ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা চেম্বারের আলোচনায় বক্তারা

বিনিয়োগ আকর্ষণে মানসম্মত ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্ট গুরুত্বপূর্ণ

প্রকাশিত: ২৩:২৭, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

বিনিয়োগ আকর্ষণে মানসম্মত ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্ট গুরুত্বপূর্ণ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ বলেছেন, বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বহুজাতিক কোম্পানিসমূহকে ‘ইন্টারন্যাশনাল এ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ডস বোর্ড’-এর আওতায় আন্তর্জাতিক মানদ- অনুসরণ করতে হয় এবং ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণের জন্য ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং-এর গাইডলাইন আরও সহজীকরণ এবং ব্যবহারবান্ধব করা প্রয়োজন। শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং এ্যাক্ট ২০১৫ : ব্যবসায়িক কর্মকান্ডের প্রভাব’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন তিনি। শামস মাহমুদ বলেন, মানসম্মত অডিট রিপোর্ট প্রস্তুতকরণ ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেটি দেশের ব্যাংকিং খাতের খেলাপী ঋণ চিহ্নিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, আমাদের পুঁজিবাজারে এখনও কাক্সিক্ষত উন্নয়ন হয়নি, এছাড়াও দেশের জিডিপিতে পুঁজিবাজারের অবদান সারা পৃথিবীর অন্য দেশসমূহের মধ্যে সবচেয়ে কম, এ অবস্থা উন্নয়নে লিস্টেট ও নন-লিস্টেট কোম্পানিসমূহের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্ট অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করতে পারে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মোসলেম চৌধুরী বলেন, আমাদের ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং আইন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিষয়াদির পাশাপাশি জনস্বার্থের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোও বিবেচনা করে থাকে। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে এ কাউন্সিলের কার্যক্রম আরও সম্প্রসারণ ও দৃশ্যমান করার ওপর জোরারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইআরএফএস)’ অনুসরণের ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই নিজেদের সক্ষমতাকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং আমাদের এসএমই খাত এখনই আইআরএফএস-এর গাইডলাইন অনুসরণের জন্য প্রস্তুত হতে পারেনি, তাই এ বিষয়টি নিয়ে সকলেরই যতœবান হতে হবে। তিনি ফাইন্যান্সিয়াল কাউন্সিল এবং এ খাতে প্রফেশনালদের মধ্যে সমন্বয় আরও বাড়নোর প্রয়োজন। তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কারণে আগামী ১০ বছরের মধ্যে আইওটি এবং মেশিন লার্নিং ব্যবস্থা আরও সহজলভ্য হলে, আমাদের প্রথাগত অডিট রিপোর্টের ব্যবস্থাকে যুগোপোযোগী করার জন্য আইসিএবি ও আইসিএমএবি-এর প্রতিষ্ঠানগুলোকে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পানা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়াও তিনি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রম স্বচ্ছতা ও গবর্নেন্স বাড়ানোর আহ্বান জানান। সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক আফতাব-উল ইসলাম, এফসিএ বলেন, ক্যামেল রেটিং-এর মতো অডিট কোম্পানিসমূহের জন্য এফআরসি কর্তৃক রেটিং ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে পারে, যার মাধ্যমে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা, অবস্থান এবং সক্ষমতা সম্পর্কে আমরা ধারণা পেতে পারি। এছাড়াও তিনি অডিট রিপোর্টের বিশ^াসযোগ্যতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের ‘ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্ট মনিটরিং ডিভিশন’র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ, এফসিএ, এসিএ। তিনি বলেন, ব্যবসায়িক কার্যক্রমের তিনটি বিষয় যেমন- আর্থিক তথ্য বিবরণী, অডিট প্রসেস এবং স্বচ্ছতা নিরূপণ ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং এ্যাক্ট-এর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের স্ট্যান্ডার্ড সেটিং ডিভিশনের নির্বাহী পরিচালক এম আনোয়ারুল করিম, এফসিএ, সিপিএ, যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ^বিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. জাভেদ সিদ্দিকী, বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট-এর আপীল বিভাগের এ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার এ এম মাসুম, দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড এ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)-এর সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক, এফসিএ এবং দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট এ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট এ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি)-এর সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন আকন, এফসিএমএ যোগদান করেন।
×