ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সমালোচনার মুখে বিএনপি

স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ

প্রকাশিত: ২৩:৫৮, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০

স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে বিএনপি। দলের এই অঙ্গ সংগঠনের কমিটির মেয়াদ ৩ বছর। চার বছর আগে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৬ সদস্যের আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। যে কমিটির মেয়াদ আরও এক বছর আগে শেষ হয়ে যায়। সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক বৈঠকে সর্বস্তরে নির্বাচনের মাধ্যমে দলের কমিটি পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর এ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আশা করেছিল নতুন কমিটি হবে। কিন্তু তাদের হতাশ করে চার বছর পর ঘোষণা দেয়া হলো আংশিক কমিটি। এ বছর ২৮ জুলাই মারা যায় বিএনপির অঙ্গ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু। এরপর সবাই আশা করেছিল মেয়াদোত্তীর্ণ এই কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হবে। কিন্তু তা না করে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার এক বছর পর ১৯ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করা হয় ১৪৯ সদস্যের আংশিক কমিটি। আর ২১ সেপ্টেম্বর এ কমিটিতে আরও ৩৭ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর আগে এ কমিটি অনুমোদন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ৩৭ জনের মধ্যে সহ-সভাপতি পদ মর্যাদায় ২৭ সদস্যের উপদেষ্টা, নির্বাহী কমিটির ৯ জন সদস্য এবং সম্মানিত সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবুর স্ত্রী বীথিকা বিনতে হোসাইনকে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অনুমোদনের পর ১৯ সেপ্টেম্বর দলীয় কার্যালয় থেকে রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে মোস্তাফিজুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলকে সাধারণ সম্পাদক করে চার বছর পর স্বেচ্ছাসেবক দলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ১৪৯ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণার পর এ কমিটি নিয়ে সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে এ কমিটি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। আর এ কমিটি অনুমোদন দেয়ায় খোদ বিএনপি মহাসচিবের প্রতিও অভিযোগের আঙ্গুল উঠে। ১৯ সেপ্টেম্বর ঘোষিত ১৪৯ সদস্যের আংশিক কমিটিতে ৩০ জন সহ-সভাপতি, ২১ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ২৮ জন সহ-সাধারণ সম্পাদক এবং ৫২ জনকে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। এছাড়া কোষাধ্যক্ষ, প্রচার, প্রকাশনা ও দফতর, স্বাস্থ্য, আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সহ-সম্পাদক পদেও মনোনয়ন দেয়া হয় এই কমিটিতে। এ কমিটির সহসভাপতিরা হলেন গোলাম সারোয়ার, আসাদুজ্জামান নেসার, আনু মোহাম্মদ শামীম আজাদ, আজহারুল হক মুকুল, এ বি এম পারভেজ রেজা, লিটন মাহমুদ, শাহাবুদ্দিন মুন্না, ইকবাল আনসারী টিপু, চৌধুরী ওয়াহিদুর রহমান চয়ন, সুলতান মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন, মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক, ওয়াহিদ ইমতিয়াজ বকুল, আসফ কবির চৌধুরী, শরিফুল ইসলাম দুলু, জামাল হোসাইন তালুকদার, রফিক হাওলাদার, জামির হোসেন, এমদাদুল হক এমদাদ, আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল, একেএম আবুল কালাম আজাদ, আরিফ হোসেন হাওলাদার (ঢাকা), শওকত আজম খাজা (চট্টগ্রাম), নুসরাত এলাহী রিজভী (রাজশাহী), তৈয়বুর রহমান (খুলনা), ফরহাদ চৌধুরী শামীম (সিলেট), ফরিদ উদ্দিন আহমেদ (বরিশাল), রাশেদ উন নবী খান বিপ্লব (রংপুর), শহিদুল আমিন খসরু (ময়মনসিংহ), সাহাবুদ্দিন ফারুক (কুমিল্লা) ও হাফিজুর রহমান (ফরিদপুর)। চার বছর পর আংশিক কমিটি গঠনের পর স্বেচ্ছাসেবক দলের ক’জন নেতাকর্মী অভিযোগ করেন, সংস্কারপন্থী হওয়া সত্ত্বেও দু’জনকে যুগ্ম সম্পাদকের পদ ও একজনকে সহ-সাধারণ সম্পাদক দেয়া হয়েছে। এছাড়া অতীতে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনে সক্রিয় না থাকলেও সংগঠনের শীর্ষ এক নেতার ব্যক্তিগত সহকারী হওয়ায় একজনকে সহ-সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর সাবেক ছাত্রদল নেতা শফিউল বারী বাবুকে সভাপতি ও আব্দুল কাদের ভুইয়া জুয়েলকে সাধারণ সম্পাদক করে ৬ সদস্যের আংশিক কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। ওই কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সহ-সভাপতি গোলাম সারোয়ার, যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ ও সাদরেজ জামান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসীন আলী। এ বছর ২৮ জুলাই শফিউল বারী বাবু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর ওই কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়।
×