ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

* অতিবৃষ্টি, অস্বাভাবিক জোয়ার

বাগেরহাটে ১৬০ কি.মি. সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত, বাড়ছে দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ১৭:৩৮, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০

বাগেরহাটে ১৬০ কি.মি. সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত, বাড়ছে দুর্ভোগ

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ বাগেরহাট জেলার ১৬০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আমফান, অতিবৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে এ সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ফলে সড়ক পথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারী ও যানবাহন চালকদের। অহরহ দুর্ঘটনাও ঘটছে। প্রায় ৩ মাস এসব সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হলেও আজও সংস্কার হয়নি। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে যথাদ্রুত সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হবে। বাগেরহাট এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, অতিবৃষ্টি, অস্বাভাবিক জোয়ার ও ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন উপজেলার ৯২ দশমিক ৬৬ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে আম্ফানে ৫১ দশমিক ১২ কিলোমিটার এবং অতিবৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ৪১ দশমিক ৫৪ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি হয়েছে। এসব সড়কের মধ্যে পাকা, ইটের সোলিং ও কাঁচা রাস্তা রয়েছে। এতে প্রায় ৭০ কোটি ৯৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এসব সড়ক সংস্কারের জন্য ইতোমধ্েয প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে। এখন প্রকল্পগুলো অনুমোদন ও বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে বলে বাগেরহাটের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জি, এম, মুজিবর রহমান জানিয়েছেন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী জি, এম, মুজিবর রহমান বলেন, ‘‘এলজিইডির বেশিরভাগ সড়কই উপজেলা ও গ্রাম পর্যায়ের। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে এলজিইডির সড়ই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাগেরহাট জেলায় আমাদের ৬ হাজার ৭০৫ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও জোয়ারের পানিতে ৯২ দশমিক ৬৬ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্রুতই এসব সড়ক মেরামতের কাজ শুরু হবে।’’ অনুরূপ বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের ২০ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এ সড়ক মেরামতের জন্য সম্ভাব্য ব্যায় ধরে সড়ক ভবনে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন জানিয়েছেন। তবে যেসব সড়ক খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এবং যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল- সেসব সড়ক সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করছি।’ প্রস্তাবনা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী দুটি ধাপে মেরামত করার কথা বলা হয়েছে। স্বল্প মেয়াদী ধাপে মেরামতের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে সাত কোটি ৮৭ লাখ টাকা। দীর্ঘ মেয়াদী ধাপে মেরামতের জন্য ব্যয় হবে ৩৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এলজিইডি ও সওজ বিভাগ ছাড়াও ঘূর্ণিঝড় আম্ফান অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে জেলার মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও বাগেরহাট পৌরসভার প্রায় ৪৭ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাগেরহাট পৌরসভার ৪ কিলোমিটার, মোংলা পোর্ট পৌরসভার ৩ কিলোমিটার এবং মোরেলগঞ্জ পৌরসভার ৪০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে বাগেরহাট ও মোংলা পৌরসভার ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কারে কাজ শুরু করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এলজিইডি, সড়ক বিভাগ, পৌরসভা ছাড়াও জেলার ২০ শতাংশের অধিক গ্রামীণ সড়ক কমবেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে মানুষের তিগ্রস্ত এসব সড়কে দুর্ভোগ হচ্ছে। দুর্ঘটনাও ঘটছে অহরহ। দ্রুত এসব সড়ক সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। কচুয়া উপজেলার চন্দ্রপাড়া গ্রামের আকবর হোসেন বলেন, ফতেপুর থেকে ফুলতলা সড়কটির বিভিন্ন জায়গা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তবুও বাধ্য হয়ে আমাদের চলাচল করতে হচ্ছে।’ মোরেলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এসএম মনিরুল হক তালুকদার বলেন, ‘পানগুছি নদীর তীরে মোরেলগঞ্জ পৌরসভার অবস্থান। ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এবং জোয়ারের পানিতে আমার পৌরসভার কাঁচা, সোলিং, পাকা ও কংক্রিটের সড়ক মিলে প্রায় ৪০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শিগগিরই ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতের কাজ শুরু হবে।’ ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও জোয়ারের পানিতে এলজিইডি, সড়ক বিভাগ, পৌরসভার বেশকিছু সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বাগেরহাট জেলা পরিষদের কোনো সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে দাবি করেছেন জেলা পরিষদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আওলাদ হোসেন।
×