বর্তমান সরকার উন্নয়নের অগ্রগতিতে নিরন্তর এগিয়ে চলার নির্দেশনা জনগণের কল্যাণে প্রয়োগ করে যাচ্ছে। মুজিববর্ষে সেই নিরবচ্ছিন্ন কর্মযোগ আরও সম্প্রসারিত করে সংশ্লিষ্টদের জীবন মান উন্নয়নে চলমান শেখ হাসিনা সরকারের সকল কার্যক্রম।
নাগরিকের পাঁচটি মৌলিক অধিকার খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের প্রাসঙ্গিক উন্নয়ন বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার। খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণই শুধু নই, বরং আমাদের কৃষিজাত পণ্যের আন্তর্জাতিক চাহিদাও বিশেষভাবে লক্ষণীয়। আর পোশাক শিল্পে বিশ্ববাণিজ্যে প্রভাব বিস্তার বাংলাদেশের অর্থনীতির এক অভাবনীয় সংযোগ। তাছাড়া সমতাভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রমে ছাত্রছাত্রীর অংশীদারিত্বে কোন ফারাক নেই, যা বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রতিবেদনে স্পষ্ট হয়েছে। তবে করোনা মহামারীর ছোবল শিক্ষা ব্যবস্থায় সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। বিপন্নতা কাটাতে বিভিন্ন রকম সিদ্ধান্ত এবং কর্মপ্রয়াশ অব্যাহত রয়েছে। প্রয়োজনীয় ও প্রাসঙ্গিক স্বাস্থ্য কার্যক্রমে যে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রকোপ সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে গেলে পুরো ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজানো ছাড়া বিকল্প পথ নেই।
আশ্রয়ণ প্রকল্পও নির্ধারিত কর্মযোগে সাধারণ মানুষের দোর গোড়ায় পৌঁছে যাওয়ার সমস্ত সরকারী নির্দেশনা কাজে লাগানো হচ্ছে। গৃহহীনদের জন্য বসতবাড়ি নির্মাণ বর্তমান সরকারের একটি অনন্য উদ্যোগ। গ্রামগঞ্জে, প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য ঘর তৈরি করে দেয়া সরকারের একটি দায়বদ্ধ কার্যক্রম। শুধু বসতবাড়ি নির্মাণই নয়, গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে আলো জ্বালিয়ে দেয়াও সরকারের অনন্য কর্মদ্যোতনা। অর্থাৎ, বিদ্যুতের সুবিধা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রসারিত করে শতভাগ বিদ্যুত দেয়ার প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে।
ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য বর্তমান সরকারের প্রায় ৯ লাখ গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম এগিয়ে চলেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সরকার নির্দেশিত এই প্রকল্পকে বাস্তবায়ন করতে কাজ করে যাচ্ছে। এই আশ্রয়ণ কর্মপরিকল্পনার প্রথম ধাপ অতিক্রম করে দ্বিতীয় পর্বে নির্মাণ করা হবে প্রায় ৫৯ হাজার ৮০৩টি ঘর। দ্বিতীয় ধাপের নির্মাণ প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন করেন। কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচীকে সীমিত পর্যায়ে নিয়ে এসে সেই অর্থ আশ্রয়ণ প্রকল্পের সঙ্গে সংযুক্ত করা বর্তমান সরকারের উন্নয়ন গতি প্রবাহের বিশেষ উদ্যোগ। গৃহায়ণ কার্যক্রম একটি অনন্য প্রকল্প যা গৃহহীনদের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেবে। তবে এমন জনবান্ধব প্রকল্পও হরেক রকম বিপত্তির আবর্তে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দৃশ্যমান হয়েছে। সচ্ছল মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষও আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় এসে সরকার প্রদত্ত গৃহ পেয়ে যাওয়ার খবর বিচলিত হওয়ার মতোই। এমন অনিয়ম কোনভাবেই কাম্য নয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এই বিষয়ে কঠোর নজরদারি জরুরী। যেসব দুস্থ আর সুবিধা বঞ্চিতের জন্য এই মহান কর্মযোগ তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে সুবিধা ভোগীদের উপরি পাওনা দেয়া নীতি ও সমাজ বহির্ভূত অন্যায়-অবিচার। তবে সরকারও সচেতন দায়বদ্ধতায় দ্বিতীয় দফার তালিকা তৈরিতে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করেছে। এবারের তালিকা প্রস্তুত করা হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। সামনে আর কোন বিধিবহির্ভূত কার্যক্রম যাতে না হয়, সে ব্যাপারে কঠোর নজরদারি এবং সতর্কতা আবশ্যক।