ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযোদ্ধা ও কমিউনিস্ট নেতা হায়দার আনোয়ার খান জুনো লাইফ সাপোর্টে

প্রকাশিত: ১৩:৫৯, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

মুক্তিযোদ্ধা ও কমিউনিস্ট নেতা হায়দার আনোয়ার খান জুনো লাইফ সাপোর্টে

অনলাইন ডেস্ক ॥ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কমিউনিস্ট নেতা হায়দার আনোয়ার খান জুনোকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়ছে । আজ বৃহস্পতিবার সকালে জুনোর মেয়ে অনন্যা লাবণী এক ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, ভোর ৪টার দিকে তার বাবার হঠাৎ কাশি শুরু হয় এবং ‘অক্সিজেন স্যাচুরেশন’ কমতে থাকে। পরে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে লাইফ সাপোর্টে দেন। নিউমোনিয়ার মধ্যে হার্ট আ্যটাক হওয়ায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে ৭৬ বছর বয়সী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কমিউনিস্ট নেতা হায়দার আনোয়ার খান জুনোকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জনা গেছে গত কয়েকদিন তার অবস্থা ‘তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল’ থাকলেও বৃহস্পতিবার ভোরে পরিস্থিতির অবনতি হয় ।কমিউনিস্ট নেতা হায়দার আকবর খান রণোর ছোট ভাই জুনোর জন্ম ১৯৪৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর কলকাতায়। তাদের পৈতৃক নিবাস নড়াইলের বরাশুলা গ্রামে। বাবা হাতেম আলী খান ছিলেন একজন প্রকৌশলী। নানা প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ সৈয়দ নওশের আলী।স্কুল জীবনেই কমিউনিস্ট রাজনীতির দীক্ষা নিয়েছিলেন জুনো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় মাস্টার্স করলেও রাজনীতিকেই তিনি পেশা হিসেবে নেন। পাকিস্তান আমলে ১৯৬২ সালে শিক্ষা আন্দোলনে যুক্ত হয়ে কারাবরণ করেন জুনো। তখন তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সক্রিয় কর্মী। তার ভাই রণো তখন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি। পরে জুনো ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ষাটের দশকে কমিউনিস্ট আন্দোলনে জড়িয়ে পড়া জুনো ছিলেন চীনপন্থি শিবিরে। ১৯৭০ সালে বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়ন গঠিত হলে তিনি এর সভাপতির দায়িত্ব নেন। স্বাধীনতার পর জুনো লেনিনবাদী কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৪ সালে তিনি ইউনাইডেট পিপলস পার্টির (ইউপিপির) সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক হন। ১৯৭৯ সালে ওয়ার্কার্স পার্টি গঠিত হলে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন তিনি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে গেরিলা হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন জুনো। পদার্থ বিজ্ঞানের ছাত্র জুনো তখন বোমা তৈরির কাজ করছিলেন। প্রয়াত আব্দুল মান্নান ভূইয়াদের সঙ্গে তিনি নরসিংদীর শিবপুরে প্রতিরোধ যুদ্ধেও ছিলেন। জুনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি প্রগতিশীল গণমুখী সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলতেও ভূমিকা রেখেছেন। গণ-সংস্কৃতি ফ্রন্টের সভাপতি ছিলেন তিনি। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ কিউবা সংহতি কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
×