ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বৌদ্ধ বিহারে হামলার বিচার শেষ হয়নি ৮ বছরেও

প্রকাশিত: ২১:৪৭, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

বৌদ্ধ বিহারে হামলার বিচার শেষ হয়নি ৮ বছরেও

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ রামু ও উখিয়া উপজেলার বৌদ্ধ বিহার এবং পল্লীতে চালানো নারকীয় হামলার বিচার আট বছরেও শেষ হয়নি। সাক্ষীর অভাবে এ বিচার প্রক্রিয়া থমকে থাকলেও রামু-উখিয়ার বৌদ্ধদের মাঝে ফিরেছে সম্প্রীতি। পোড়া মন্দিরে তৈরি হয়েছে নান্দনিক স্থাপনা। দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাশৈলীতে পুণ্যার্থীদের পাশাপাশি বেড়েছে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আকর্ষণ। ক্ষতিগ্রস্তরা পেয়েছেন নতুন ঘর। এখনও নিরাপত্তায় সতর্ক রয়েছে প্রশাসন। তবে বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মাঝে রয়েছে অসন্তোষ। অপরাধীদের বেশিরভাগ আইনের আওতায় না আসায় তাদের শঙ্কাও কাটছে না। রামু সহিংসতার আট বছর আজ। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রামুতে বুদ্ধমূর্তি, বৌদ্ধ বিহার ও বৌদ্ধ বসতিতে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগসহ উগ্র-সাম্প্রদায়িক হামলার সেই বিভীষিকাময় দিন স্মরণে বিগত বছরের মতো এ বছরও স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করেছে রামু কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ যুব পরিষদ। দিনব্যাপী এ স্মরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন, রামু পানের ছড়া বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ সুচারিতা মহাথের। প্রধান ধর্মদেশক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পুণ্যাচার ভিক্ষু সংসদের সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রামের পটিয়া কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ড. সংঘপ্রিয় মহাথের। এ উপলক্ষে লাল চিং-মৈত্রী বিহার কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে ভোরে বুদ্ধপূজা, সকালে জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, অষ্ট পরিষ্কার দানসহ মহাসংঘদান, দুপুরে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন, অতিথি ভোজন, বিকেলে হাজার প্রদীপ প্রজ্বলন ও সন্ধ্যায় বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ স্থানীয় বৌদ্ধ গ্রামবাসীরা অংশ নেবেন বলে জানান, ২৯ সেপ্টেম্বর স্মরণ অনুষ্ঠানে আহ্বায়ক বিপুল বড়ুয়া আব্বু, সদস্য সচিব বিপ্লব বড়ুয়া ও অর্থ সম্পাদক রুবেল বড়ুয়া। ২০১২ সালের ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর রামু ও উখিয়া-টেকনাফে বৌদ্ধপল্লীতে চালানো নারকীয় হামলার ১৮ মামলার একটি বিচারও শেষ হয়নি। ন্যক্কারজনক এ ঘটনায় দায়ীরা কেউ শাস্তি পায়নি এখনও। ঘটনারপর বিভিন্ন মামলায় ৯৯৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এ ঘটনায় আটকরা সবাই এখন জামিনে। অনেকেই বিদেশে পাড়ি দিয়েছে। ঘটনার পরপরই ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ বিহার ও ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ করে দিয়েছে সরকার। দীর্ঘ আট বছরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অনেকটা ফিরে এসেছে বলে জানান রামুর বৌদ্ধরা। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, বৌদ্ধ মন্দির ও বসতিতে হামলার ঘটনায় সর্বমোট ১৯টি মামলা দায়ের করা হয়। ইতোমধ্যে বাদীর সম্মতিতে ১টি মামলা প্রত্যাহার হয়। অন্য ১৮টি মামলা আদালতে বিচার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
×