ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিমানবন্দরে কর্মীদের আচরণে পরিবর্তন আনতে হবে: বেবিচক চেয়ারম্যান

প্রকাশিত: ২১:৫৯, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০

বিমানবন্দরে কর্মীদের আচরণে পরিবর্তন আনতে হবে: বেবিচক চেয়ারম্যান

অনলাইন রিপোর্টার ॥ যাত্রীদের সঙ্গে বিমানবন্দরের কর্মীদের ভালো আচরণ ও ব্যবহার করতে হবে। এজন্য বিমানবন্দরে কর্মরত সব সংস্থার কর্মীদের ব্যবহারের পরিবর্তন আনতে হবে। মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অনুষ্ঠিত গণশুনানি অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান এসব কথা বলেন। বিমানবন্দরে যাত্রীদের অভিযোগ ও পরামর্শ শুনতে এ গণশুনানির আয়োজন করা হলেও সেখানে মাত্র দুই জন যাত্রী বক্তব্য রাখেন। গণশুনানি শুরুর আগে ১০-১২ জন যাত্রীকে গণশুনানিতে অংশ গ্রহণের জন্য নিয়ে আসেন বিমানবন্দরের কর্মীরা। তবে তাদের ফ্লাইটের সময় হওয়ায় সেখানে থেকে তারা চলে যান। পরবর্তীতে সেখানে উপস্থিত সাংবাদিক ও বিমানবন্দরের বিভিন্ন সংস্থার কর্মীরা বক্তব্য রাখেন। গণশুনানিতে যাত্রীদের উপস্থিতি না থাকা প্রসঙ্গে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখন ফ্লাইট কম, তাই যাত্রীও কম। যেসব যাত্রী বিমানবন্দরে আসেন, তারা আসলে কোন মিটিংয়ে যোগ দেওয়ার মাইন্ডসেট নিয়ে আসেন না। তাদের টার্গেট কখন ফ্লাইটে উঠবেন। দুই-একজনকে অনুরোধ করে নিয়ে আসা হয়,যদি তারা কোনও অভিযোগ জানাতে চান।’ বিমানবন্দরের কর্মীদের আচরণ ও ব্যবহার নিয়ে সাংবাদিকদের অভিযোগের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান মফিদুর রহমান বলেন, ‘আচার-ব্যবহারের পরিবর্তন আনতে হবে। এটা একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এখানে যারা কাজ করবেন তাদের প্রত্যেককের আচর- ব্যবহারও আন্তর্জাতিক মানের হতে হবে। আমরা প্রতিটি সংস্থার লোকজনকে সবসময় বলি— যাত্রীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। ’ বিমানবন্দরের পুলিশ, ইমিগ্রেশন, কাস্টমসসহ সব সংস্থার প্রতিনিধিদেরকে যাত্রীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করার অনুরোধ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মীদের এ বিষয়ে শিক্ষিত করতে হবে। যেন হাসি মুখে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন সবাই।’ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন স্থানে থাকা জায়গার অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান বেবিচক চেয়ারম্যান। সৌদি আরবে ফ্লাইট প্রসঙ্গে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, ‘এত দিন সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের আকাশপথে যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন ছিল। মধ্য প্রাচ্যের অনেক দেশই ফ্লাইট শুরু করেছে। আমরা চাচ্ছিলাম সৌদি আরব থেকেও ফ্লাইট শুরু হোক।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশিদের ফিরে যেতে সাউদিয়া যে কয়টা ফ্লাইটের অনুমোদন চাইবে, আমরা দেবো।’ মফিদুর রহমান বলেন, ‘দুই সপ্তাহ আগে সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্স আমাদের কাছে অনুমোদন চায়, আমরা অনুমতি দিয়েছি। যদিও আমাদের বাংলাদেশি এয়ারলাইন্সও সেদেশে যেতে পারবে— এই শর্তে আমরা অনুমোদন দিয়েছি। আমরা জানতে পেরেছি, যাদের আকামার মেয়াদ আছে তারা যেতে পারবেন। শুধু ভিজিট ভিসা ও ওমরা ভিসায় যাওয়া যাবে না। আমরা জানতে পারলাম, বিমানকে চার্টার্ড ফ্লাইটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্যিক ফ্লাইটের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। বিমানকে অনুমোদন না দেওয়ায় অনেকেই চাচ্ছিলেন সাউদিয়ার অনুমোদন বাতিল করা হোক, কিন্তু আমরা সিভিল এভিয়েশন থেকে বাতিল করিনি। আমাদের বাংলাদেশি প্রবাসী ভাইদের যাওয়া নিশ্চিত করতে সাউদিয়া ও বিমান যেন চলাচল করতে পারে, সে বিষয়ে কথা বলেছি।’ বেবিচক চেয়ারমান বলেন, ‘আমাদের বিমানও যেন যেতে পারে, সেই চেষ্টা করছি। বিমান থেকে জানতে পেরেছি, তারা এখনও অপারেশনের অনুমতি পায়নি। আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো। আমরা সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলেছি। বাংলাদেশিদের ফিরে যেতে সাউদিয়া যে কয়টা ফ্লাইটের অনুমোদন চাইবে, আমরা দেবো। তবুও যেন প্রবাসীরা ফিরে যেতে পারেন। একই সঙ্গে আমাদের বিমান বাংলাদেশও যেন যেতে পারে সেজন্য কাজ করছি। ’ ভাড়া বৃদ্ধি প্রসঙ্গে মফিদুর রহমান বলেন, ‘সাউদিয়া এয়ারলাইন্স জানিয়েছে— তারা ট্রাভেল এজেন্সিগুলোকে ব্লক করেনি। ট্রাভেল এজেন্সিও টিকিট বিক্রি করছে। আমাদের দেশি কিছু এজেন্সি টিকিট ব্লক করে ভাড়া বাড়িয়ে দিচ্ছে। তারা আমাদের প্রবাসীদের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করবো।’ বিমান চালু হলে যাত্রীরা সুবিধা পাবেন বলে জানান বেবিচক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘বিমান নতুন করে টিকিট বিক্রি করবে না।’ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ-উল আহসান বলেন, ‘বর্তমানে দিনে ২৫-৩০টি ফ্লাইট চলাচল করছে। বিমানবন্দরে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে বিমানবন্দরের বিভিন্ন স্থানের সংস্কার করা হচ্ছে।’ গণশুনানিতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) এয়ার কমডোর মো. খালিদ হোসেন, সদস্য (প্রশাসন) মো. মিজানুর রহমান, সদস্য (নিরাপত্তা) মো. শহীদুজ্জামান ফারুকী, সদস্য সদস্য (এটিএম) এয়ার কমডোর আমিনুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী আবদুল মালেক, বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের কমান্ডিং অফিসার মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম খান এবং চেয়ারম্যান দিলারা আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×