি বিরূপ-নির্যাতনমূলক আচরণের ঘটনা দেখতে দেখতে তিনি তাঁর প্রবর্তিত ধর্মে নারী ও দাসদের প্রতি বিশেষ যতেœর নির্দেশ দিয়েছেন। আশ্চর্য হলেও সত্য যে আমাদের শ্রমমন্ত্রণালয়কে সৌদি সরকারের এক অন্যায় শর্ত মেনে নিতে হয়েছে- পুরুষ শ্রমিকের সঙ্গে নারী শ্রমিক প্রেরণ না করলে তারা পুরুষ শ্রমিক নেবে না! এই ২০২০-এ এসে এই অবিশ্বাস্য শর্ত কোন দেশ দিতে পারে, তাও আবার একটি মুসলিম প্রধান দেশ! অবশ্য অতি উচ্চ জন্মহার ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত গরিব দেশ-বাংলাদেশকে মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত লাখ লাখ শ্রমিকের চাকরিচ্যুতির আশঙ্কায় এমন শর্ত মানতে হয়েছে। আমাদের শ্রমিকদের জন্য নতুন কর্মক্ষেত্র, নতুন দেশ খুঁজে বের করতে হবে। তাছাড়া যেসব দেশে এই অদ্ভুত শর্তটি নেই, নারী না পাঠালে পুরুষ শ্রমিক নিয়োগ করা হবে না, সেসব দেশে পুরুষ শ্রমিকের কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে এবং সেই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে কমাতে হবে। ঐ অযৌক্তিক শর্ত তুলে নিতে চাপও প্রয়োগ করতে হবে। অন্যায় যুদ্ধে ধ্বংসপ্রাপ্ত ইরাক, লিবিয়ায় নির্মাণ কাজ ক্রমশ বাড়বে। বিশেষত ঐ দেশগুলোতে যুদ্ধাবস্থা, বিশৃঙ্খলা কমে রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পেলে ধ্বংসপ্রাপ্ত স্থাপনাগুলো পুনর্নির্মাণ করতে হবে এটি বলাবাহুল্য। সব কিছুর ওপরে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমাদের নিজেদের স্বার্থে স্বদেশের জনসংখ্যাকে সীমিত রাখা। অর্থাৎ অন্তত আগামী দুই দশকের জন্য শূন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার আমাদের অর্জন করতেই হবে। শুধু যে আমাদের দেশের ভূমি জনসংখ্যার তুলনায় কম, মাত্র পঞ্চান্ন হাজার বর্গমাইল, তা নয়; তার ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর সব বরফ গলে সব সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সমুদ্র উপকূলবাসীরা প্রতি বছর ভূমি-বসত, খেত খামার-পুকুর-জীবিকা হারাচ্ছে। যারা জলবায়ু উদ্বাস্তু হয়ে শহরে এসে শুধু জীবিকার চেষ্টায় দিন দিন বেশি সংখ্যায় জড়ো হচ্ছে। সন্দেহ নেই এই ঘর-বসত হারা মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়বে। কেননা, এই ২০২০-তে আমরা দেখতে পাচ্ছি বিশ্ব জলবায়ু উষ্ণতার হার বৃদ্ধির ফলে কানাডা, গ্রীনল্যান্ড, সাইবেরিয়ার প্রাচীন বরফ গলে যাচ্ছে। আবার সমুদ্রে পানির উষ্ণায়ন বৃদ্ধি পেয়ে ঝড়, তুফান, সাইক্লোন, টর্নেডো, হারিকেন ইত্যাদি বিশ্বজুড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণও বেড়ে গেছে এবং এবার আমাদের কৃষকরা চার বার বন্যার কবলে পড়েছে যা একটি রেকর্ড। আশ্চর্য, এই উঁচু মধ্য ও উত্তরাঞ্চলেও নদীতে পানির ঢল বেড়ে যাওয়াতে বন্যায় কৃষি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আবার নদীভাঙ্গন বেড়ে যাওয়াতে জনমানুষ বসতি, খেত-খামার, কৃষিজমি, স্কুলঘর, হাসপাতপাল, অফিস আদালত ভেঙ্গে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ভূমির পরিমাণও কমে যাচ্ছে। অথচ, জনসংখ্যা অতি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আশা করেছিলাম, করোনাকালে নারী-পুরুষ সন্তান ধারণ কম করবে, তা হয়নি। অনেক শিশুর জন্ম হচ্ছে। শুনলাম আমার বাথরুম ধোয় যে হরিজন মেয়েটি, তার নববিবাহিতা মেয়ের সন্তান হবে। ওরা মেটারনিটি হসপিটালে বড় ডাক্তারের কাছে জেনেছে, ওর সিজারিয়ান করতে হবে এবং ষাট হাজার টাকা খরচ হবে! সামনের মাসে তারিখ! কিভাবে সম্ভব? সাধারণত কোন ডাক্তার আগেই বলেন না যে, এটা সিজারিয়ান করতে হবে, যদি না খুব জটিল কোন সমস্যা থাকে। আমাদের মেয়েদের তো বাচ্চা নর্মাল হবে বলে ডাক্তার পরে বলেছে সিজার করতে হবে এবং হয়েছে। কেন? বিদেশে তো বান্ধবীদের মেয়েদের নর্মাল ডেলিভারি হচ্ছে! ছোট মেয়ের শেষ প্রসবের সময় আমি বিরক্ত হয়ে ডাক্তারকে প্রশ্ন করেছিলাম কি কারণে সিজার করতে হলো? ডাক্তার বলেন ‘বাচ্চার গলায় নাড়ি পেঁচানো ছিল, তাই এটা কিছুতে নর্মাল হতো না!’ আমি বললাম, আমরা পাঁচ ভাইবোন, সবার প্রসবের সময় নাড়ি গলায় পেঁচানো ছিল! সেজন্য আমাদের নাম ছিল ‘বামুন পৈতা শিশু’! কিন্তু সবার জন্ম হয়েছে ভীষণ দক্ষ হিন্দু মাসী, প্রভাদাইয়ের হাতে। কোনই সমস্যা হয়নি। সত্যি, আগের দাইরা প্রসব কাজে, গর্ভবতীর যতেœ যত দক্ষ, আন্তরিক ও যোগ্য ছিল, এখনকার গাইনোকলোজিস্টরা তাদের সমান দক্ষ তো হয়নি, তেমন আন্তরিকও নয়। আমার তো মনে হয়, নর্মাল ডেলিভারি করার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করলে কাজ হবে। তাছাড়া, জন্ম নিয়ন্ত্রণ বা পরিবার পরিকল্পনার কাজটি দীর্ঘ সময় যাবত অবহেলিত হয়ে আছে। শুনেছি আমলা-প্রশাসকদের অনিচ্ছায়। আমার মনে হয় সাধারণ বিসিএস পাস দ্বারা প্রশাসক- আমলা নিয়োগ না করে বিশেষ বিসিএস যেমন- স্বাস্থ্য ও জন্ম নিয়ন্ত্রণ, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, অর্থনীতি ও বাণিজ্য, পররাষ্ট্র ও কূটনীতি, কৃষি ও কৃষক, স্বরাষ্ট্র ও আইনশৃঙ্খলা, সংখ্যালঘু ও আদিবাসী সুরক্ষা ইত্যাদি শাখায় আলাদা আলাদা কাজের জন্য আলাদা ‘ক্যাডার প্রশাসক’ তৈরি করা প্রয়োজন। তাহলে প্রত্যেক ক্যাডার সার্ভিসে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সেই ক্যাডারে কাজ করতে করতে সেক্ষেত্রে দক্ষ হবে, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হবে এবং তাদের জবাবদিহিও তৈরি করা সম্ভব হবে। সবশেষে সরকারকে অনুরোধ করব, কোন জেলা-উপজেলায় কোন দুর্বৃত্ত ক্ষমতাধরকে রক্ষা করতে আবার যেন কোন ‘জজ মিঞা’ নাটকের সৃষ্টি না হয়। এ ধরনের আলামত তো জনগণ দেখেছে। ভারতের ‘এনআইএ’র মতো একটি পুরোপুরি ক্ষমতাপ্রাপ্ত গোয়েন্দা পুলিশ বাহিনী কি গঠন করা যায় না, যারা মন্ত্রী, সাংসদ, সেনা, পুলিশ, আমলা- যে কোন দুর্বৃত্ত-দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তির বাড়িতে যে কোন সময় প্রবেশ করে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে? এতে যারা বাধা দেবে তারাই তো প্রমাণ করবে যে, তারা দুর্নীতিগ্রস্ত ও দুর্বৃত্ত- তাই না? আসলে গণতন্ত্র ও উন্নয়ন বর্তমানে চোর, দুর্নীতিবাজ, দুর্বৃত্তের সঙ্গে এক ধরনের সমঝোতা করে চলছে। যে কারণে, দুনিয়াজুড়ে গণতন্ত্রের নামে দুর্নীতি-তন্ত্র, দুর্বৃত্ত-তন্ত্র, অসৎ-তন্ত্র চলছে! একজন সবার ওপরে পরম সৎ হলেও শত শত দুর্বৃত্ত, দুর্নীতিবাজ যে শৃঙ্খলের দ্বারা পরস্পর যুক্ত হয়ে সবকিছু চালাচ্ছে, তাতে কখনও সুফল আসবে কিনা সন্দেহ হয়। একজনের সততা অন্যদের মধ্যে সংক্রমিত করার ব্যবস্থা না থাকলে সব ভাল অকার্যকর থেকে যাবে, অথচ এর শিকড় অনেক গভীরে প্রোথিত হতে হবে। এ জন্য, সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব যত বেশি সম্ভব ছড়িয়ে দিতে হবে বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে, সে সঙ্গে যুক্ত থাকবে তাদের জবাবদিহির ব্যবস্থাও। এইমাত্র মর্মান্তিক শোক সংবাদ পেলাম। করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম চলে গেলেন। মাত্র একাত্তর বছর বয়সে দেশের একজন গুরুত্বপূর্ণ অভিভাবক- যিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নৈর্ব্যক্তিক ন্যায়নিষ্ঠতার সাথে পরিচালনা করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী মানুষের জন্য বিচারহীনতার চলমান প্রক্রিয়াকে পরাজিত করে ন্যায়বিচারকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন- সেই বঙ্গবন্ধুর মতো দীর্ঘদেহী, সুপুরুষ, নম্র, বিনয়ী জাতির অভিভাবক- মানুষটির অভাব দীর্ঘদিন আমাদের মনে বিরাজ করবে- এতে সন্দেহ নেই। করোনা পৃথিবীর দেশে দেশে বহু মানুষের প্রাণ হরণ করছে, কিন্তু আমাদের দেশে কেন মূল্যবান উচ্চ শিক্ষিত বুদ্ধিজীবীদের যেন ‘৭১-এর জল্লাদদের মতো বাছাই করে তুলে নিয়ে যাচ্ছে! এ অপূরণীয় ক্ষতি সহজে পূরণ হবার নয়। তাঁকে একটি বিনম্র বিদায় অভিবাদন। লেখক : শিক্ষাবিদ
×