ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নীলফামারীতে ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধি

প্রকাশিত: ১৪:৫৬, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

নীলফামারীতে ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধি

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী॥ নীলফামারীতে এবার ভোজ্যতেলের দাম পাইকারী ও খুচরায় বৃদ্ধি পেয়েছে। ভোক্তাদের অভিযোগ, পাইকারী বাজারে তেলের দাম বাড়িয়েছেন বড় ব্যবসায়ীরা। যার প্রভাব খুচরা বিক্রিতে পড়েছে। আজ শনিবার জেলা শহরের বড় বাজারের মুদির দোকানদার ও পাইকার ব্যবসায়ী আবু সাইদ মিলন জানান, আন্তর্জাতিকভাবে ভোজ্যতেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে স্থানীয় বাজারে। জেলা শহরের স্টেশন সড়কের পাইকারী ব্যবসায়ী তাপস কুমার ভৌমিক জানান, গত এক মাস আগে পরিবেশক পর্যায়ে প্রতিমন সুপার পাম (৩৭ কেজি ৩২০ গ্রাম) সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছিল ২২০০-২৩০০ টাকা। এই হিসেবে প্রতি কেজির দাম পড়ে ৬২ টাকা ১৬ পয়সা। গত দুইদিনে তা বৃদ্ধি পেয়েছে ৮২ টাকা ৪৩ পয়সা। প্রতিমনে দাম বেড়েছে ৭৫০ টাকা। সুত্র মতে ভোজ্য তেল বিভিন্ন নামে বিক্রি হচ্ছে। গত এক মাসে সিটি সয়াবিন, সিটি সুপার ও সিটি পাম প্রতি ড্রাম (১৮৫ কেজি) তেলের দাম ছিল ১৫ হাজার ৮০০ টাকা। যার প্রতি কেজির দাম ছিল ৮৫ টাকা ৪০ পয়সা। সেটি এখন প্রতিকেজি ৯৪ দশমিক ৪৯ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে। এতে কেজিতে দাম বেড়েছে প্রায় ১০ টাকা। বর্তমানে এক ড্রাম সিটি গ্রুপের ওইসব সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭ হাজার ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। পরিবেশক পর্যায়ে ড্রামজাত সয়াবিনের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় বোতলজাত তেলের দাম ইতোমধ্যে বাড়িয়েছে কোম্পানী গুলো। জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, দাম বাড়ার খবরে খুচরা ব্যবসায়ী সেকেন্দার আলী জানান, কোম্পানী গুলো ইতোমধ্যে লিটার প্রতি ৮-১০ টাকা দাম বাড়ার ঘোষনা দিয়েছে। মেঘনা গ্রুপের সয়াবিন প্রতিমন (৩৭ কেজি ৩২০ গ্রাম) তেলের দাম ছিল ২ হাজার ৭০০ থেকে ৭৩০ টাকা। এতে প্রতি কেজির মূল্য দাঁড়ায় ৭৩ টাকা ৭৮ পয়সা। এক মাসের ব্যবধানে ওই তেলের দাম বেড়েছে ৩ হাজার ১৩০ টাকা। যার প্রতিকেজির মূল্য দাঁড়ায় ৮৪ টাকা ৫৯ পয়সা। প্রতিকেজি সয়াবিনের মুল্য বেড়েছে ১০ টাকা। জেলা শহরের বড় বাজারে সোয়াবিন তেল কিনতে এসে গৃহিনী মৌরী বেগম জানান, আমরা মাসিক খরচ করে থাকি। গত মাসে সয়াবিন তেল প্রতি কেজি ৮৪ টাকায় কিনে ছিলাম। আর আজ সেই তেল কিনতে হচ্ছে ৯৪ থেকে ১০০ টাকায়। তিনি বলেন ভোজ্য তেলের পাশাপাশি কাঁচা বাজারে মরিচ, পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের মুল্য বৃদ্ধিতে ভোক্তারা বিপাকে পড়েছে। জেলা মার্কেটিং কর্মকর্তা এটিএম এরশাদ আলম খান জানান, নীলফামারীতে বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে প্রায় এক লাখ টন। এরমধ্যে রমজান মাসেই ব্যবহার হয় প্রায় ৫০ টন। এ ছাড়াও বৈশ্বিক করোনা মহামারিতে দেশে লকডাউন শুরু হয়। তখন বিশ্বের অন্যতম দেশ চীন ভোজ্যতেল সরবারহ বন্ধ করে দেয়। করোনাকে কেন্দ্রে করে নানা ধরনের ত্রান বিতরন শুরু হয়। এর মধ্যে সয়াবিনের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় খোলা বাজারে তেলের দাম একটু বেড়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে বাজার মনিটারিং প্রতি নিয়ত চলছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাজার ব্যবস্থাকে অস্থির করে তুলতে এ ধরনের কাজ করে। আর্ন্তজাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কারনে দেশের বাজারে তাৎক্ষনিক দাম বাড়ানো উচিত নয় বলে মনে করেন নীলফামারীর চেম্বার অব কর্মাসের জ্যৈষ্ঠ সহসভাপতি ফরহানুল হক। তিনি জানান, আর্ন্তজাতিক বাজার থেকে দেশে তেল আসতে সময় লাগে দেড় থেকে দুই মাস। ডিজিটাল যোগাযোগের কারনে অসাধু ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিয়ে ভোক্তাদের বিপাকে ফেলেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের উচিত হবে বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা।
×