ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

এয়ারলাইন্স বন্ধ, পাসপোর্ট ও ভিসা ইস্যু হলেও বহির্গমন সম্ভব হচ্ছে না

প্রকাশিত: ২২:২৮, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০

এয়ারলাইন্স বন্ধ, পাসপোর্ট ও ভিসা ইস্যু হলেও বহির্গমন সম্ভব হচ্ছে না

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ করোনা পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সের অনেকগুলোই বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশ ভারতে সবচেয়ে বেশি যাওয়া ও আসা হয় বাংলাদেশীদের। শিক্ষা, পর্যটন ও চিকিৎসাসেবার জন্য প্রতিনিয়ত চলাচল অব্যাহত থাকার কথা থাকলেও করোনাকালীন পুরোপুরিই বন্ধ রয়েছে। যদিও পাসপোর্ট ও ভিসা প্রসেসিং বন্ধ নেই। গত সাত মাসের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা আয় করেছে পাসপোর্ট ইস্যু ও ভিসা প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে। তবে শুধু এপ্রিল মাসে পুরোদমে সরকারী সাধারণ ছুটি ঘোষণা থাকায় আয় হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ৩৬০ টাকা। এছাড়া লকডাউনের আগে ও পরে আয়ের মাত্রা ছিল অনেক বেশি। মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) বিতরণ করা হয়েছে প্রায় ২৪ হাজার। এ খাতে রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা। বাকি এক কোটি টাকা এসেছে ভিসা প্রসেসিং ও ইস্যু থেকে। এমআরপি ইস্যু ও ভিসা ইস্যু প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের বিভাগীয় পাসপোর্ট দফতর সাঈদ জনকণ্ঠকে জানায়, পাসপোর্টের আবেদন যেমন রয়েছে তেমনি ভিসার আবেদনও রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে পাসপোর্ট ও ভিসা ইস্যু থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১২ কোটি টাকারও বেশি। করোনাকালীন অবেদনকারীদের শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে আবেদন গ্রহণ ও পাসপোর্ট-ভিসা প্রদান করা হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা ও আগতদের হয়রানি বন্ধে সিসি ক্যামেরায় মনিটরিংয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে কোন ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি আগতদের কাছ থেকে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত এমআরপি বা পাসপোর্ট আবেদন পাওয়া গেছে ২৩ হাজার ৯৪৪। আর বিদেশ যাওয়া সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও চট্টগ্রামে থাকা বিদেশী নাগরিকদের পক্ষ থেকে ভিসার আবেদন পাওয়া গেছে ২ হাজার ২৪৮টি। এ সাত মাসে আগের ও চলমান আবেদন অনুযায়ী এমআরপি ইস্যু করা হয়েছে ২৩ হাজার ৯২৬টি ও ভিসা ইস্যু করা হয়েছে ২ হাজার ৬৩০টি। বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের রাজস্ব আদায়ের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত সাত মাসে এমআরপি বা পাসপোর্ট ইস্যু থেকে আদায় হয়েছে ১১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার ২৯৩ টাকা। ভিসা ইস্যু থেকে আয় হয়েছে ৮৬ লাখ ৩৬ হাজার ৮৮৯ টাকা। রাজস্ব আদায়ের তথ্য অনুযায়ী, এ সাত মাসে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের মোট আয় ১২ কোটি ৪৪ লাখ ৭৯ হাজার ৭৮২ টাকা। এখানে উল্লেখ্য, এ দফতরে পাসপোর্টের রাজস্ব সংক্রান্ত তথ্যাবলী গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সার্ভারে রক্ষিত ডাটাবেজ থেকে পাওয়া গেছে। অপরদিকে, ভিসা ইস্যুর বিপরীতে প্রাপ্ত রাজস্ব ব্যাংক স্ক্রল অনুযায়ী গণনা করা হয়েছে। জানা গেছে, বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে এমআরপি ও ভিসা ইস্যু করেছে। করোনাকালীন সরকারী সাধারণ ছুটি থাকায় গত ২৬ মার্চ থেকে ৫ মে পর্যন্ত পাসপোর্ট ও ভিসা ইস্যু একপ্রকার বন্ধই ছিল বলা যায়। ফলে এপ্রিল মাসে মাত্র দুটি ভিসার আবেদন জমা পড়েছে এবং আগে আবেদন করায় ১২টি ভিসা ইস্যু হয়েছে। ভিসা খাতে এপ্রিল মাসে আয় হয়েছে ৩ হাজার ৩৬০ টাকা। এদিকে, পাসপোর্ট ও ভিসা ইস্যু হলেও শিক্ষা, পর্যটন ও চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বহির্গমন ভিসা পাওয়া যাচ্ছে না বিভিন্ন দূতাবাস থেকে। আবার বিভিন্ন দূতাবাসের পক্ষ থেকে পাসপোর্টে লাগানো ভিসায় যাতায়াত করা যাচ্ছে না। কেননা এয়ারলাইন্সগুলো পুরোপুরিই বন্ধ রয়েছে। চট্টগ্রামের জাকির রোডে অবস্থিত ভারতীয় ভিসা কেন্দ্রের আশপাশে থাকা দোকানগুলোতেও আবেদনকারীদের তেমন একটা ভিড় নেই ভিসার জন্য। বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশ ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন পর্যন্ত চালু হয়নি ভারতগামী এয়ারলাইন্সগুলো। ফলে মাল্টিপল ও চিকিৎসা ভিসা নিয়েও ভারতে যাওয়া যাচ্ছে না।
×