ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কারণেই করোনা নিয়ে জনগণের মধ্যে শৈথিল্য সৃষ্টি হয়েছে- ওয়ার্কার্স পার্টি

প্রকাশিত: ১৮:৪৫, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কারণেই করোনা নিয়ে জনগণের মধ্যে শৈথিল্য সৃষ্টি হয়েছে- ওয়ার্কার্স পার্টি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির বর্তমান অবস্থায় সারাদেশে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত বিষয়াবলী কঠোরভাবে প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টি। ইতিমধ্যে সেই লক্ষ্যে জনগণকে মাস্ক পরিধান, করোনা পরীক্ষা ও সঙ্গনিরোধ সম্পর্কে সচেতন করতে পার্টির প্রতিটি ইউনিটকে করোনা সংক্রমণের প্রথম পর্যায়ের মত স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করে এ সংক্রান্ত প্রচারাভিযান ও জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার কাজ চালাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পার্টি ইতিমধ্যেই জনগণের মধ্যে মাস্ক বিতরণের কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। মঙ্গলবার ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর দু’দিনের ভার্চুয়াল বৈঠকের এসব সিদ্ধান্ত প্রকাশ করা হয়। পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি-র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত প্রস্তাবে বলা হয়, এ ব্যাপরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গা ছাড়াভাব, উদ্যোগহীনতা, পরামর্শক কমিটির পরামর্শ উপেক্ষা জনগণের মধ্যে অনীহাভাবের জন্ম দিয়েছে। বিশ^স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের করোনা শনাক্তকরণে টেষ্ট কার্যক্রম কমিয়ে দেয়া, করোনা রোধে যে চিকিৎসকরা কাজ করছেন তাদের কোয়ারান্টাইন ব্যবস্থা তুলে দেয়া ও সর্বোপরি করোনার প্রকৃত চিত্র আড়াল করার কারণে জনগণকে এ ব্যাপারে অনুৎসাহিত করে তুলেছে। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, দুর্নীতিতে আকন্ঠ নিমজ্জিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এখন নিজেদের বাঁচাতে ব্যস্ত। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও প্রথম থেকেই এ ব্যপারে চরম অসংবেদনশীলতা, উদাসীনতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। এর ফলে সমস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পর্কেই জনমনে অনাস্থা সৃস্টি হয়েছে। ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দুর্নীতি রোধ করতে কান না টেনে মাথা টানার কথা বলা হয়। প্রস্তাবে বলা হয় করোনা সংক্রমণ রোধের ব্যবস্থাকে ধরে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সামগ্রিক পুনর্গঠন করতে হবে। ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে বলা হয়, এই অবস্থায় যখন জনগণের ক্রয়ক্ষমতা একেবারেই নি¤œমুখী, প্রতিটি স্তরের মানুষের আয় কমে গেছে সেখানে চাল, পেয়াজ, রসুন, সব্জিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিষের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট এর জন্য দায়ী। খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রস্তাবে বলা হয়, এবার ভাল ফসল উৎপাদনের পরও সরকার সময় বাড়িয়েও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চাল সংগ্রহে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারী গুদামে চাল দেয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ মালিকরা তাদের জেলে দিলেও চাল দেবেনা বলে হুমকি দিয়েছে। অন্যদিকে বড় কৃষকসহ ব্যবসায়ী পর্যায়ী দাম বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাল মজুত করা হচ্ছে। মজুতবিরোধী আইনের কোন প্রয়োগ নাই। এই অবস্থায় দেশের গরীব, নি¤œবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষ চরম বিপদে পরবে। ওয়ার্কার্স পার্টি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চালসংগ্রহে ব্যর্থ কর্মকর্তাদের সরকারি গুদামে চাল দিতে অস্বীকারকারী চালকল মালিক ও মজুতকারী অসাধু ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকারের নিকট আহ্বান জানাচ্ছে। পার্টি এই লক্ষ্যে আগামী ১লা অক্টোবর দেশের সর্বত্র সমাবেশ করে খাদ্য দপ্তরে স্বারকলিপি প্রদানের কর্মসূচী নিয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়, সরকার পাটকলের পর দেশের চিনিকল বন্ধ করে দেবার পদক্ষেপ নিতে চলেছে। ফলে কেবল সাধারণ ভোক্তা নয় দেশের চিনিকল শ্রমিক ও বিশাল সংখ্যক আখচাষী ও আখচাষ এলাকা মানুষ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। পার্টি চিনিকল চালু রাখা ও আখচাষীদের স্বার্থরক্ষায় আগামী ৭ অক্টোবর সারাদেশে সমাবেশ, মানবন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে। ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সভায় দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর রিপোর্ট দেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি। আলোচনায় অংশ নেন পলিটব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, ড. সুশান্ত দাস, মাহমুদুল হাসান মানিক, নুর আহমদ বকুল, কামরূল আহসান, আমিনুল ইসলাম গোলাপ, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম হক্কানী, হাজী বশিরুল আলম, জ্যোতি শংকর ঝন্টু, অধ্যাপক নজরুল হক নীলু, আলী আহমেদ এনামুল হক এমরান।
×