ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ধারাবাহিকতার সুফল

প্রকাশিত: ২১:০৩, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

ধারাবাহিকতার সুফল

গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একে অপরের সঙ্গে যুক্ত। গণতন্ত্র বহাল থাকলে উন্নয়ন হয় দেশের, পক্ষান্তরে গণতন্ত্রবিরোধীরা ব্যাহত করে উন্নয়ন। তবে গণতন্ত্রকে আহত করে গণতন্ত্রবিরোধীরা নিজেদের আখের গোছানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। যদিও তাতে শেষ রক্ষা হয় না, তারা নিক্ষিপ্ত হয় ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে। এই গণতন্ত্রবিরোধীরা হতে পারে সামরিক স্বৈরশাসক, কিংবা ছদ্মবেশী গণতন্ত্রী। বাংলাদেশ তাদের প্রথম প্রত্যক্ষ করে স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যাকা-ের পর। এখনও সেই অপশক্তি সক্রিয় বলেই গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়, উন্নয়নে সাময়িক স্থবিরতা নেমে আসে। জাতীয় সংসদে একবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমালোচকদের উদ্দেশ করে বলেছেন, গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা আছে বলেই দেশের এত উন্নয়ন হচ্ছে। দেশে এত উন্নয়ন ও অগ্রগতির পরও যারা কিছুই দেখতে পায় না তারা আসলে কী চায়? রাজনৈতিক দল হচ্ছে গণতন্ত্রের বাহন। গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ্য ও চোরাগোপ্তা সন্ত্রাসী কর্মকা- চালালে রাজনৈতিক দলকে সন্ত্রাসী দলই বলতে হয়। বিএনপি দেশের অন্যতম একটি প্রধান রাজনৈতিক দল হওয়া সত্ত্বেও তার কর্মকা- বিশ্লেষণ করলে তাকে সন্ত্রাসী দল আখ্যা দেয়াটাই সমীচীন বলে মনে হয়। কথায় বলে ‘সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ।’ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী তথা বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী সন্ত্রাসী দল জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির গাঁটছড়া বাঁধার বিষয়টি যেন ওই প্রবাদটিরই একটি উদাহরণ। গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় সন্ত্রাসবাদকে সঙ্গী করে রাজনীতির ঘুঁটি চালা হলে তা বুমেরাং হয়ে উঠতে পারে। মুজিববর্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার সঙ্কল্পের কথা জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, দরিদ্র জনগোষ্ঠী ছিল প্রায় ৪০ শতাংশ। এই দারিদ্র্যের হার আমরা কমিয়ে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে এনেছি। আমরা আরও কমাতে চাই। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষকে একটা সুন্দর জীবন আমরা উপহার দিতে চাই। উন্নয়ন কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য সরকারের ধারাবাহিকতাও অপরিহার্য। আর এটাও সত্য যে, দেশের মানুষ সঠিকভাবেই বিচার-বিবেচনা করতে সমর্থ ণ্ডে তাদের জন্য কোন্ সরকারের অবদান কী, জনকল্যাণমূলক সরকার কারা। আর সে কারণেই আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনে সক্ষম হয়েছে। দেশের ইতিহাসে আর কোন দল, সঠিকভাবে বললে শেখ হাসিনা ব্যতীত ভিন্ন কোন সরকারপ্রধান তাৎপর্যপূর্ণভাবে ইতিহাসের দীর্ঘতম সময় ধরে দেশসেবার তেমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেননি। রাজনৈতিক নয়, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য জোরদারে অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর জোর দেয়ার যে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী গত শুক্রবার সেটি অত্যন্ত যুগোপযোগী। বর্তমান বিশ্বে কূটনৈতিক মিশনের দায়িত্ব বদলে গেছে। এখন শুধু রাজনৈতিক কূটনীতি নয়, দরকার হয় অর্থনৈতিক কূটনীতিও। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো, সকলের সঙ্গে মিশে কীভাবে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা অর্জন করা যায়, উন্নয়ন করা যায়, একে অপরকে কীভাবে সহযোগিতা করা যায়, একে অপরের সহযোগিতার মধ্য দিয়ে বিশ্বে শান্তি কীভাবে প্রতিষ্ঠা করা যায় সেভাবেই বঙ্গবন্ধুকন্যার নির্দেশিত পথ ধরে ডিপ্লোমেসি চালিয়ে গেলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে। জনগণের কল্যাণে ও তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে আন্তরিকতা নিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলেই দেশের এত উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে। গণতন্ত্রবিরোধীরা যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে- এটাই দেশবাসীর বিশ্বাস।
×