ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

‘একুশ শতকের বাঙালী হৃদয়ে বিদ্যাসাগর’

প্রকাশিত: ২৩:১০, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

‘একুশ শতকের বাঙালী হৃদয়ে বিদ্যাসাগর’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলার নবজাগরণের পুরোধা ব্যক্তিত্ব ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। কিংবদন্তি এই শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকারের ২০০তম জন্মবার্ষিকী ছিল শনিবার। এ উপলক্ষে ‘একুশ শতকের বাঙালী হৃদয়ে বিদ্যাসাগর’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে জাতীয় জাদুঘর। বিকেলে জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশতবর্ষ জন্মদিনের আলোচনায় বক্তারা বলেন, আমাদের সমাজে আজও অন্ধকার রয়ে গেছে। বিদ্যাসাগরের মন্ত্রে ব্রতী হয়ে সমাজ থেকে অন্ধকার দূর করতে হবে। মানুষের জন্য নিজেকে নিয়োজিত করতে বিদ্যাসাগর আজও আমাদের পথ দেখায়। বাঙালীর নবজাগরণের প্রধান পুরুষ ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। বাঙালীর জাগরণে ও বিকাশে তার ভূমিকা অতুলনীয়। শুধু তাই নয়, বাংলা গদ্যের প্রথম স্বার্থক রূপকার ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। বাংলা গদ্যকে সরল ও আধুনিক করার ক্ষেত্রে তার অবদান অতুলনীয়। বিশেষ করে নারীদের দুর্গতির যুগে তিনি নেমেছিলেন উদ্ধারকর্তার ভূমিকায়। রক্ষণশীল হিন্দু সমাজের প্রচ- বিরোধিতা উপেক্ষা করে বিধবা বিবাহ চালু করেছিলেন, রোধ করেছিলেন বহু বিবাহ। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রবীন্দ্র ভারতী বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মহুয়া মুখোপাধ্যায়। বিশেষ অতিথি ছিলেন রবীন্দ্র বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। কে এম খালিদ বলেন, ব্রিটিশভারতে উপনিবেশ আমলে দৃঢ় মনোবল নিয়ে তিনি এদেশের মানুষের শিক্ষা, নারী শিক্ষা সর্বস্তরে চালু করেছিলেন। আজকে যে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা আমরা দেখি তা প্রবর্তন করেছিলেন বিদ্যাসাগর। তিনি যেভাবে সারাজীবন মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন তা আজও অনুকরণীয়। বিশ^জিৎ ঘোষ বলেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এটা বুঝেছিলেন যে, নারী যদি শিক্ষিত না হয় জাতি শিক্ষিত হবে না। নারী শিক্ষা, বিধবা নারীদের বিবাহ, বহু বিবাহ রদ করতে তিনি মরণপণ লড়াই করে বহু বিবাহ বন্ধ করতে সক্ষম হন, বিধবা বিবাহও প্রচলন করতে পেরেছিলেন। আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ঈশ^রচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশতজন্মদিন এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এই দুইশত বছর পরেও তিনি যে স্মরণীয়, বরণীয় তার মূল কারণ তার অবদান। বাংলার নবজাগরণের তিনি অন্যতম প্রধান পুরুষ। যখন মেয়েদের ঘর থেকে বের হতে দেয়া হয় না-সেই গ্রামের মেয়েদের জন্য তিনি ৩৫টি বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন। যশোরে গীতিনৃত্যনাট্য ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ মঞ্চস্থ ॥ মুজিববর্ষ উপলক্ষে জেলা শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে শুক্রবার সন্ধ্যায় যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে গীতিনৃত্যনাট্য ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ মঞ্চস্থ হয়। জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান বুলু জানান, গীতি নৃত্যনাট্যটি গ্রন্থনা ও পরিচালনায় সুকুমার দাস, নৃত্য পরিচালনায় নৃত্য শিক্ষক সঞ্জীব চক্রবর্তী জন ও খাদিজা ইসলাম, সঙ্গীত পরিচালনা তাওহিদুল ইসলাম ও শায়ন্তনী দেবনাথ। এছাড়া নাট্যাংশ পরিচালনায় ছিলেন কামরুল হাসান রিপন ও ভিডিও সম্পাদনা অসীম সাহা। জেলা শিল্পকলা একাডেমির সহসভাপতি অধ্যাপক সুকুমার দাস জানান, মহান মুক্তিযুদ্ধে যশোর রোডের শরণার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্দশা ও যুদ্ধের চিত্র নিয়ে লেখা ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ কবিতাটি বাংলায় ভাষান্তর করেন খান মোহাম্মদ ফারাবি। এর অনেক পরে ১৯৯৯ সালে ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পী মৌসুমী ভৌমিক কবিতাটি ভাবানুবাদ করে গানে রূপ দেন। সাড়ে আট মিনিটের এই গান নিয়েই নির্মিত হয়েছে গীতিনৃত্যনাট্য ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’। যা মঞ্চে ৪৫ মিনিট ধরে উপস্থাপন করা হয়েছে। মঞ্চদৃশ্যে ব্রিটিশ আমল থেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের নিপীড়িত মানুষের হাহাকার ও গণহত্যার দৃশ্যপট মেলে ধরা হয়েছে। শব্দাবলী বরিশালের ‘বৈশাখিনী’ নাটক মঞ্চস্থ ॥ করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে নগরীর শব্দাবলী স্টুডিও থিয়েটার হলে শুক্রবার সন্ধ্যায় ‘বৈশাখিনী’ শিরোনামের মঞ্চনাটকের প্রদর্শনী হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রযোজনা ‘বৈশাখিনী’ নাটকটি রচনা করেছেন ভারতের প্রখ্যাত নাট্যকার চন্দন সেন, নবনাট্যরূপ দিয়েছেন মাহফুজা হিলালী। নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন বরিশালের কৃতীসন্তান সৈয়দ দুলাল। বরিশাল শব্দাবলীর সভাপতি সৈয়দ দুলাল জানান, করোনার কারণে শুধু অনলাইন ভিত্তিক কিছু প্রোগ্রাম ছাড়া তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বৈশ্বিক এই মহামারীতে এখন মানুষের জন্য বিনোদন একান্ত প্রয়োজন। তাই পুনরায় নিয়মিত নাটক মঞ্চায়নের কাজ শুরু করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাধ্যতামূলকভাবে দর্শকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে হলে প্রবেশ করানোসহ আসন বিন্যাসের ক্ষেত্রেও বিষয়টি বিবেচনা করে আসন সংখ্যা সীমিত করা হয়েছে।
×