ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নেত্রকোনায় ওসিসহ ৩ পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ

প্রকাশিত: ২০:৩০, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০

নেত্রকোনায় ওসিসহ ৩ পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা, ২০ সেপ্টেম্বর ॥ আটক করে থানায় এনে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও অমানসিক নির্যাতনের অভিযোগে দুর্গাপুর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমানসহ তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রবিবার দুপুরে নেত্রকোনার দ্রুতবিচার আদালতের বিচারক পুলিশকে এ নির্দেশ দেন। মামলায় অভিযুক্ত অপর দু’জন হলেন- একই থানার সাবেক এসআই আবদুল হালিম ও কনস্টেবল জুয়েল রানা। এদিকে পুলিশ সুপার মোঃ আকবর আলী মুন্সী রবিবার বিকেলে জানান, ‘আমরা কিছুক্ষণ আগে আদালতের আদেশের কপি পেয়েছি। মামলাটি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) একেএম মনিরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া সম্ভব হবে।’ জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দুর্গাপুর উপজেলার গুজিরকোনা গ্রামের যুবলীগ কর্মী আলম তালুকদার বাদী হয়ে দ্রুতবিচার আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন। আলম তালুকদার নেত্রকোনা-১ (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর) আসনের তিনবারের সাবেক এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত জালাল উদ্দিন তালুকদারের ভাতিজা। তিনি পেশায় বালু ব্যবসায়ী। উল্লেখ্য, এসআই আব্দুল হালিম ও কনস্টেবল জুয়েল রানা গত ১০ আগস্ট সন্ধ্যায় আলম তালুকদারকে দুর্গাপুরের মাছমহাল থেকে ধরে থানায় নিয়ে যান। এরপর ওসি মিজানুর রহমান তার কাছে বালু বেচার টাকা থেকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আলম তালুকদার চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অভিযুক্তরা তাকে একটি কক্ষে আটকে রেখে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে আহত করেন। এছাড়া মাথায় ধরে জোরে দেয়ালে ধাক্কা দিয়ে গুরুতর জখম করেন। এ সময় তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে বমি করতে থাকলে পুলিশ সদস্যরা তাকে দ্রুত দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা ও অক্সিজেন দেয়ার পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়ার পর অভিযুক্তরা আবার তাকে দুর্গাপুর থানায় নিয়ে আসে এবং কয়েকটি কাগজে স্বাক্ষর রেখে আদালতে চালান দেন। ওই রাতেই জামিন পেয়ে তিনি আবার দুর্গাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন এবং একপর্যায়ে সুস্থ হন। এদিকে আলম তালুকদারকে আটক ও নির্যাতন করার পরদিন (১১ আগস্ট) উর্ধতন কর্মকর্তারা ওসি মিজানুর রহমানকে প্রত্যাহার এবং এসআই আব্দুল হালিমকে নেত্রকোনার মদন থানায় ও কনস্টেবল জুয়েল রানাকে খালিয়াজুরী উপজেলার লেপশিয়া ফাঁড়িতে বদলি করেন। মিজানুর রহমানকে পরবর্তীতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে বরিশাল পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। এ ব্যাপারে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি ওসি মিজানুর রহমান।
×