ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ছাত্র ইউনিয়ন স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির মুখপাত্রে পরিণত হয়েছে ॥ ঢাবি ছাত্রলীগ

প্রকাশিত: ১২:২৫, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

ছাত্র ইউনিয়ন স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির মুখপাত্রে পরিণত হয়েছে ॥ ঢাবি ছাত্রলীগ

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী ধর্ষিত হবার ঘটনায় আশ্চর্যজনকভাবে নীরব থেকে ঢাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়ন ধর্ষকদের পক্ষে তাদের সাংগঠনিক অবস্থান প্রমাণ করেছে। পাশাপাশি ধর্ষকদের সাথে নিজেদের রাজনৈতিক মিত্রতাকে তারা ধর্ষিতার আর্তনাদের থেকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছে। যা এই সংগঠনের দেউলিয়াত্ব প্রমাণ করে। সোমবার রাতে ঢাবি ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করা হয়। এর আগে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি সংসদ কর্তৃক গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ধর্ষণ-নিপীড়নের বৈধতা দানকারী ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিতকে ঢাবি ক্যাম্পাসে দেখতে চায় না শিক্ষার্থীরা”। যৌথ বিবৃতিতে ঢাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি সাখাওয়াত ফাহাদ ও সাধারণ সম্পাদক রাগীব নাঈম বলেন, “গতকাল (রবিবার) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক বক্তৃতায় ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ‘স্বাধীনতাবিরোধী ছাড়া অন্য কোনো নারী যদি নির্যাতনের শিকার হয়...তা প্রতিহত করব’ এমন একটা বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা মনে করি, এই বক্তব্য ছাত্রলীগকর্মীদের হাতে ক্রমাগত ঘটে চলা ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনাকে বৈধতা দেয়ার অপচেষ্টা মাত্র।” তারা বলেন, “স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর নির্যাতনের শিকার নারীর মধ্যে ‘স্বাধীনতাবিরোধী’ খোঁজার মাধ্যমে সনজিত তার সংগঠনের নারী নিপীড়কদের বাঁচানোর অপপ্রয়াস করছেন। এদিকে ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের একটি বক্তব্যকে হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যেই কুরুচিপূর্ণ ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে রঙ মাখিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করে ঢাবি ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের বিবৃতিতে বলা হয়, “এই ঘটনা ছাত্র ইউনিয়নের গৌরবজনক ঐতিহাসিকতার হতাশাজনক পরিণতি। সাম্প্রদায়িক-প্রতিক্রিয়াশীল, স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্ঠীর কাছে ছাত্র ইউনিয়নের বর্তমান নেতৃত্ব তাদের সংগঠনকে যেভাবে লজ্জাজনক ইজারা ও দখলদারিত্ব প্রদান করেছে সাম্প্রতিক যৌথ বিবৃতি তারই প্রমাণ বহন করে।” বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন সংসদ যে বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক-মৌলবাদী-উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠীর খোলসে রূপ লাভ করেছে তা সাম্প্রতিক অতীতে একাধিকবার প্রমাণিত। যৌথ বিবৃতিটির মাধ্যমে তারা চূড়ান্তভাবে নিজেরাই তা স্বীকার করে নিলো মাত্র।” স্বাধীনতা সংগ্রামে গৌরবান্বিত ভূমিকা পালন করা ছাত্র ইউনিয়ন বর্তমানে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির মুখপত্রে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, “একাত্তরের মহান স্বাধীনতার সংগ্রাম, ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কুলাঙ্গার শিক্ষকের মিথ্যাচারকে ‘রাষ্ট্রীয় বিতর্কিত বিষয়’ বলে উল্লেখ করেছে ছাত্র ইউনিয়ন। সাম্প্রতিক যৌথ বিবৃতি সেই ধারাবাহিকতারই আরেকধাপ পতন।” ছাত্রলীগের বিৃবতিতে আরো বলা হয়, “বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সবসময় ধর্ষণ, নারী নিপীড়ন ও নারীর মানবিক মর্যাদা ক্ষূন্ন হওয়ার বিপক্ষে সোচ্চার। বিপরীতে ছাত্র ইউনিয়ন ধর্ষণকারীদের পক্ষে নীরবতা পালন করে, ধর্ষণকারীদের সাথে রাজনৈতিক সমঝোতা গড়ে, আকারে-ইঙ্গিতে থেকে প্রকাশে ধর্ষণকারীদের বাঁচানোর চেষ্টা করে নিজেদের সাংগঠনিক অবস্থান পরিষ্কার করেছে। এমনকি নিজ সংগঠনের ভেতরে সংঘটিত নারী নির্যাতনের ঘটনারও কোন প্রতিকার পূর্বে তারা করেনি যার ফলশ্রুতিতে তাদের কেন্দ্রীয় অফিসে নির্যাতিতাকে অবস্থান ধর্মঘট পালন করতে হয়েছে।”
×