ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কাঁচাপাট রফতানি অব্যাহত ও শুল্কমুক্ত রাখার দাবি বিজেএ ও এসসিবির

প্রকাশিত: ২০:১৩, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০

কাঁচাপাট রফতানি অব্যাহত ও শুল্কমুক্ত রাখার দাবি বিজেএ ও এসসিবির

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কাঁচাপাট রফতানি বন্ধ ও শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত না নেয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএ) ও শিপার্স কাউন্সিল অব বাংলাদেশ (এসসিবি) জানিয়েছে। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়েছেন সংগঠন দুটির প্রতিনিধিরা। তারা বলছেন, পানির দামে পাট কিনতে মিল মালিকরা সরকারকে দিয়ে রফতানি বন্ধ করানোর ষড়যন্ত্র করছে। সংবাদ সম্মেলনে দুই সংগঠনের নেতারা জানান, সরকারি মিল বন্ধ হওয়ায় এমনিতেই কমে গেছে ১৩ লাখ বেল কাঁচাপাটের চাহিদা। এমন অবস্থায় রফতানি বন্ধ বা শুল্ক আরোপের ফলে নষ্ট হবে অব্যবহৃত পাট। এর ফলে দাম না পেয়ে কৃষক পাট চাষ বন্ধ করে দেবে বলেও মত তাদের। কিছুদিন আগেই বন্ধ হয়েছে সরকারি সব পাটকল। ঘুরছে না কোনো কারখানার চাকা। ব্যবহার না থাকায় কমপক্ষে ১৩ লাখ বেল কাঁচাপাটের চাহিদা কমেছে জানিয়ে বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশনের দাবি, রফতানি না হলে নষ্ট হবে এসব পাট, দাম কমে নামবে তলানিতে। ক্ষতির মুখে তো বটেই আগামী বছর থেকে পাট চাষেও আগ্রহ হারাবে কৃষক। এর উল্টো হিসাব জমা দিয়ে সম্প্রতি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে পাট রফতানির উপর শুল্ক আরোপ ও রফতানি বন্ধের সুপারিশ করে আবেদন জমা দিয়েছে বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স এসোসিয়েশন (বিজেএমএ)। এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেই সোমবার সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে শিপার্স কাউন্সিল অফ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোঃ রেজাউল করিম ও বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ সৈয়দ আলী বলেন, ১৯৮৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৪ বার রফতানি বন্ধের কারণে প্রয়োজনীয় কাঁচাপাটের অভাবে বিদেশের অনেক জুটমিল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আমাদের বৈদেশিক বাজার ২৮-৩০ লাখ বেল থেকে নেমে দাঁড়ায় ৮০৯ লাখ বেলে। নতুন করে রফতানি শুল্ক আরোপ হরে আমাদের এখন যতোটুকু কাঁচাপাটের আন্তর্জাতিক বাজার আছে তাও থাকবে না। ভুল তথ্য দিয়ে সরকারকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে এমন অভিযোগ করে তারা বলেন, রফতানি বন্ধ করে পানির দামে পাট কেনার ষড়যন্ত্র করছেন মিল মালিকরা। বাংলাদেশ পাট চাষি সমিতির সভাপতি ফজলুর রহমান বলেন, ন্যায্যমূল্য না পেলে পাটচাষ বন্ধ হয়ে যাবে। যে বছর পাটের দাম ভালো থাকে, সে বছর চাষিরা বেশি চাষ করে। শিপার্স কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বলেন, পুরোটা ব্যবহার করতে না পারায় রফতানি হচ্ছে। যে পর্যন্ত পুরো পাট ব্যবহার উপযোগী না করা যায়, সে পর্যন্ত পাট রফতানি চালু থাকা দরকার। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত চারবার রফতানি বন্ধ হয়েছে, প্রতিবারই দাম কমে গেছে জানিয়ে তারা অভিযোগ করেন, এখন আবার দাম কমানোর জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করছে স্পিনিং মিল মালিকরা। অতিরিক্ত রফতানির কারণে যেন মিলে পাটের অভাব না হয়, আবার অতিরিক্ত উদ্বৃত্তের কারণে যেন দাম পড়ে না যায়, সে পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে সরকারকে আহ্বানও জানান বক্তারা। সংগঠন দুটির নেতাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে: কাঁচাপাট রফতানি বন্ধ না করা এবং রফতানি শুল্কমুক্ত রাখা; বারবার রফতানি বন্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কাঁচাপাট রফতানিকারকদের ব্যবসায় ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা; করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত রফতানি খাতগুলোর জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা সুবিধায় কাঁচাপাট রফতানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করা এবং কাঁচাপাট রফতানির বিপরীতে প্রণোদনা প্রদান।
×