ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মশ্রী ও পদ্মভূষণ প্রাপ্ত কণ্ঠশিল্পী এসপি বালা আর নেই

প্রকাশিত: ০০:৩৮, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

পদ্মশ্রী ও পদ্মভূষণ প্রাপ্ত কণ্ঠশিল্পী এসপি বালা আর নেই

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ‘পেহলা পেহলা পেয়ার’, ‘দিল দিওয়ানা’, ‘দেখা হ্যায় পেহলি বার’- ভাষার সীমানা ছাড়িয়ে তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়া এ রকম বহু গানে কণ্ঠ দেয়া ভারতীয় কিংবদন্তি শিল্পী এসপি বালাসুব্রামানিয়াম আর নেই। করোনাভাইরাস ধরা পড়ার পর দেড় মাসের বেশি সময় চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে শুক্রবার শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই কণ্ঠশিল্পী। পাঁচ দশকের সঙ্গীত জীবনে ৪০ হাজারের বেশি গানে কণ্ঠ দেয়া বালাসুব্রামানিয়াম ‘এসপি বালা’ নামেই সমধিক পরিচিত ছিলেন। প্রিয় এই শিল্পীর মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোক প্রকাশ করছেন ভারতীয়রা। দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রে গান গাওয়ার পাশাপাশি একের পর এক জনপ্রিয় হিন্দি গান উপহার দেয়া এসপি বালার ভক্ত-অনুরাগীদের শোকে ভাসছে টুইটার। অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না গুণী এই শিল্পীর এভাবে চলে যাওয়া। জীবদ্দশাতেও অসংখ্য ভক্তের ভালবাসায় সিক্ত হয়েছেন এসপি বালা। বিবিসি লিখেছে, এসপিবি যখন খ্যাতির চূড়ায় তখন তার ভক্তদের রক্তে লেখা চিঠিও পেয়েছেন এই শিল্পী। তেলেগু পরিবারে জন্ম নেয়া এসপিবি তার প্লেব্যাক ক্যারিয়ার শুরু করেন ১৯৬৬ সালে একটি তেলেগু ছবিতে গান গেয়ে। এরপর দীর্ঘ এই সঙ্গীত জীবনে হিন্দি, তামিল, তেলেগু, মালইয়ালামসহ ভারতের ১৬টি ভাষায় ৪০ হাজারেরও বেশি গান করেছেন তিনি। তার স্মরণে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক রেকর্ডিং স্টুডিও থেকে আরেক রেকর্ডিং স্টুডিওতে যেন উড়ে যেতেন এসপি বালাসুব্রামানিয়াম। আর এভাবে টানা দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে একদিনেই তিনটি গান রেকর্ড করার দৃষ্টান্ত গড়েছেন এই শিল্পী। কন্নড় ভাষায় (কর্নাটকের ভাষা) সুরকার উপেন্দ্র কুমারের জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ২১টি গান রেকর্ড করে ১৯৮১ সালে গিনেজ বুকে নাম তোলেন এই ভারতীয় শিল্পী। বলিউডে কাজের সুযোগ মিললে উড়োজাহাজে করে মুম্বাই এসে হিন্দি গানের রেকর্ড করে সন্ধ্যায় চেন্নাই ফিরতেন তিনি। ভারতীয় সঙ্গীত জগতে তার অবদানকে সম্মান জানিয়ে বালাসুব্রামানিয়ামকে ২০০১ সালে পদ্মশ্রী এবং ২০১১ সালে পদ্মভূষণ সম্মাননা দেয় ভারত সরকার। ফিল্মফেয়ার থেকে ছয়বার সেরা গায়ক পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৮১ সালে মুক্তি পাওয়া রতি অগ্নিহোত্রি ও কমল হাসান জুটির ‘এক দুজে কে লিয়ে’ সিনেমার জনপ্রিয় ‘হাম বনে তুমে বনে’, ‘তেরে মেরে বিচ মে’, ‘মেরে জীওয়ান সাথী’ গানগুলোতে লতা মুঙ্গেশকর ও অনুরাধা পাড়োয়ালের সহশিল্পী ছিলেন এসপি বালাসুব্রামানিয়াম। অসুস্থতার কথা জেনে মৃত্যুর একদিন আগে বন্ধু এসপি বালাকে দেখতে চেন্নাইয়ের এমজিএম হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন রাজনীতিক ও অভিনয়শিল্পী কমল হাসান। মৃত্যু সংবাদে শোক জানিয়ে এক টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘আমি ভাগ্যবান, এসপি বালাসুব্রামানিয়ামের কণ্ঠের ছায়া হতে পেরেছিলাম অনেক দিন। তার খ্যাতি আগামী সাত প্রজন্মেও বেঁচে থাকবে।’
×