ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাঙ্গুনিয়ায় ভুয়া দলিলে বনভূমি দখল

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

রাঙ্গুনিয়ায় ভুয়া দলিলে বনভূমি দখল

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাঙ্গুনিয়া, ২৮ সেপ্টেম্বর ॥ রাঙ্গুনিয়া বন রেঞ্জের বনাঞ্চলে সরকারী জমি ভুয়া দলিলে বেচাকেনা হচ্ছে। জমির দখল নিয়ে রাতারাতি ঘর তৈরি করছে দখলদাররা। অবস্থান পাকাপোক্ত করতে রাতারাতি সে ঘরে লাগানো হচ্ছে বৈদ্যুতিক মিটারও। সরকারী বনভূমি দখল করতে এমন একটি চক্র গড়ে উঠেছে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায়। সরজমিনে জানা যায়, বন বিভাগ ও পিডিবির কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীর যোগসাজশে একের পর এক অপকর্ম করে চলেছে এই চক্র। পরস্পর যোগসাজশে এই চক্র রাঙ্গুনিয়া বন রেঞ্জের কোদালা বিটের আওতাধীন নিশ্চিন্তাপুর দখল করেছে বন বিভাগের সামাজিক বনায়নের ৩ একর ২০ শতক জমি। সামাজিক বনায়নের আওতায় ১৫ বছর আগে এসব জমি স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুব আলম ও তার ছেলে আরিফ বখতিয়ারকে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে চুক্তিমূলে লিজ দেয় বন বিভাগ। লিজ পাওয়ার পর তারা আম কাঁঠাল নারিকেল সুপারি গামারি চাপালিশসহ বিভিন্ন জাতের সহ¯্রাধিক ফলজ ও বনজ বৃক্ষের চারা লাগান। এসব গাছের বয়স বয়স এখন ১০/১৫ বছর। কিন্তু গাছসহ কোটি টাকার এই জায়গা দখল করতে প্রথমে জাল দলিল সৃজন করে মোহাম্মদ হাবিব, মোহাম্মদ ফোরকানসহ কয়েকজন দখলদার। এরপর সে দলিল দেখিয়ে তারা রাতারাতি নিয়ে এসেছে বিদ্যুতের মিটারও। দখলদাররা ঘরের ছাউনি খুঁটিসহ আনুষঙ্গিক নির্মাণসামগ্রী অন্যত্র প্রস্তুত করে রাখে। এসব নিয়ে ২০ থেকে ৩০ জনের একটি দল গত ২৮ আগস্ট মধ্যরাতেই বন বিভাগের ওই জায়গায় এসে স্থাপন করে একটি টিনের ঘর। আগে থেকে ম্যানেজ হয়ে থাকা বিদ্যুত বিভাগের কর্মচারী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সে ঘরে লাগিয়ে দেয় মিটারও। দখলদাররা বলছে, লিজ পাওয়া ব্যক্তি থেকে তারা এটি দলিল মূলে কিনে নিয়েছে। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী বন বিভাগের সরকারী কোন জমি দলিল মূলে কেউ বেচাকেনা করতে পারে না। আবার প্রকৃত দলিল ছাড়া বিদ্যুতের মিটারও লাগাতে পারে না বিদ্যুত বিভাগ। তার পরও সব অসম্ভব সম্ভব হয়েছে কোদালা বিটের সরকারী বনাঞ্চলে। এই অনিয়মের বিচার চেয়ে লিজ পাওয়া মাহবুব আলম বিষয়টি জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ (আইজিপি) সরকারের বিভিন্ন দফতরে। এই অভিযোগে দখলদার হিসেবে মোহাম্মদ হাবিব, মোহাম্মদ ফোরকানসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগ আছে কোদালা বনবিট কর্মকর্তা হারুনের নামেও। জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে মোহাম্মদ হাবিব বলেন, মাহবুব আলমের ছেলে কায়সার হামিদের কাছে আমরা কয়েকজন টাকা পাই। এর বিনিময়ে মাহবুব আলমের লিজ পাওয়া বন বিভাগের জায়গা আমাদের কাছে দলিল মূলে বিক্রি করেছে। এ দলিল মূলে আমি বিদ্যুত বিভাগে আবেদন করলে তারা এসে মিটার লাগিয়ে দেয়। বন বিভাগের জমি এভাবে বেচাকেনা বা দলিল করা নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাঙ্গুনিয়ায় সরকারী অনেক জমি এভাবে ভোগ দখল করছে অনেকে। যার কাছে যা দখল আছে সেটি তারা ভোগ দখল করে। দখল স্বত্বে তিনিসহ ৪/৫ জন এখন সরকারী এ জমির মালিক বলে দাবি করেন। রাঙ্গুনিয়া বন রেঞ্জ কর্মকর্তা প্রহলাদ চন্দ্র রায় বলেন, কোদালা বন বিটের সামাজিক বনায়ননের জায়গায় জবর দখলের সংবাদ পেয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কোদালা বন বিট কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি।
×