ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সীমাহীন দুর্ভোগ

উত্তরাঞ্চলে অকালবন্যা, পানিবন্দী কয়েক লাখ মানুষ

প্রকাশিত: ২২:০৮, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

উত্তরাঞ্চলে অকালবন্যা, পানিবন্দী কয়েক লাখ মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মৌসুমিবায়ু অধিক সক্রিয় থাকায় টানা এক সপ্তাহ দেশের বিভিন্নস্থানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। একই সঙ্গে উজান থেকেও প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টির পানি নামছে। দুইয়ের মিলিত প্রভাবে দেশের উত্তরাঞ্চলে অকালে বারবার বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে। শরতে যখন প্রকৃতি সবুজে ঢাকছে, মাঠ সবুজ ফসলে ঢাকা, ঠিক সেই সময়েই আচমকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে উত্তরের বিভিন্ন জেলার জনপদ। নদীর চরাঞ্চল, নিম্নাঞ্চলে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ছে। কোথাও কোথাও বৃষ্টিপাতে এক দশকের রেকর্ড ভেঙ্গেছে। তবে আবহাওয়া অফিস জানায়, আজ শনিবার থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে আসতে পারে। তারা জানায়, সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে এক সপ্তাহ ধরেই উপকূলীয় এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টির হচ্ছে। একই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং দেশের উত্তরাঞ্চলে হঠাৎই মৌসুমিবায়ু সক্রিয় হয়ে পড়ছে। দুইয়ের মিলিত প্রভাবে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ভারি বৃষ্টিপাত চলছে উত্তরের বিভিন্ন জেলায়। একই সঙ্গে উজানে ভারি বৃষ্টিপাতও অব্যাহত রয়েছে। ফলে বেড়ে গেছে নদ- নদীর পানি। ইতোমধ্যে ৪টি প্রধান নদীর পানি অকালে এসে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে; যা আবহাওয়া ও প্রকৃতিতে এক অস্বাভাবিক বিষয় হয়ে দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমিবায়ু সক্রিয় রয়েছে। সৃষ্টি হচ্ছে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার। ফলে উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়োহাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় চার সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের সাগরে বিচরণ না করতেও বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। এদিকে শুক্রবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে- অব্যাহত বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে দেশের অধিকাংশ নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এর মধ্যে চার নদীর পানি ইতোমধ্যে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। নদীগুলোর মধ্যে রয়েছে ধরলা, যমুনা, গুড় ও জাদুকাটা নদী। এর মধ্যে ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রাম পয়েন্টে ৪৬ মিলিমিটার, যমুনার পানি সারিয়াকান্দি পয়েন্টে ৪ মিলিমিটার, গুড়ের পানি সিংড়া পয়েন্টে ৫২ মিলিমিটার এবং জাদুকাটা নদীর পানি লরেরগড় পয়েন্টে ১৪৫ মিলিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণাধীন পানি স্টেশনগুলোর মধ্যে ৬৬টি স্টেশনে পানি বাড়ছে, ৩২টির কমছে এবং ৩টির অপরিবর্তিত রয়েছে। তারা জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে, অপরদিকে যমুনা নদীর পানি বাড়তে পারে। পাশাপাশি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উজান মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি বাড়ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা এই বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা তা অব্যাহত থাকতে পারে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশের লরেরগড়ে ২০০ মিলিমিটার, পঞ্চগড়ে ৭৭, নারায়ণহাটে ৬২, দুর্গাপুরে ১১৬, পাঁচপুকুরিয়ায় ৬৯, চট্টগ্রামে ৫৯, জাফলংয়ে ৯৪, মহেশখোরায় ৬৮, রাঙ্গামাটিতে ৫৮, ডালিয়ায় ৮৫, লালাখালে ৬৫ ও নাকুয়াগাঁওয়ে ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। একই সময়ে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশের উজানে। অর্থাৎ ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৪২৪, শিলংয়ে ২৪৫ ও পাসিঘাটে ৭২ মিলিমিটার। দেশের ভেতরে এবং উজানে অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে এই অকালে নদীগুলোর পানি আবারও বাড়ছে। দেখা দিয়েছে বন্যা। কুড়িগ্রাম ॥ ভারি বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের ধরলা ও তিস্তাসহ সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ধরলা নদীর পানি শুক্রবার সকালে বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানিও বিপদসীমার কাছাকাছি রয়েছে। দ্রুতগতিতে পানি বাড়ার ফলে পঞ্চম দফা বন্যায় কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট, ফুলবাড়ী ও উলিপুর উপজেলার শতাধিক চর নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ৫০ হাজার মানুষ। ডুবে গেছে গ্রামীণ সড়ক। নৌকা ও কলাগাছের ভেলা ছাড়া যাতায়াতের কোন মাধ্যম নেই। প্রায় ৫ হাজার হেক্টর আমন ও সবজিক্ষেত নিমজ্জিত। ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় অনেকেই গবাদিপশু নিয়ে বাঁধ ও রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন। দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট। ধরলা অববাহিকার কয়েকটি গ্রামে প্রবল ¯্রােতে ভেসে গেছে শতাধিক ঘরবাড়ি। পানি বাড়ার ফলে বিভিন্ন এলাকায় নদ-নদীর ভাঙ্গন তীব্র রূপ নিয়েছে। ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে বসতভিটা, স্কুল, রাস্তা ও বাঁধ। ঠাকুরগাঁও ॥ গত ১০ দিনের অবিরাম বর্ষণে ঠাকুরগাঁওসহ আশপাশের মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। শুক্রবার ছুটির দিনে সকাল ও দুপুরে গ্রামেগঞ্জে এমনকি শহরের পথেঘাটে জনসমাগম ছিল খুবই কম। এদিকে শহরে ডুবেছে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর, ট্রেজারি অফিসে যাওয়ার জনবহুল সড়কসহ অন্যান্য সড়ক, বড়মাঠের সবজি বাজার, নিম্ন এলাকার বাড়িঘর। এছাড়া দিনমজুরগণ কাজে যেতে না পারায় পরিবার-পরিজন নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে। স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, গত তিন দিনে ১৪৫মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। লাগাতার বৃষ্টিতে ডুবে গেছে নিচু এলাকার আমন ধানক্ষেত, ক্ষতি হচ্ছে শীতের আগাম সবজির এবং গোড়ায় পানি জমে যাওয়ায় নরম মাটিতে দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে মাটিতে শুয়ে পড়ছে আখ। এতে কৃষকের ক্ষতি ছাড়াও জেলার একমাত্র ভারি শিল্প ঠাকুরগাঁও সুগার মিলের উৎপাদন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া অবিরাম বর্ষণে অধিকাংশ কাঁচা-পাকা সড়ক ভেঙ্গে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও-দিনাজপুর মহাসড়কের অসংখ্যস্থানের ঢালাই উঠে গিয়ে গভীর গর্ত তৈরি হওয়ায় তা যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এসব গর্তের কারণে এরই মাঝে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং অসংখ্য মোটরযানের যান্ত্রিক ক্ষতি হয়েছে। অপরদিকে লাগাতার বৃষ্টির কারণে শীতের আমেজ বিরাজ করতে শুরু করেছে। ফলে অনেকে আর ফ্যান চালাচ্ছেন না। বিশেষ করে শেষরাতে শীতের আমেজ বেশি হওয়ায় কাঁথা-কম্বল না মুড়িয়ে ঘুমাতে পারছেন না। বয়োজ্যেষ্ঠরা বলছেন, গত ১০ বছরের মধ্যে বাংলা আশ্বিন মাসের এই সময় এমন বৃষ্টির দাপট দেখেননি। তারা এবারের মৌসুমে এলাকায় শীতের দাপট বাড়তে পারে বলে ধারণা ব্যক্ত করেছেন। লালমনিরহাট ॥ শুক্রবার বিকেল ৩ টায় তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৩০ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ১৩ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি ধীরে ধীরে কমছে। তবে এখনও জলমগ্ন হাজার হাজার পরিবার। তিস্তা ও ধরলাপারের প্রায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে আছে। এসব ঘরবন্দী পরিবার বিপর্যয়ের মুখে আছে বৃষ্টিপাতের কারণে। সারাদিন চলছে অবিরাম বৃষ্টি। বন্যা কবলিত গ্রামগুলোতে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। পর পর ৫ দফা বন্যার কবলে পড়ে তিস্তা ও ধরলাপারের মানুষ। একটি বন্যার বিপর্যয় মোকাবেলা করতে না করেতে পুনরায় বন্যার কবলে পড়তে হয়েছে। ফলে বন্যার পূর্ব প্রস্তুতির খাদ্য চেন ভেঙ্গে গেছে। পড়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্যাভাবে। সরকারীভাবে খাদ্য সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে নদীপারের জনপ্রতিনিধিগণ ও সাধারণ মানুষ জানান। ভারতের উজানী ঢলে ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে এই পানি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান। আগামী শনিবার পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অ) জাহিদ ফারুক তিস্তা নদীপারের ভাঙ্গন এলাকা পরির্দশন করবেন। নীলফামারী ॥ উজানের পানিপ্রবাহ কমার কারণে তিস্তার পানি কমছে। পানি কমলেও ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চরখড়িবাড়ি মৌজা গ্রাম রক্ষায় নির্মিত স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বালুর বাঁধটি ভাঙ্গনের মুখে পড়ায় ওই এলাকায় ১১শ’ পরিবার চরম আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে গ্রাম থেকে শহর জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে। পথঘাট সব যেন কাদা-পানিতে সয়লাব। ভারি বৃষ্টির কারণে জেলা থেকে শহর পর্যন্ত অধিকাংশ এলাকায় তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। নিচু এলাকার ঘরবাড়িতেও উঠেছে বৃষ্টির পানি। স্থানীয়রা বলছেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা কাজ না করায় দুর্গন্ধযুক্ত নোংরা ও ময়লা আবর্জনার পানি সড়কে উঠে যায়। অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, খাল ভরাট ও স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। পাশাপাশি নিমাঞ্চল এলাকার ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। জলঢাকা উপজেলার দ্বিতীয় শ্রেণীর পৌর এলাকাটির অবস্থা বড়ই করুণ। জলাবদ্ধতা চরম আকার ধারণ করেছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পৌরবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে। জেলার সৈয়দপুর পৌরসভা প্রথম শ্রেণীর হলেও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পৌরবাসী। বিশেষ করে জলাবদ্ধতা সমস্যা বর্তমানে পৌরবাসীর প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আকস্মিক বর্ষণে পৌরসভার সব মহল্লা ছাড়াও প্রধান সড়কেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে কোথাও কোথাও হাঁটুপানি জমেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ- পৌরসভা এলাকায় যে যার মতো ঘরবাড়ি, দোকানপাট, অফিস নির্মাণ করায় খালগুলো ভরাট হয়ে গেছে। এ ছাড়া রেলের ব্যাকবন বিশাল ড্রেনগুলো প্রভাবশালীরা দখল করে মার্কেট নির্মাণ করায় পানির স্বাভাবিক গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় জলাবদ্ধতা বেড়েছে। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাটেও পানি জমে যাওয়ায় রান্নাবান্না করতে অসুবিধা হচ্ছে। ডিমলা উপজেলায় শহরের অবস্থা নাজুক। সেখানে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় প্রধান সড়কটি হাঁটুসমান পানিতে তলিয়েছে। নীলফামারী জেলা শহরের বড়বাজার, মাছুয়াপাড়া, সওদাগড়পাড়া, বাবুপাড়া, নিউবাবুপাড়া, বাড়ইপাড়া, আনছার ক্যাম্প, মাস্টারপাড়ায় চরম জলবদ্ধতা দেখা যায়। জনপ্রতিনিধিরা এ ব্যাপারে বলছেন, কিছু মানুষ অপরিকল্পিতভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণ করেছে। এ ছাড়া বাড়ির ময়লা-আবর্জনা ড্রেনে ফেলছেন। প্রতিদিন আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা ড্রেন পরিষ্কার করছেন। তারপরও ড্রেনের ময়লা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হচ্ছে।
×