ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার নমুনা পরীক্ষা ১৮ লাখ ছাড়িয়েছে

প্রকাশিত: ২২:৫৫, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০

করোনার নমুনা পরীক্ষা ১৮ লাখ ছাড়িয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দৈনিক করোনায় মোট পরীক্ষিত নমুনা সংখ্যা ১৮ লাখ ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৩২ জনের মৃত্যু এবং শনাক্ত হয়েছেন নতুন ১৫৬৭ জন। এ নিয়ে এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ৪৯১৩ এবং আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৩৭২ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ২০৫১ জনসহ এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৮৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ১৭০ টিসহ এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৮ লাখ ৯ হাজার ৬৭৯টি। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৯০ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৩ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪১ শতাংশ। শনিবার পাঠানো স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাঃ নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩২ জনের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ ও ৭ জন নারী। তাদের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে একজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে চারজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৮ জন এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সী ১৭ রয়েছেন। তাদের বিভাগীয় পরিসংখ্যান অনুসারে, ঢাকা বিভাগে ২২ জন, চট্টগ্রামে ১ জন, খুলনায় ২ জন, রংপুরে ১ জন, ময়মনসিংহে ৪ জন এবং সিলেটে ১ জন রয়েছেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আরও জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৩১২ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৭ হাজার ৩২ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২০২ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৬১ হাজার ৬৯৭ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৭৮ হাজার ৭২৯ জনকে। আর প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইন মিলে ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে ৭১৮ জনকে। কোয়ারেন্টাইন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ১০০৭ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৪ লাখ ৭৫ হাজার ১৫৯ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে ৫ লাখ ২২ হাজার ৫১৪ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৪৭ হাজার ৩৫৫ জন। ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট মৃত্যুর শতকরা হারে দেখা গেছে, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ২১ জন, যা শূন্য দশমিক ৪৩ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৪২ জন, যা শূন্য দশমিক ৮৫ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১১৩ জন, যা দুই দশমিক ৩০ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২৮৮জন, যা ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৬৩৬ জন, যা ১২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৩৩৬ জন, যা ২৭ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সী মারা গেছেন ২৪৭৭ জন; যা ৫০ দশমিক ৪২ শতাংশ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করোনায় মোট মৃতের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৪০৪ জন, যা মোট মৃতের ৪৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০২২ জন, যা মোট মৃতের ২০ দশমিক ৮০ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ৩২৯ জন, যা মোট মৃতের ৬ দশমিক ৭০ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ৪১৫ জন, যা মোট মৃতের ৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে ১৮৪ জন, যা মোট মৃতের ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ, সিলেট বিভাগে ২২১ জন, যা মোট মৃতের ৪ দশমিক ৫০ জন, রংপুর বিভাগে ২৩১ জন, যা মোট মৃতের ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০৭ জন, যা মোট মৃতের ২ দশমিক ১৮ শতাংশ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সারাদেশে করোনা রোগীদের জন্য সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ২৫৫টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩০৩৪ জন এবং খালি রয়েছে ১১ হাজার ১৯১টি শয্যা। দেশে মোট আইসিইউ শয্যা রয়েছে ৫৪৭টি, ভর্তিকৃত রোগী ২৯৪ জন এবং খালি রয়েছে ২৫৩টি আইসিইউ শয্যা। দেশে মোট অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে ১৩ হাজার ৫৫টি, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা রয়েছে ৫২৮টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর রয়েছে ৩৪১টি। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে ১১৫৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৫৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৮২ জন, খুলনা বিভাগে ১৮১ জন, সিলেট বিভাগে ৪২ জন এবং রংপুর বিভাগে ১১ জন সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় হটলাইনগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্য বাতায়নের নম্বরে ৭৬৯১টি, ৩৩৩ নম্বরে ৪০ হাজার ৬৮৯টি এবং আইইডিসিআর’র নম্বরে ২৫৬টি , অর্থাৎ মোট ৪৮ হাজার ৬৩৬টি কল এসেছে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসমূহে ২১৬৩ জন, সমুদ্রবন্দরসমূহে ১২৩ জন এবং স্থলবন্দরসমূহে ৯৭ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। মহামারী নিয়ন্ত্রণে বেশি টেস্ট করাতে হবে- আইইডিসিআর উপদেষ্টা ॥ করোনাভাইরাস শনাক্তের জন্য যত বেশি টেস্ট করা হবে, ততই মহামারী নিয়ন্ত্রণ হবে বলে মন্তব্য করেছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডাঃ মুশতাক হোসেন। শনিবার ডাঃ মুশতাক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, শত ভাগ মানুষের করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করার দরকার নেই। তবে রোগতাত্ত্বিক চিত্র বুঝতে হলে সার্ভিলেন্স এর নিয়ম অনুসরণ করা হচ্ছে কিনা সেটা মুখ্য বিষয়। সার্ভিলেন্সের নিয়ম অনুসারে সকল অঞ্চল থেকে স্যাম্পল আসছে কিনা সেটা দেখতে হবে। ৬৪ জেলা থেকেই বর্তমানে আমাদের স্যাম্পল পরীক্ষা করা হচ্ছে। করোনাভাইরাসের লক্ষণ রয়েছে এমন মানুষের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। এর মধ্যে যাদের করোনাভাইরাস শনাক্ত হবে, কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং করে তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদেরও টেস্ট করতে হবে। বর্তমানে আমাদের কন্ট্রাক্ট টেস্টিং সব জায়গায় সমান ভাবে হচ্ছে না। এ বিষয়ে আমাদের কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের উচিত গ্রাম এবং শহরের বিভিন্ন কমিউনিটিতে গিয়ে যাদের করোনার লক্ষণ রয়েছে, তাদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা। কিন্তু এটা করা হচ্ছে না। রোগীরা নিজে থেকেই পরীক্ষা করতে আসছে। এটা হচ্ছে প্যাসিভ সার্ভিলেন্স। কিন্তু স্বাস্থ্য বিভাগ রোগীর কাছে যাচ্ছে না করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করতে। অর্থাৎ একটিভ সার্ভিলেন্স করা হচ্ছে না। একটিভ সার্ভিলেন্স এবং প্যাসিভ সার্ভিলেন্স যোগ হলে ভাল হয়। ডাঃ মুশতাক হোসেন বলেন, আমাদের কাছে যে পরিমাণ ডাটা রয়েছে তাতে করোনাভাইরাসের বিস্তার বোঝার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু মহামারী রোধে এটা যথেষ্ট নয়। যত বেশি রোগী শনাক্ত করা যাবে। তত বেশি রোগীকে আইসোলেটেড করা যাবে। ততই করোনা নিয়ন্ত্রণ হবে। কিন্তু একটি বড় সংখ্যক রোগী যদি শনাক্তের বাইরে থেকে যায় তাহলে মহামারী কমানো সম্ভব নয় এজন্য করোনা টেস্ট এর পরিমাণ যতটা সম্ভব বাড়ানো উচিত। সুতরাং টেস্টের সংখ্যা যত বেশি বাড়াবে,আমরা ততই মহামারী নিয়ন্ত্রণ করতে পারব।
×