ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আন্দোলনের সক্ষমতা হারিয়েছে বিএনপি ॥ কাদের

প্রকাশিত: ২১:৩৭, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০

আন্দোলনের সক্ষমতা হারিয়েছে বিএনপি ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপির সমালোচনা করে বলেছেন, সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির আন্দোলনের ডাক এখন মিথ্যাবাদী রাখালের গল্পের মতো। জনগণও বিশ্বাস করে না, তাদের (বিএনপি) দলীয় কর্মীরাও বিশ্বাস করে না। নেতিবাচকতার কারণে তারা আন্দোলনের সক্ষমতা হারিয়েছে। রবিবার বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি বিআরটিএ আয়োজিত বিশেষ সেবা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের তার সরকারী বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সরকারকে সরানোর আহ্বানের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি (মির্জা ফখরুল) কোন্ আন্দোলনের কথা বলছেন? কর্মসূচী আর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে নেতারা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে থাকার যে আন্দোলন, সেই আন্দোলন বিএনপির মুখে অনেকবার শুনেছি। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, গত দশ বছরের অধিক সময় ধরে বিএনপির আন্দোলনের অনেক হাঁক-ডাক এদেশের মানুষ শুনেছে। অথচ রাজপথে তারা তাদের নেত্রীর (খালেদা জিয়া) মুক্তির দাবিতেও পাঁচ শ’ লোকের একটি বিক্ষোভ মিছিল দেখাতে পারেনি। তর্জন গর্জনই শুধু শুনেছি, কিন্তু বর্ষণ দেখিনি। ওনারা আন্দোলন করছে দলীয় অফিসের সামনে নিজ দলের নেতাকর্মীদের মাথা ফাটিয়ে। ওনারা আন্দোলন করেন নয়া পল্টনে। কমিটি ঘোষণার পর নিজের অফিস জ্বালিয়ে দিয়ে। এটা কি আন্দোলন? ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া এদেশে অতীতে কোন আন্দোলন সফল হয়নি। জনগণকে সম্পৃক্ত করতে না পারলে কোন আন্দোলনই অর্থবহ রূপ নেয় না।’ এটাই এদেশের ইতিহাস এবং ঐতিহ্য বলেও উল্লেখ করেন তিনি। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি প্রতিবছর ঈদের পরেই আন্দোলনের শুধু ঘোষণা দেয়। কিন্তু জনগণ কত ঈদ এর মধ্যে পার করেছে। আন্দোলন আর দেখেনি। রাজপথ শূন্যই থাকে। বিএনপির আন্দোলন দ্বার রুদ্ধ করে প্রেস ব্রিফিংয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বিএনপির আন্দোলন পারস্পরিক অবিশ্বাস, কলহ, নেতিবাচক রাজনীতি চক্রে আবদ্ধ। নেতিবাচকতার কারণে তারা তাদের আন্দোলনের সক্ষমতা হারিয়েছে। কেউ যদি ভাবেন বিদেশে বসে এদেশে বিপ্লব ঘটাবেন, তাহলে আমার মনে হয় তারা দুঃস্বপ্ন দেখছেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, আন্দোলন করে সরকারকে সরাতে না পারলে দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করা যাবে না!’ বিএনপির এমন কথায় জনগণ হাসে। কাদের নিয়ে আন্দোলন করে বিএনপি স্বাধীনতা রক্ষা করবে? সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে নিয়ে? যারা এ দেশের স্বাধীনতা মেনে নেয়নি, তাদের নিয়ে আন্দোলন করবে? এদেশের স্বাধীনতা এসেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাত ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে। তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি অর্জনের সঙ্গে রয়েছে আওয়ামী লীগ। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব যারা এনেছে তাদের হাতেই স্বাধীনতা নিরাপদ। সরকার পরিচালনায় রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা। যার কাছে এ দেশের মাটির প্রতিটি কণা জীবনের মতো মূল্যবান। আমাদের ক্ষমতার উৎস জনগণ বলেই আমাদের হাতে স্বাধীনতা নিরাপদ। আর বিএনপির ক্ষমতার উৎস অন্ধকারের চোরাগলি। তাদের কাছে স্বাধীনতা কোনদিনও নিরাপদ নয়। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, এদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আছে বলেই বিএনপি এখনও রাজনীতি করছে। যখন যা খুশি বলছে। প্রতিদিন বিএনপি নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে যথেচ্ছ অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। পত্রিকা টকশোতে সরকারের অন্ধ সমালোচনা করছেন। বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। তারপরও বলছেন, গণতন্ত্র নেই, স্বাধীনতা নেই! ক্ষেত্র বিশেষে সরকারী দলের চেয়ে তারাই বেশি কাভারেজ পাচ্ছেন। তারপরও অভিযোগ করে, দেশে নাকি মুক্ত গণমাধ্যম নেই। আসলে রুদ্ধ হয়েছে বিএনপির ভাবনা জগত, দেখার আকাশ। তাদের দৃষ্টিসীমায় ক্ষমতা ফিরে পাওয়া মরীচিকা। আন্দোলন আর রাজনীতিতে ব্যর্থ হয়ে এখন তারা হতাশার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। তাই ভালকিছু দেখতে পান না তারা। যে গণমাধ্যম তাদের রাজনৈতিক অপমৃত্যু থেকে বাঁচিয়ে রেখেছে তারা সেই গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের মিথ্যা অভিযোগ করছেন। সেতুমন্ত্রী বলেন, সরকার সেবা সহজীকরণে এবং গ্রাহকদের সুবিধার্থে দেশের যে কোন সার্কেল অফিস হতে যানবাহনের ফিটনেস সনদ গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। বিআরটিএকে সত্যিকার অর্থে সেবামুখী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এসময় সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদারসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×