ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভ্যাকসিন বৈশ্বিক সম্পদ

প্রকাশিত: ২১:০২, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

ভ্যাকসিন বৈশ্বিক সম্পদ

সর্ববৃহৎ বৈশ্বিক আন্তর্জাতিক সংস্থা জাতিসংঘের ৭৫তম সাধারণ অধিবেশনে ভার্চুয়াল ভাষণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি যে উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন তা সবিশেষ প্রণিধানযোগ্য। করোনা মহামারীর ভ্যাকসিন যে দেশই প্রথম আবিষ্কার করুক না কেন সেটিকে বৈশ্বিক সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করে সব দেশের জন্য এর প্রাপ্তি সহজ, সুলভ ও নিশ্চিত করা আবশ্যক। এক্ষেত্রে একাধিক দেশও হতে পারে যারা করোনার ভ্যাকসিনের সফল প্রয়োগ ঘটাতে সফল হয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প খাতের যে সাফল্য ও সক্ষমতা তাতে করোনা ভ্যাকসিনের ফর্মুলা তথা মেধাস্বত্ব পেলে তা বিপুলভাবে উৎপাদন করা সম্ভব। সেটি হবে মূল্যসাশ্রয়ী ও মানসম্মত। তদুপরি প্রয়োজনে বিদেশেও রফতানি করা সম্ভব। যথাযথ ও সময়োচিত এই বক্তব্য প্রদানের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মানবতার জননী বিশ্ববাসীর কাছে নন্দিত ও প্রশংসিত হবেন নিশ্চয়ই। প্রধানমন্ত্রীর এই উদার আহ্বান বিশ্ব নেতৃবৃন্দের ঐকমত্য প্রকাশ করার এখনই সময়। কেননা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে সতর্ক করে বলেছে যে, করোনা অতিমারীতে অন্তত ২০ লাখ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে আগামীতে। এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যাসহ বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলায়ও একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি। করোনাভাইরাস তথা প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ মোকাবেলায় প্রথম ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। তবে আগামী বছরের জানুয়ারির আগে এটি বাজারজাতকরণের সম্ভাবনা নেই। উল্লেখ্য, ভ্যাকসিন তৈরির উদ্যোগে এগিয়ে আছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড, যুক্তরাষ্ট্রের মর্ডানা-রেনাটা-জনসন এ্যান্ড জনসন, জার্মানি, চীন, অস্ট্রেলিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশ। ভয়াবহ ও হন্তারক সংক্রামক ব্যাধি করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে অদ্যাবধি কোন নিদান নেই। আবিষ্কার হয়নি কোন ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক, যা কার্যকর করোনা প্রতিরোধে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন করোনা আক্রান্ত রোগীকে নিরাময় করে তুলতে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাপী জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এ অবস্থায় বাংলাদেশেও ব্যাপক জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম বাড়ানো অত্যাবশ্যক। নিয়মিত হাত ধোয়া,স্যানিটাইজার ব্যবহার, মাস্ক-গ্লাভস ব্যবহারসহ ব্যক্তিগত সুরক্ষা নীতি সর্বদাই মেনে চলতে হবে ঘরে ও বাইরে সর্বত্র। হাসপাতাল কিংবা হোম কোয়ারেন্টাইনের নিয়মকানুন অনুসরণ করতে হবে যথাযথভাবে। জনসমাগম যথাসম্ভব বর্জন ও পরিহার করতে হবে। প্রয়োজন ব্যতিরেকে ঘরের বাইরে না বেরোনোই ভাল। সর্বোপরি সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করতে হবে প্রতিকূল পরিস্থিতির। সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে ফেসবুকের ভুয়া প্রেসক্রিপশন, ওষুধ ও টোটকা চিকিৎসার বিরুদ্ধেও। এর পাশাপাশি করোনা ভ্যাকসিনের মেধাস্বত্ব হতে হবে বৈশ্বিক, যাতে সহজে ও সুলভে সব দেশ ও জাতির জন্য এর প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা যায়। জাতিসংঘসহ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক্ষেত্রে ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে।
×