ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বসে নেই যোগ্যজন স্বচ্ছ রংদী

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ বিদেশ ফেরত শ্রমিক

প্রকাশিত: ২১:০৭, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ বিদেশ ফেরত শ্রমিক

পরিবর্তন হলো জগতের স্বাভাবিক নিয়ম। সময়ের আবর্তনে জগৎ ও জগতের সকল সৃষ্টির পরিবর্তন ঘটছে। তেমনই করোনাভাইরাসের আবির্ভাব হলো এই পরিবর্তনের একটি অংশ যা সারা পৃথিবীর অর্থনৈতিক কাঠামোকে দুর্বল করে দিয়েছে। তন্মধ্যে উন্নত জীবনের আশায় যে সকল শ্রমিক বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিল, তাদের অবস্থা আরো শোচনীয়। তারা আজ এই সংকটের মুখোমুখি হয়ে চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়ে বিদেশ ফেরত শ্রমিকে পরিণত হয়েছে। যার প্রভাব বিদ্যমান তৃতীয় বিশে^র দেশ আমাদের এই সোনার দেশ বাংলাদেশের । স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের এই দেশে চাকরিকে বলা হয় ‘সোনার হরিণ’ যার নাগাল না পেয়ে বেকার জীবনযাপন করছে লাখো জনবল। তার উপর এই বিদেশ ফেরত শ্রেমিক এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা। প্রশ্ন হলো এই বিদেশ ফেরত শ্রমিক যার পাঠানো রেমিটেন্স ছিল সরকারি তহবিল গঠনের অন্যতম উৎস , যার পাঠানো অর্থে একটি পরিবারের অস্তিত্ব টিকে থাকত, তিনি কী আজ দেশের জন্য, পরিবারের জন্য বোঝা হয়ে থাকবে নাকি সুন্দর জীবন যাপনে সহযোগিতায় এগিয়ে আসবে সমাজ । করোনাভাইরাসের থাবায় এমনই সংকটের সম্মুখীন হয়ে স্থবির হয়ে আছে এ সকল বিদেশ ফেরত শ্রমিক। কিন্তু সময়ের পরিবর্তন আজ তাদের এই পরিস্থিতিতে উপনীত করেছে । তাই বলে কী জীবন থেমে থাকবে? না, জীবন থেমে থাকবে না পরিবর্তনের প্রবাহে তাদের জীবন পদ্ধতিও পরিবর্তিত হবে । ইতিমধ্যে এদের অনেকেই যারা নতুন ভাবে জীবন গড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পরিবারে আনন্দ ফিরে পেতে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। কেউ ক্ষেত খামারে , কেউবা দিন মজুর হিসেবে, কেউবা নিজস্ব কর্মদক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছেন। এমনই এক বিদেশ ফেরত ব্যক্তির কথা উল্লেখ করতে চাই। যিনি সেখানে তার রন্ধন শিল্পকে কাজে লাগিয়ে সেখানকার মানুষকে খাবার পরিবেশনের মাধ্যমে তৃপ্তি দিতেন। আজ তিনি এই দেশে বিদেশ ফেরত শ্রমিক। কিন্তু তিনি বসে থাকেন, অর্জিত শিল্পকে কাজে লাগিয়ে তিনি আজ নিজ বাড়িতেই স্বকর্মসংস্থান গড়ে তুলেছেন এবং নিয়মিত মানুষের বাড়িতে বাড়িতে অর্ডার অনুযায়ী খাবার সরবরাহ করছেন। তিনি এখন নিজ দেশেই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছেন। এভাবে অনেকেই অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে তাদের সাধ্য অনুযায়ী প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে এরা দেশের ও পরিবারের জন্য একেকজন যোদ্ধা। সময়ের পরিবর্তনে আমাদের এই বিদেশ ফেরত শ্রমিক যুদ্ধ থেকে আহত হয়ে ফিরেছে, আমাদের উচিত তাদেরকে যোদ্ধা হিসেবে যোগ্য সম্মান দেওয়া, সেবা-শুশ্রুষা দানের মাধ্যমে নতুন ভাবে দেশের কাজে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেয়া। কলমাকান্দা, নেত্রকোণা থেকে
×