ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

# করোনায় আক্রান্ত হলেন উপ-পুলিশ কমিশনার সুদীপ

মানবিকতার অনন্য নজির গুলশান পুলিশের

প্রকাশিত: ১৭:৩৬, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

মানবিকতার অনন্য নজির গুলশান পুলিশের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে আগ মার্চ প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ার পর থেকেই সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে ও করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে নাগরিকদের নিরাপদে ঘরে রাখতে পেশাদারিত্ব ও মানবিকতার এক অনন্য নজীর স্থাপন করেছে গুলশান পুলিশ বিভাগের সদস্যরা। ইতোমধ্যে গুলশান বিভাগের পুলিশের এডিসি থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত ১১৬ জন পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন, দুইজন মৃত্যুবরণ করেছেন। আমরা আমাদের এই সদস্যদের নিয়ে গর্বিত। সোমবার গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার সুদীপ চক্রবর্তী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক স্ট্যাটাসে এসব বিষয় উল্লেখ করেছেন। স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কমিউনিটি সংক্রমণ প্রতিরোধে সাধারণ মানুষকে নিরাপদে ঘরে রাখতে গুলশান বিভাগের পুলিশ সদস্যরা মাঠে থেকে দিনরাত আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। রোবাস্ট কনভয় পেট্রোলিং, শক্তিশালী চেকপোস্ট, মোবাইল পেট্রোলিং, উচ্চপ্রযুক্তিসম্পন্ন সিসিটিভি মনিটরিং, বিভিন্ন সোসাইটিকে সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে কার্যকর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত ও মানুষদের নিরাপদে ঘরে রাখার জন্য বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কর্মহীন, অসহায়, দুস্থ নিম্ন আয়ের মানুষ বিশেষ করে নিম্ন মধ্যবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্ত যারা হাত পাততে পারেন না এরকম ২০ হাজারের অধিক পরিবারকে তাদের পরিচয় গোপন রেখে বাসায় গিয়ে গত এক এপ্রিল থেকে নাভানা গ্রুপ ও বিভিন্ন মানবিক ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের সক্রিয় পৃষ্ঠপোষকতায় খাদ্য সহায়তা পৌঁছানো হয়েছে। এছাড়াও মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও জামালপুর জেলায় বন্যার্তদের মধ্যে খাদ্যসহ উপহার সামগ্রি বিতরণ করা হয়েছে। আবার প্রকাশ্যে গোল চিহ্ন দিয়ে বাধ্যতামূলক সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করেই বিভিন্ন এলাকায় খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। নিয়মিতভাবে জীবাণুনাশক স্প্রে করার পাশাপাশি কাঁচাবাজার ও সুপারশপে প্রবেশ-বাহির একমুখী করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ছিল শুরু থেকেই। সুপারশপ, ওষুধ ও নিত্যপণ্যের দোকানে স্টীকার কিংবা রং দিয়ে সামাজিক দূরত্ব নির্দিষ্টকরণ করার প্রানান্ত চেষ্টার কোন কমতি ছিল না। ফেসবুক স্টেটাসে আরো বলা হয়, গুলশান বিভাগের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহায়তায় বিভিন্ন বাসায় ওষুধ ও নিত্যপণ্য পৌঁছানো হয়েছে। করোনাভাইরাস আক্রান্তদের হাসপাতালে পাঠানো, আবাসস্থল সংলগ্ন এলাকা লকডাউন ও আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের রকায়ারেন্টিন নিশ্চিতে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে গুলশান বিভাগের সদস্যরা কাজ করেছেন। সর্বোচ্চ আন্তরিকতা, নিষ্ঠা, পেশাদারিত্ব সর্বোপরি সাধারণ মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকেই সর্বস্ব বিলিয়ে গুলশান বিভাগের গর্বিত ও মানবিক পুলিশ সদস্যরা তৎপর করোনাভাইরাস দুর্যোগ থেকে সবাইকে রক্ষা করার জন্য। তাদের দলনেতা হিসেবে আমার দৃঢ় আত্মবিশ্বাস ছিলো এই সাত মাস দিনরাত্রি নাগরিকদের পাশে থেকে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়েছি। তাই সময় ও করোনাভাইরাস নিশ্চয় আমাকে মার্জনা করবে। কিন্তু সব শংকা দূর করে আমি কোভিড ১৯ পজিটিভ হয়েছি। বর্তমানে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সবার কাছে কায়মনোবাক্যে শুভাশিস প্রার্থী, নিশ্চয় আবার সুস্থ হয়ে ছুটে যাবো কর্মের নেশায় গুলশান জনপদে। সবার জন্য আরও অনেক কাজ যে বাকি আছে। মহান সৃষ্টিকর্তা নিশ্চয় সে সুযোগ করে দিবেন।
×