ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাফুফে নির্বাচন-২০২০

সালাউদ্দিনের চেয়ে যোগ্য মানিক!

প্রকাশিত: ২৩:২৪, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

সালাউদ্দিনের চেয়ে যোগ্য মানিক!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হোটেলে আপ্যায়ন করে নয় বরং যোগ্যতা দিয়েই নির্বাচনে জয়ী হওয়ার লক্ষ্য শফিকুল ইসলাম মানিকের। প্রচার-প্রচারণার দিক থেকে বাফুফে সভাপতি পদে কাজী মোঃ সালাউদ্দিনের চেয়ে এগিয়ে আছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার কোন ইচ্ছে নেই বলেও জানিয়েছেন। তিন মেয়াদে নিয়মিত লীগসহ বয়সভিত্তিক খেলাগুলো নিয়মিত চালু রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন সালাউদ্দিন। তাই ফুটবলের উন্নয়নে নতুন কাউকে সমর্থন দেবেন কাউন্সিলররা। এমনটাই আশা তার। ৩ অক্টোবরের নির্বাচন সামনে রেখে নিয়মিত ঢাকার ৫ তারকা হোটেলগুলোতে খাওয়া-দাওয়া আর প্রার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ে ব্যস্ত সময় বর্তমান সভাপতি সালাউদ্দিনের সম্মিলিত পরিষদ। সে তুলনায় ‘একলা চলো’ নীতিতে হাঁটছেন সভাপতি পদের আরেক প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মানিক। খুব একটা প্রচার-প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে না এই সাবেক তারকা ফুটবলারকে। তবে কি কারও চাপে নির্বাচনের আগে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার ও কোচ মানিক? বিষয়টি একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছেন মানিক। কারও চাপে সরে যাওয়ার কোন ইচ্ছেই নেই তার। বরং প্রচারণায় সালাউদ্দিনের চেয়ে তিনি বেশি সক্রিয় বলে দাবি করেছেন। মানিক বলছেন, ‘গত ১২ বছর তাকে দেখে আসছি যেখানে ধারাবাহিকভাবে সাধারণ সভা হয়নি, সেখানে নির্বাচনের আগে ফাইভ স্টার হোটেলে কাউন্সিরদের ডেকে এভাবে আয়োজন করা হচ্ছে। অবশ্যই কাউন্সিলররা এখন বেশ সচেতন। তারা এই ব্যাপারটা বুঝবে যে এটা নির্বাচনী স্টান্ট। প্রচার-প্রচারণার বিশেষ প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। আর দ্বিতীয়টা হচ্ছে যাদের কাছে যোগাযোগ করা দরকার আমার জানামতে আমি তাদের সঙ্গে বেশি যোগাযোগ রাখছি। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী যিনি আছেন তার থেকে এগিয়ে আছি আমি এইদিক থেকে। আমি যে পিছিয়ে আছি সেটা বলব না। ফুটবল আমি ভালবাসি, সেই জায়গাটায় যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছি। এখানে বসে যাওয়ার তো কোন অবকাশ নেই।’ তিন মেয়াদে বাফুফের সভাপতির চেয়ারে থেকে নিয়মিত লীগ আয়োজনে ব্যর্থ হয়েছেন সালাউদ্দিন। সে সঙ্গে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় বিভাগ ও পাইওনিয়ার লীগ নিয়মিত হয়নি। ফুটবল মাঠে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন বলেও সালাউদ্দিনের সমালোচনা করেছেন মানিক। তাই এ পদে নতুন কারোর আসা উচিত বলেই মত তার। মানিক আরও বলেন, ‘প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ডিভিশন সময়মতো হয়নি। স্কুল লীগও সময়মতো হয়নি, এগুলো তো মিথ্যা কথা না। আমি মনে করি কাউন্সিলররা তাদের এই কথা কোনভাবেই গ্রহণ করবেন না। আমার বিশ্বাস তারা কাগজে কলমে আছে, চাকচিক্যে আছে, মাঠে নাই।’ মিথ্যাচারে কান না দিয়ে কাউন্সিলরদের সত্যের পথে থাকারও পরামর্শ দেন মানিক। * দায়িত্বের অভাবেই কি নষ্ট হচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ॥ নিয়মিত প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বিভাগ ফুটবল লীগ আয়োজন করতে না পারলেও, আবারও প্রতিশ্রুতির ডালা সাজিয়ে বসেছে সালাউদ্দিন-সালামের সম্মিলিত পরিষদ। তাদের আশ্বাস নির্বাচিত হলে ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে না। তবে ক্লাব সংশ্লিষ্টরা প্রতিশ্রুতি নয়, চায় তার বাস্তবায়ন। একইসঙ্গে মহানগর লীগ নিয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ চান সালাউদ্দিন প্যানেল। সিদ্দিক বাজার ঢাকা জুনিয়র এসসির ডেলিগেট আহাদ বাপ্পী বলেন, ‘যারা এই লেভেলের ফুটবল খেলি তারা সালাউদ্দিন ভাইকে পাই না। বছরে দুবার একটা মিটিং হয় না। আমরা যদি সালাউদ্দিন ভাইয়ের সঙ্গে ৩/৪ মাস পরপর মিটিং করতে পারতাম, আমাদের ক্লাবগুলোর দুঃখ কষ্ট বলতে পারতাম তাহলে ওনার কাছ থেকে অনেককিছু আদায় করা সম্ভন হতো’। নির্বাচনী হাওয়ায় ডেলিগেটদের কতটা টলাতে পেরেছেন প্রার্থীরা, সেটা জানা যাবে ভোটের পর। তবে কৌশলে এবার বেশ নমনীয় বিগ শটরা। তার কারণটাও স্পষ্টÑ বিগত দিনে দেয়া কথার খেলাপ হয়েছে বেশ। তাই দোষ স্বীকার না করে তো আর নতুন প্রতিশ্রুতির টোপ গাঁথা যায় না। সেই পথেই সালাউদ্দিন সালাম পরিষদ। সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রার্থী আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘আমি ফেডারেশনের এই পজিশনে থেকে যে ৫টি লীগ হয়েছে সে ব্যাপারে একদমই খুশি না এবং এটার দায়-দায়িত্ব অবশ্যই আমার ঘাড়ে আসবে যেহেতু এটা আমি করতে পারিনি। ভবিষ্যতে এটা নিয়মিত হবে এবং নিয়মিত চলবে এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি।’ বর্তমান সভাপতির গত ১২ বছরে মাত্র পাঁচটি প্রথম বিভাগ লীগ করতে পেরেছে মহানগর কমিটি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগের অবস্থা আরও সঙ্গীন। শত প্রতিবন্ধকতা স্বত্ত্বেও ক্লাবগুলো চায় নিয়মিত মাঠে খেলা রাখতে। এ জন্য তাদের চাওয়া সবকিছুই ঢেলে সাজানো হোক। সরাসরি তদারকি করুন সালাউদ্দিন নিজেই। শুধু প্রতিশ্রুতি নয়। হোক তার বাস্তবায়ন। নির্বাচন ঘিরে নয়, ছোট এই ক্লাবগুলো নিয়ে আলোচনা হোক প্রতিনিয়তই। কারণ এখানেই যে ফুটবলের আঁতুড়ঘর।
×