ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অত্যাচারের প্রতিশোধ একদিন জনগণ নেবে- রিজভী

প্রকাশিত: ১৮:১২, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০

অত্যাচারের প্রতিশোধ একদিন জনগণ নেবে- রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চলছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ব্যঙ্গ করে ইনডেমনিটি নাটক প্রচারের প্রতিবাদে জাসাস আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অত্যাচারের প্রতিশোধ একদিন জনগণ ঐতিহাসিকভাবে নেবে। অন্যায় করে বেশিদিন টিকে থাকা যায় না। রিজভী বলেন, বর্তমান সরকারের সঙ্গে জনগণ নেই, কিন্তু আমাদের সঙ্গে জনগণ আছে। আমাদের সঙ্গে জনগণ আছে বলেই এত অত্যাচার এত নিপীড়নের পরও বিএনপি টিকে আছে। জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার নামে কলঙ্ক লেপন করে বিএনপির রাজনীতি বন্ধ করা যাবে না। কারণ আমরা এখনও শার্টের বোতাম খুলে তপ্ত সীসার বুলেট ধারণ করতে পারি। আমরা সেই জাতীয়তাবাদী বাহিনী যারা এত গুম-খুনের পরও মাথা উঁচু করে মিছিল করি, আমরা আমাদের বক্তব্য রাখি, আমরা আমাদের কর্মসূচি পালন করি। রিজভী বলেন, জিয়াউর রহমান দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছে, স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়েছে। কিন্তু যার অবদানে আজ দেশে এত মিডিয়া তার বিরুদ্ধে যারা নাটক রচনা করে, কুৎসা রটনা করে তারা একদিন ইতিহাসের ডাস্টবিনে চলে যাবেন। কিন্তু এভাবে জিয়াউর রহমানকে খাটো করা যাবে না। জিয়াউর রহমান প্রদীপ্ত সূর্যের উদ্ভাসিত আলোর মতোই মানুষের হৃদয়ে থাকবেন। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া থাকবেন মানুষের হৃদয়ে। রুহুল কবির রিজভী বলেন, বর্তমান সরকার দাঁড়িয়ে আছে দুই পায়ের ওপরে নির্ভর করে। সেই দুই পায়ের একটা হচ্ছে যুবলীগ-ছাত্রলীগ, আরেকটি হচ্ছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। তিনি বলেন, আজকে ক্ষমতার লোভে, হালুয়া-রুটির লোভে কয়েকজন ব্যক্তি যাদের লেখা কোন নাটক, কবিতা অথবা গান মানুষ কোনদিন শুনেছে কিনা জানি না, তারা একটা নাটক লিখেছে ইনডেমনিটি নামে। সরকারকে সন্তুষ্ট করতেই এ নাটক বানানো হয়েছে। তারা ধমক ধমক দিয়ে গণমাধ্যমকে বাধ্য করছে এ নাটক প্রচারের জন্য। আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, আজকে সাংস্কৃতিক সংগ্রাম করতে হবে। সাংস্কৃতিক সংগ্রাম কিন্তু রাজনৈতিক সংগ্রাম থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সাংস্কৃতিক সংগ্রামে যদি সাংস্কৃতিক পরজীবীদের আমরা প্রতিহত করতে না পারি তাহলে সার্বভৌমত্ব থাকবে না, স্বাধীনতা থাকবে না। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, আয়োজক সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাকির হোসেন প্রমুখ। ## হাবিব-উন- নবী খান সোহেল বলেন, এখন জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়াকে ব্যঙ্গ করে দেশে নাটক করা হচ্ছে। এই নাটক করা বন্ধ করা নাহলে আগামী দিনে ৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত দেশের দুর্ভিক্ষ নিয়ে নাটক হবে। একদিকে ঢাকা মহানগরের এপাশে ওপাশে দুর্ভিক্ষে মানুষের লাশ পড়ে আছে অপরদিকে ডাস্টবিনের সামনে মানুষ এবং কুকুর যখন পাশাপাশি খাবার খাচ্ছে তখন এই মহানগরীতেই মাথায় সোনার মুকুট পরে কারা হেঁটেছে, তা এদেশের মানুষ জানে। সেগুলো নিয়েও কিন্তু নাটক হবে। সিরাজ সিকদারকে কিভাবে হত্যা করা হয়েছে তা নিয়েও নাটক হবে, কিভাবে সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে চারটি পত্রিকা চালু করে রাখা হয়েছিলো তা নিয়ে নাটক হবে। সোহেল বলেন, জিয়াউর রহমান ও তাঁর পরিবারকে নিয়ে একটি গোষ্ঠী বহুদিন যাবত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কিভাবে তাঁকে ছোট করা যায়। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ ও তার দলের বড় বড় নেতারা। তারা নামিয়ে দিয়েছেন ভাড়া করা বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের। তিনি বলেন, হিমালয় পর্বতের সামনে দাঁড়িয়ে তার উচ্চতা ও বিশালতা দেখে কেউ যদি হিংসে করে আর হিমালয় পর্বতকে গালি দেয় তাতে হিমালয় পর্বতের কিছুই আসে যায় না। আটলান্টিকের সামনে দাঁড়িয়ে তার বিশালতা দেখে কেউ যদি তাকে গালি দেয়, তাকে ছোট করার চেষ্টা করে এতে আটলান্টিকের কিছুই যায় আসে না। সেক্সপিয়রকে নিয়ে, তাঁর নাটক নিয়ে সবাই সমালোচনা করতে পারেন। তবে তার বা তার নাটকের কিছু আসে যায় না। নিজ মহিমা নিয়েই সেক্সপিয়র বেঁচে থাকবেন। ঠিক তেমনিভাবে জিয়াউর রহমানকে খাটো করার জন্য যত চেষ্টাই করা হয় তিনি আপন মহিমায় দেশের মানুষের মনের গভীরে জায়গা করে নিয়েছেন। সেই জায়গা থেকে তাঁকে সরানোর ক্ষমতা কারও নেই।
×