ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘করোনা মরোনা বুঝি না- ভর্তি ফি সাড়ে ৩ হাজার টাকা’

প্রকাশিত: ২১:০৮, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০

‘করোনা মরোনা বুঝি না- ভর্তি ফি সাড়ে ৩ হাজার টাকা’

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ জেলা সদরের কলেজসমূহে এইচএসসি ভর্তির ফি সরকার নির্ধারিত করা হয় দুই হাজার টাকা। নিয়ম অনুযায়ী জেলা সদর উপজেলায় দুই হাজার টাকার বেশি নিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু নীলফামারী জেলা সদরের চাঁদেরহাট মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি ফি নেয়া হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার টাকা করে। কলেজের অফিস সহকারী আমিনুর রহমান দাম্ভিকের সুরে সাংবাদিকদের বললেন, করোনা- মরোনা বুঝি না। আমরা পঁয়ত্রিশ শ’ টাকা ছাড়া কোন ছাত্রকেই ভর্তি করিনি। এর বাইরে কিছুই করার নেই। অপরদিকে করোনাকালীনের কথা এড়িয়ে কলেজের অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বিষয়টি বাড়াবাড়ি না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, পরবর্তীতে বিভিন্ন সুযোগ থাকবে শিক্ষার্থীদের। অসহায় শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তির সুযোগ পাবে।মঙ্গলবার এইচএসসি ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগ পেয়ে সাংবাদিকরা ওই কলেজে গেলে ঠিক এভাবেই কথাগুলো বলা হয়। ‘ফি’ সাড়ে তিন হাজার টাকা সুদের ওপর নিয়ে ছেলেকে ভর্তি করিয়েছেন বলে জানালেন কাঠ শ্রমিক জয়নাল আবেদীন। তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে আলসার রোগে ভুগছি, ধারদেনা করে চিকিৎসা করছি। এরমধ্যে ছেলে এসএসসি পাস করে। দুই হাজার টাকা জোগাড় করে ছেলেকে চাঁদেরহাট কলেজে পাঠাই ভর্তি হতে। কিন্তু কলেজের প্রিন্সিপাল আমার ছেলের ভর্তিতে সাড়ে ৩ হাজার টাকা দাবি করেন। ছেলে ভর্তি হতে না পেরে ফিরে আসে। পড়ে কোন উপায় না পেয়ে সুদের উপর আরও দেড় হাজার টাকা নিয়ে মোট সাড়ে ৩ হাজার টাকা দিয়ে চাঁদেরহাট কলেজে ছেলের ভর্তি করাই। শুধু কাঠশ্রমিক জয়নাল নয়, এমন শত শত শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা একই অভিযোগ করেন। জানা যায়, এইচএসসিতে ভর্তির শেষ সময় ১৫ সেপ্টেম্বর ছিল। পরবর্তীতে তা ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। সরকারের নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়, আগামী শিক্ষাবর্ষে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি ও বাড়তি টিউশন ফিসহ অন্যান্য ফি আদায় করলেই প্রতিষ্ঠান প্রধান ও জড়িত সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের এমপিও বন্ধসহ চাকরি থেকে বরখাস্তের ব্যবস্থা নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এছাড়া প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটি বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া নীতিমালায় উল্লেখ আছে প্রয়োজনে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটির এমপিও বন্ধ করা হবে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম বলেন, করোনাকালীন অতিরিক্ত ভর্তি ও বাড়তি ফি কোনভাবেই আদায় করা যাবে না। যদি নীতিমালার বাইরে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হয়, প্রমাণ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমনকি প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ জড়িতদের এমপিও বাতিল করার সুপারিশ করা হবে মন্ত্রণালয়ে।
×