ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নিবন্ধন ছাড়া বেসরকারী হাসপাতাল চলতে দেয়া হবে না ॥ তাপস

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

নিবন্ধন ছাড়া বেসরকারী হাসপাতাল চলতে দেয়া হবে না ॥ তাপস

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ঢাকা দক্ষিণের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, নিবন্ধন ছাড়া রাজধানীতে কোন বেসরকারী হাসপাতাল চলতে দেয়া হবে না। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সিটি কর্পোরেশন এলাকাসহ নগরবাসীর জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় সারাদেশে চিকিৎসা বর্জ্যরে নিরাপদ ব্যবস্থাপনা ও এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় বিষয়ে পর্যালোচনার জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় মেয়র এসব কথা জানান। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। মেয়র তাপস বলেন, স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশন থেকে নিবন্ধন নেয়ার বিধান থাকলেও বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো তা নেয় না। এখন থেকে বেসরকারী হাসপাতাল চালাতে গেলে সিটি কর্পোরেশনের নিবন্ধন থাকতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজিয়েছি। দিনেরবেলা উন্মুক্তস্থানে কোথাও বর্জ্য রাখার সুযোগ রাখিনি। সন্ধ্যার পর থেকে আমরা বর্জ্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম শুরু করেছি। ঢাকাবাসী এরই মধ্যে সুফল পেতে শুরু করেছে। করোনা মহামারীর মধ্যে মাস্ক, হাতমোজা চিকিৎসা সামগ্রী হলেও এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা এখন সাধারণ বর্জ্যে পরিণত হয়েছে। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০০৮ সালে চিকিৎসা বর্জ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য একটি বিধিমালা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু আজ পর্যন্ত সেটার বাস্তব কোন পরিপালন আমরা লক্ষ্য করিনি। আমাদের আইন, বিধিমালা, প্রবিধান কম নেই, সবই আছে। অন্যান্য উন্নত দেশে যা আছে আমাদেরও তাই আছে। সেখানে একটি বড় ফারাক আমরা লক্ষ্য করি তা হলো, সেটা পরিপালন। সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালের মূল অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে সেটা দেয়া হয়। আজকের কার্যপত্রেই আছে, মেডিক্যাল প্র্যাকটিস এ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক, ল্যাবরেটরি অর্ডিন্যান্স- ১৯৮২ এ আবেদনের সঙ্গে আবশ্যিক ডকুমেন্টের তালিকায় হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিভিন্ন তথ্যের কথা বলা হয়েছে। আমি অত্যন্ত মর্মাহত, এখানে অবকাঠামো বিষয়ে কোন নির্দেশনা নেই। জনবলের বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে বলা আছে, সেই হাসপাতাল-ক্লিনিকের বর্জ্যগুলো কিভাবে ব্যবস্থাপনা করবে, তাদের অবকাঠামো কি থাকবে, কি নিশ্চিত করতে হবে- এ বিষয়ে এখানে কিছু বলা হয়নি। তাপস বলেন, স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯ এর ১১২ ধারায় বলা হয়েছে, এ আইন কার্যকর হওয়ার তারিখে বা তৎপর কর্পোরেশনের এলাকায় কর্পোরেশনের নিবন্ধন ব্যতীত কোন প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট পরিচালনা করা যাবে না। সেক্ষেত্রে আমরা এ আইনটি বাস্তবায়ন করতে চাই। এর আগে এখন পর্যন্ত জানা মতে, কোন বেসরকারী হাসপাতাল, ক্লিনিক আমাদের নিবন্ধন নেয়নি। আমরা এরই মধ্যে একটা বিধিমালা-প্রবিধান করব। সুনির্দিষ্টভাবে চিকিৎসা বর্জ্য কিভাবে ব্যবস্থাপনা করতে হবে, কি কি অবকাঠামো তাতে থাকতে হবে-১০, ১০০ কিংবা ৫০০ শয্যা হোকÑ কি কি তাদের মানতে হবে, বিষয়গুলো তুলে ধরে তাদের নিবন্ধনের আওতায় আনতে চাই। চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ প্রত্যেক বিষয় উল্লেখ করে নিবন্ধনের আওতায় এনে তা বাস্তবায়নে বাধ্য করব। আমাদের নিবন্ধন ছাড়া কোন বেসরকারী হাসপাতাল, ক্লিনিক চলতে দেয়া হবে না। আমরা ঢাকা নগরীকে এখন বলতে পারি যে, মশামুক্ত নগরী উপহার দিতে পেরেছি। সেক্ষেত্রে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগ থেকে আমরা ঢাকাবাসীকে মুক্ত রাখতে পেরেছি। করোনা মহামারীর মধ্যে এটা বড় বিষয় ছিল। তিনি আরও বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১০টি অঞ্চলের জলাশয় ও খাল নিয়ে একটি প্রকল্প প্রণয়ন করেছি। যেটা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হলে আগামীতে ঢাকা নগরীকে জলাবদ্ধতামুক্ত রাখতে পারব বলে আশা রাখি।
×