ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নূরসহ ধর্ষকদের বিচার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য প্রার্থনা ঢাবি ছাত্রীর

প্রকাশিত: ২১:৩৫, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

নূরসহ ধর্ষকদের বিচার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য প্রার্থনা ঢাবি ছাত্রীর

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ডাকসুর আলোচিত সদ্য সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ দেয়া ঢাবির সেই ছাত্রী এবার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ছবি বা ভিডিও প্রকাশ না করার শর্তে তিনি লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, আমি আপনার রাষ্ট্রের একজন নির্যাতিতা সাধারণ ও অসহায় নাগরিক হিসেবে আপনার কাছে আমার ন্যায়বিচার প্রার্থনা করছি। আর যদি নির্যাতিত হবার পর লাশ না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের কাছে মনে হয় যে ঘটনা সত্য না, তাহলে হয়ত আমার মৃত্যুই এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার পাইয়ে দেবে। ভিপি নূর যে নীলক্ষেত যায়নি সেটা সে প্রমাণ করুক, তার তো অনেক ক্ষমতা, আমি তো ভুক্তভোগী, অসহায়। সে যে ভ-ামি করে সাধারণ মানুষের আস্থার জায়গা অর্জন করেছে তা তাকে বিচার না দিলে আমি বুঝতে পারতাম না! যে লোকের কাছে অনেক আগেই বিচার দিলাম, সেই এখন সেটাকে সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মামলা বলে আন্দোলন করতেছে! আমার লজ্জা হচ্ছে যে এ রকম একজন মানুষকে আমি ভিপি পদে ভোট দিয়েছিলাম! তিনি বলেন, মেসেঞ্জার গ্রুপে যে আলোচনা হয়েছিল সেগুলো ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি পত্রিকায় প্রচারিত হয়েছে। সেই গ্রুপে যারা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন তারা যদি তাদের সংগঠনকে বাঁচাতে বা কোন প্রকার রাজনৈতিক বা ব্যক্তি স্বার্থে বা কোন চাপে অস্বীকার বা প্রত্যাহার করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আমি আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব। কুৎসা রটনাকারীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, তারা এটা প্রমাণ করতে না পারলে আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব। আমি কোন প্রকার ব্যক্তি, সংগঠন কিংবা রাজনৈতিক দল কর্তৃক প্রভাবিত নই। দেশের জনগণকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা অন্ধভাবে নয়, সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিবেচনা করুন। একটি অসহায় মেয়ে বার বার তার ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য ঘুরেও না পেয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছে। আবার সেই মেয়েকেই লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। মানসিকভাবে ভেঙ্গে ফেলতে বিভিন্ন অপবাদ দিচ্ছে। তবুও এই লাঞ্ছনার বিনিময়ে হলেও আমি চাই সুষ্ঠু ও সঠিক বিচার হোক যেন এ রকম জনপ্রিয় মুখোশধারীরা যাতে আমার মতো আপনার মেয়ে, বোন ও শুভাকাক্সক্ষীকে লাঞ্ছিত বা ধর্ষিত করতে না পারে। আর যদি আপনারা মনে করেন আমি মারা যাওয়ার পর বিচার করবেন তাহলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আপনিই বলুন, আমি তাহলে সেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। অনেকেই বলেছেন যে, ধর্ষক নয়, ধর্ষিতার ছবি-পরিচয় প্রকাশ করুন। আসামিরা জনপ্রিয় দেখে কি সত্যটা মিথ্যা হয়ে যাবে? জনপ্রিয়রা কি অন্যায় করে না? ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে জনপ্রিয়তার আড়ালেই মানুষ সবচেয়ে বেশি নোংরামি করে। আর বাংলাদেশে এখনও সেই সংস্কৃতি গড়ে উঠেনি যে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া একটি মেয়ে তার সর্বস্ব বিসর্জন দিয়ে মিথ্যা মামলা সাজাবে। প্রসঙ্গত, গত ২১ সেপ্টেম্বর ঢাবির এক ছাত্রী বাদী হয়ে নুরুল হক নূরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ এনে রাজধানীর লালবাগ থানায় মামলা করেন। অন্যরা হলেন, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাময়িক অব্যাহতিপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান, মোঃ সাইফুল ইসলাম, নাজমুল হুদা ও আবদুল্লাহ হিল বাকি।
×