ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তুলা উৎপাদনে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার

প্রকাশিত: ২৩:১০, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০

তুলা উৎপাদনে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সারা বিশ্বেই তুলা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল। অন্যান্য ফসলের মতো দেশে তুলা উৎপাদনে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। কৃষিমন্ত্রী আরও বলেছেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৮০-৮৬ লাখ বেল তুলা আমদানি করতে হয়। সেখানে দেশে তুলার উৎপাদন মাত্র ২ লাখ বেলের মতো। আগে ১ লাখ বেলের নিচে উৎপাদন হতো। সম্প্রতি তুলা উন্নয়ন বোর্ডের হাইব্রিড উন্নত জাতের তুলা উদ্ভাবন ও চাষের ফলে তুলা উৎপাদন দিন দিন বাড়ছে। শনিবার রাজধানীর খামারবাড়ি সড়কে তুলা উন্নয়ন বোর্ড ভবন ‘তুলা ভবন’-এর ভিত্তি প্রস্তরের ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী। তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক মোঃ ফরিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে কৃষি সচিব মোঃ নাসিরুজ্জামান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে প্রতিবছর যে পরিমাণ তুলা আমদানি করতে হয়, এই বিপুল পরিমাণ তুলা আমদানিতে বছরে ২৪ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়। যদিও আমদানিকৃত তুলা ভ্যালু এ্যাডের মাধ্যমে সুতা ও কাপড়ের আকারে বিদেশে রফতানি হয়ে থাকে। এসব তুলা এদেশে উৎপাদন করতে পারলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব। কৃষিমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য ফসলের মতো তুলা উৎপাদনের ওপর সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। তুলা উন্নয়ন বোর্ড হওয়া মানে তুলা উৎপাদন গুরুত্বারোপ করা। সরকার সবদিক দিয়ে তুলা উন্নয়ন বোর্ডকে শক্তিশালী করছে। ভৌত অবকাঠামো, যন্ত্রপাতি, ল্যাবরেটরি স্থাপন ও দক্ষ মেধাবী জনবল নিয়োগ করছে। যাতে বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপযোগী নতুন জাত উদ্ভাবন করে তুলা উৎপাদন ত্বরান্বিত ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যায়। কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে প্রায় ৭৪ ভাগ জমিতে ধানের আবাদ হয়। এদেশের কৃষি উৎপাদন ও ফসল ব্যবস্থা মূলত ধানকেন্দ্রিক। ইদানিং চালের কনজাম্পশন কমে যাচ্ছে, এটি অব্যাহত থাকলে অনেক জমি খালি হবে। সেখানে শাকসবজি, ফলমূল ও তুলার মতো হাই ভ্যালু অর্থকরী ফসলের উৎপাদন করা যাবে। সে লক্ষ্যেই তুলা উন্নয়ন বোর্ডকে শক্তিশালী করা হচ্ছে। কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, শুধু গার্মেন্টস নির্ভরতা নয় বরং রফতানিকে বহুমুখীকরণ করতে হবে। কৃষি মানুষের আহার ও পুষ্টি জাতীয় খাবারের জোগানের পাশাপাশি শিল্পের কাঁচামালেরও জোগান দেয়। এই কাঁচামালেরও জোগানকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বর্তমান সরকার কাজ করছে। আশা করি, আগামী দিনে কৃষি বহুমুখীকরণ হবে, রফতানি বহুমুখীকরণ হবে এবং এর মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। দেশে তুলা চাষ সম্প্রসারণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐকান্তিক ইচ্ছায় ১৯৭২ সালের ১৪ ডিসেম্বর তুলা উন্নয়ন বোর্ড গঠিত হয়। এটি দেশে তুলা গবেষণা, তুলা চাষ সম্প্রসারণ, বীজ উৎপাদন ও বিতরণ প্রভৃতি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। চলতি ২০১৯-২০ মৌসুমে ৪৪ হাজার হেক্টর জমিতে তুলা চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৭৭ হাজার বেল অঁাঁশ তুলা। খাদ্য উৎপাদনে কোন বিঘœ না ঘটিয়ে তুলা চাষ সম্প্রসারণের জন্য তুলা উন্নয়ন বোর্ড অপ্রচলিত অঞ্চল যেমন- তামাক ও কৃষি বনায়ন জমিতে, লবণাক্ত, চর ও পাহাড়ী এলাকায় তুলা চাষ সম্প্রসারণ করছে। কৃষি সচিব নাসিরুজ্জামান বলেন, দেশে চাহিদার মাত্র ৩ শতাংশ তুলা উৎপাদন হয় কিন্তু বাকি ৯৭ শতাংশ আমদানির ক্ষেত্রেও তুলা উন্নয়ন বোর্ড বড় ভূমিকা/ গুরু দায়িত্ব পালন করে সেটি হলো ফুমিগেশন করা। এটি না করলে তুলার সঙ্গে অনেক রোগব্যাধি কৃষিপ্রধান এদেশে আসতে পারে, অন্যান্য ফসলকে আক্রান্ত করতে পারে। এ সময় অন্যান্য উর্ধতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
×