ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কালিহাতীর বাতিঘর

প্রকাশিত: ২০:৩৮, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

কালিহাতীর বাতিঘর

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ২৫ সেপ্টেম্বর ॥ বিশ্বব্যাপীই আজ মুদ্রিত বই গুরুতর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। প্রযুক্তির অভাবনীয় অগ্রযাত্রার আগ্রাসী প্রভাব তো আছেই, তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জঙ্গীবাদ ও মাদকসহ সাম্প্রতিক আরও নানা নেতিবাচক অনুষঙ্গ। ঠিক এরকম একটা সময়েই ছাত্র-ছাত্রীরা এখন স্মার্টফোনে সময় না কাটিয়ে মনোনিবেশ করছে কালিহাতী সাধারণ পাঠাগারের বইয়ের রাজ্যে। জানা যায়, বিগত ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত পাঠাগারটি কালিহাতীর বাতিঘর। পাঠাগারকে কেন্দ্র করেই অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবছর অমর একুশে বইমেলা, বৈশাখী মেলা, রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী। কালিহাতীর সকল সাহিত্য সাংস্কৃতিক কর্মকা- এ পাঠাগারকে ঘিরেই অনুষ্ঠিত হয়। পাঠাগারটি দৃষ্টিনন্দনরূপে সজ্জিত করা হয়েছে সম্প্রতি। পাঠাগারে ঢুকলেই মন জুড়িয়ে যায়। পাঠকরা যে শুধু পড়ার জন্য যাবে এমনও না। সেখানকার পরিবেশ সেটাও মনোমুগ্ধকর। পাঠক সহজেই বই খুলে তার ঘ্রাণে মন ভরিয়ে দিতে পারে। ঠিক যেমন চন্দনের বনে থাকলে গায়ে সুবাস এসে লাগে এমন একটা অনুভূতি। পাঠাগারে পাঠকরা বেশ আসছে, তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে। পাঠাগারে নতুন করে ‘অঙ্কুর’ নামে শিশুবিভাগ খোলা হয়েছে। এটা যেন শিশুদের আনন্দের স্বর্গরাজ্য। শিশুরা এখানে পড়তে পারে, অঁাকতে পারে, এমনকি খেলতেও পারে। ১০ হাজারের ওপরে বইয়ের সম্ভার নিয়ে আছে ‘আলোর-ভুবন’। এখানে শুধু বইয়ের সংখ্যাই নয়, বইয়ের মানও যথেষ্ট উন্নত। আছে ওয়ার্ল্ড এনসাইক্লোপিডিয়া, বাংলাপিডিয়া, শিশু বিশ্বকোষ, বিজ্ঞানকোষ, রবীন্দ্র-নজরুল রচনা সমগ্রসহ জ্ঞান-বিজ্ঞানের সকল শাখার বইয়ের সমাহার। সাহিত্য আড্ডার জন্য ‘মুক্ত-চিন্তা’ নামে রাখা আছে একটি কক্ষ। তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করার জন্য চালু হচ্ছে ‘ক্যাফে জাগরণ’ নামে ক্যাফে। এখান থেকে অর্ডার দিয়ে চা-কফি খেতে খেতে বই পড়া যাবে। খুব শীঘ্রই চালু হবে ‘বায়োস্কোপ’ নামের হোম থিয়েটার। পাঠাগার খোলা থাকে প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। এই ব্যতিক্রম দৃষ্টিনন্দন সৌকর্যমন্ডিত কাজের রূপকার পাঠাগারের বিদায়ী সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম আরা নিপা। এ কাজে সহযোগিতা করছে উপজেলা পরিষদ। পাঠাগারের নবাগত সভপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা তানজিন অন্তরা যত দ্রুত সম্ভব পাঠাগারের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার আশা ব্যক্ত করেছেন। পাঠাগারের সম্পাদক জহুরুল হক বুলবুল ও কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মজনু মিয়ার নিরলস প্রচেষ্টায় এ নান্দনিক কাজ সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
×