ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা

শেয়ারবাজারে সূচকের সঙ্গে লেনদেনের পতন

প্রকাশিত: ২০:৪৭, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

শেয়ারবাজারে সূচকের সঙ্গে লেনদেনের পতন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শেয়ারবাজারে গত সপ্তাহে লেনদেন ও সার্বিক সূচক দুটোই কমেছে। নতুন কোম্পানি ওয়ালটন হাইটেকের লেনদেন শুরু এবং বিমা কোম্পানির চাহিদা বাড়ার সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিনদিন পতন আর দুদিন সূচকের উর্ধমুখী ধারায় লেনদেন হয়েছে। সার্বিক সূচক কমলেও নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানির বদৌলতে বেড়েছে বাজার মূলধন। গত সপ্তাহে ডিএসইতে ৪ হাজার ৫৭৩ কোটি ৭২ লাখ ৭০ হাজার ৩৯৩ টাকা মূল্যের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৬৩৫ কোটি ৩৩ লাখ ২১ হাজার ৬৩৬ টাকা। অর্থাৎ টাকার অঙ্কে লেনদেন আগের সপ্তাহের চেয়ে ১ হাজার ৬১ কোটি ৬০ লাখ ৫১ হাজার ২৪৩ টাকা কমেছে; যা শতাংশের হারে কমেছে ১৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ টাকা। ফলে আগের সপ্তাহের চেয়ে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৯১৪ কোটি টাকায়। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১২৭ কোটি। লেনদেনের পাশাপাশি কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। এ সপ্তাহে ডিএসইতে ৩৫৯টি কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১২৫টির, কমেছে ১২৪টির। আর ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত। আর তাতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের চেয়ে ১২৫ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৯৭৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। একইভাবে কমেছে ডিএসইর অন্য দুই সূচক। গত সপ্তাহের সব সূচক নেতিবাচক হলেও ওয়ালটন হাইটেকসহ বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় বিনিয়োগকারীদের পুঁজি অর্থাৎ বাজার মূলধন ৯ হাজার ১৮ কোটি ৯১ লাখ ৭৪ হাজার ৪০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৬৫১ কোটি ৬৩ লাখ ২২ হাজার ৫১৪ টাকা। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত এই সপ্তাহেও জেড ক্যাটাগরির শেয়ারের দাম বেড়েছে বেশি। ফলে বিনিয়োগকারীদের জেনে-বুঝে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক ও সাবেক সভাপতি মোঃ রকিবুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে ‘জেড’ ক্যাটাগরি ও নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সতর্কতা খুব বেশি জরুরী বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, উর্ধমুখী বাজারে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। তাদের অনেকে কোম্পানির ফান্ডামেন্টাল তথ্য কিংবা বর্তমান পারফর্মেন্স কি না জেনেই গুজবে কান দিয়ে বা হুজুগে পড়ে শেয়ার কেনা-বেচা করেন। বিনিয়োগকারীদের এই অভ্যাস পরিহার করতে হবে। রকিবুর রহমান বলেন, বিভিন্ন সময় দেখা গেছে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর অনেকে নতুন শেয়ারের প্রতি অতিমাত্রায় ঝুঁকে পড়েন। তারা তাদের কাছে থাকা অন্য কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে নতুন শেয়ারে বিনিয়োগ করেন। তাদের এই অতি আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে একটি চক্র নতুন শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানোর চেষ্টা করে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে এই মূল্য টেকসই হয় না। ফলে কিছু বিনিয়োগকারী মুনাফা করতে সক্ষম হলেও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর বড় অংশই ক্ষতিগ্রস্ত হন। তাই নতুন শেয়ার কেনার জন্য হাতে থাকা শেয়ার বিক্রির আগে ভালভাবে ভাবতে হবে। বিনিয়োগকারীর হাতে থাকা শেয়ারের চেয়ে নতুন শেয়ার ফান্ডামেন্টাল দিক থেকে বেশি ভাল কি-না নিজেই তা বিচার-বিশ্লেষণ করতে হবে। সাধারণ হিসেবে বিনিয়োগকারীদের দুর্বল মৌলভিত্তির শেয়ার কেনার কথা নয়। নিশ্চয়ই তাদের হাতে থাকা শেয়ার মৌলভিত্তির দিক দিয়ে বেশ ভাল। তিনি বলেন, যেসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের আকার বড়, ফ্লোটিং শেয়ার বেশি সেসব কোম্পানির শেয়ারের দামে বড় উত্থান-পতন হয় না। কারসাজি করা কঠিন হয়। তাই এসব কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা তুলনামূলক নিরাপদ।
×