নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ, ২৮ সেপ্টেম্বর ॥ কিশোরগঞ্জে সহায়-সম্পদ জবর দখল হওয়া এবং জীবন রক্ষার আকুতি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মোছাঃ জিন্নাত আরা ও আফরিন সুলতানা আফিয়া নামে অসহায় ও বিধবা দুই নারী। তারা সম্পর্কে বউ-শাশুড়ি। স্বামী-সন্তান হারা মোছাঃ জিন্নাত আরা তার একমাত্র মেয়ে নাজমা বেগম ও মেয়ের জামাই আমিনুল ইসলাম আশফাকের বিরুদ্ধে পারিবারিক সহায়-সম্পদ জবর দখল করার অভিযোগ এনে প্রতিকার দাবি করেছেন। এছাড়া পুত্রবধূ আফরিন সুলতানা আফিয়া এবং তিন নাতি-নাতনি নাসির উদ্দিন সজাগ (১০), ইউশা আক্তার নাভা (৮) ও নিশাদ মোয়াবিহা তাইয়্যেবা (৫)সহ নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছেন এই বৃদ্ধা। সোমবার সকালে কিশোরগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কমিশনার মৃত মোঃ গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী মোছাঃ জিন্নাত আরা শহরের পুরানথানায় সোহাগ টাওয়ারে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে মোছাঃ জিন্নাত আরা জানান, তার তিন সন্তানের মধ্যে মেয়ে নাজমা বেগম সবার বড়। এরপর দুই ছেলে সোহাগ ও সুজন। ২০০৮ সালের ৫ ডিসেম্বর বড় ছেলে সোহাগ মারা যাওয়ার দেড় বছরের ব্যবধানে গত ৮ জুলাই ছোট ছেলে সুজন মারা যায়। ছোট ছেলে সুজন ফিশারি-ডিশের ব্যবসাসহ বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তার মারা যাওয়ার পর তাদের পারিবারিক সহায়-সম্পদ এবং ব্যবসা জবর দখলে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে একমাত্র মেয়ে নাজমা ও তার স্বামী আশফাক। সুজনের মৃত্যুর মাত্র তিনদিন পর তারা ফিশারি দখল করে মাছ ছাড়ে এবং সুজনের ডিশের ব্যবসা ও দোকান সব কিছু তাদের বুঝিয়ে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। জিন্নাত আরা ও সুজনের সদ্য বিধবা স্ত্রী আফরিন সুলতানা আফিয়া এতে অস্বীকৃতি জানালে তারা পরিবারের সবাইকে ঘরের ভেতরে রেখে বাইরে তালা ঝুলিয়ে দেয়। জিন্নাত আরা ও পরিবারের সদস্যদের চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে গেলেও কেউ তালা খুলে দিতে সাহস পায়নি। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। পরবর্তীতে সুজনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আলমারিতে রাখা সমস্ত দলিলপত্র আশফাক তালা ভেঙ্গে নিয়ে গেলে এ বিষয়ে মোছাঃ জিন্নাত আরা কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। থানা থেকে দলিলপত্র ফেরত দেয়ার কথা বললেও এখন পর্যন্ত সেসব ফেরত দেয়নি। মোছাঃ জিন্নাত আরার অভিযোগ, মেয়ে নাজমা বেগমের পাওনা সম্পূর্ণ ওয়ারিশ তিনি বুঝিয়ে দিতে চাইলেও তারা অন্যায়ভাবে পারিবারিক সহায়-সম্পদ এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জোর করে দখল করার চেষ্টা করছে। প্রাণনাশের আশঙ্কায় তারা এখন চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে মোছাঃ জিন্নাত আরা, পুত্রবধূ আফরিন সুলতানা আফিয়া ছাড়াও তার তিন শিশু সন্তান নাসির উদ্দিন সজাগ, ইউশা আক্তার নাভা ও নিশাদ মোয়াবিহা তাইয়্যেবা উপস্থিত ছিল। এ বিষয়ে আমিনুল ইসলাম আশফাকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির প্ররোচণায় আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা রটনা করা হচ্ছে।