ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হাটহাজারী মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব ভাগাভাগি

প্রকাশিত: ২২:০৫, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০

হাটহাজারী মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব ভাগাভাগি

নিজস্ব সংবাদদাতা, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম, ২০ সেপ্টেম্বর ॥ দেশের অন্যতম ইসলামী কওমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাটহাজারীর দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার সকল বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে। মাদ্রাসায় ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের সকল দাবি পূরণ হওয়ায় পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। আল্লামা শাহ আহমদ শফীর জানাজার পর মাদ্রাসায় ক্লাস নেয়ার ঘোষণা দেন জুনায়েদ বাবুনগরী। সেই ঘোষণা অনুযায়ী রবিবার পুরাদমে ক্লাস শুরু হয়েছে এবং দায়রা হাদিসের পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। হেফাজত ইসলামের আমির ও হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফীর ইন্তেকালের পর শূরা কমিটির অনুষ্ঠিত জরুরী বৈঠকে মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য মুহতামিমের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তিনজনকে। মুফতি আবদুস সালাম চাটগামী, শেখ আহমদ, মাওলানা ইয়াহহিয়া এই তিনজনের প্যানেল মুহতামিমের দায়িত্ব পালন করবেন। একই সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীকে মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক ও প্রধান শায়খুল হাদীসের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। মাওলানা হাফেজ শোয়াইবকে সহকারী শিক্ষা পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। শনিবার আছরের নামাজের পর হাটহাজারী মাদ্রাসার শূরা কমিটির বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মাদ্রাসা পরিচালনার ক্ষেত্রে নিযুক্ত ওই তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি মাদ্রাসার সকল কাজের সমস্যা সমাধান করবেন এবং সকলের সমান অধিকার থাকবে। কেউ এককভাবে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। ‘ মাদ্রাসায় ছাত্র আন্দোলনের নামে শিক্ষকদের কক্ষ ভাংচুর ও লুটপাটের বিষয়ে আল্লামা শেখ আহমদ, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, মাওলানা ওমর, মাওলানা ইয়াহিয়া মাহমুদ, মুফতি জসিম উদ্দিনকে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় বৈঠকে। এছাড়া, আন্দোলন চলাকালীন শূরার বৈঠকে মাওলানা আনাস মাদানী ও মাওলানা নূরুল ইসলামকে বহিষ্কারসহ যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছিল তাও বহাল রাখা হয়েছে শূরা কমিটির বৈঠকে। শূরা কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, নূরুল ইসলাম জিহাদী, নোমান ফয়েজী, মাওলানা সালাউদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা সুহাইব সাহেব, মাওলানা ওমর ফারুকসহ সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দ। মাদ্রাসার সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে আনাস মাদানীর বহিষ্কারসহ ৫ দফা দাবি আদায়ে ১৬ সেপ্টেম্বর জোহরের পর থেকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছে হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্ররা। আন্দোলনরত ছাত্রদের পক্ষ থেকে প্রচার করা লিফলেটে উল্লেখ থাকা দাবিসমূহ ন্যায্য ও যৌক্তিক ছিল বলে সূত্রে জানানো হয়। একটি সূত্র জানায়, বিশেষ কোন ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠীর উস্কানি কিংবা প্ররোচনায় নয় বরং দীর্ঘদিন ধরে জুলুম ও অন্যায়, অবিচারের শিকার হওয়া প্রতিবাদী ছাত্র-জনতা নিজেরাই নিজেদের দায়িত্ববোধ থেকে উম্মুল মাদারিস হাটহাজারী মাদ্রাসার সোনালি ইতিহাস ও ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং প্রাপ্য অধিকার ফিরে পেতে মূলত এ আন্দোলন করেছে। অন্য একটি সূত্র দাবি করেছে, এ আন্দোলনের নেপথ্যে জামায়াত-বিএনপির একটি চক্র কাজ করেছে। প্রতিবাদী ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে বাধাগ্রস্ত করতে একটি কুচক্রী মহলের ইন্ধন ছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
×