ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বেওয়ারিশ কুকুরের প্রতি এ কেমন আচরণ !

প্রকাশিত: ২০:০৩, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

বেওয়ারিশ কুকুরের প্রতি এ কেমন আচরণ !

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রাণিপ্রেমীদের তীব্র আপত্তি আর প্রতিবাদেও হলো না শেষ রক্ষা। অবশেষে বেওয়ারিশ কুকুর অপসারণ শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। অথচ, প্রাণী কল্যাণ আইন অনুযায়ী, মালিকবিহীন কোন প্রাণী নিধন বা অপসারণে রয়েছে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা। কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই কুকুর অপসারণ প্রক্রিয়াকে অমানবিক উল্লেখ করে প্রাণী অধিকারকর্মীরা বলছেন, মানুষের প্রয়োজনেই দরকার কুকুর রক্ষা। যদিও সিটি কর্পোরেশনের দাবি এই প্রক্রিয়া সাময়িক। মধ্য দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা। করোনাকালের ফাঁকা ক্যাম্পাসে দুপুরের সুনসান নীরবতা। এরই মধ্যে চোখ আটকে যায় জাল দিয়ে তৈরি বিশেষ ধরনের ফাঁদ। ওষুধ ও সিরিঞ্জ নিয়ে প্রস্তুত আরও কয়েকজন। জালের ফাঁদে বিশেষ প্রক্রিয়ায় কুকুর আটকে প্রয়োগ করা হয় ইঞ্জেকশন। টিকা প্রয়োগ কিংবা বন্ধ্যাত্বকরণ নয়, এ তৎপরতা অন্য কারণে। একজন কর্মকর্তা বলেন, দুই রকমের ইনঞ্জেকশন আছে। এগুলো দিয়ে ঘুম পাড়ানো হয়, তারপর মাতুয়াইল ময়লার প্রজেক্টে ফেলে দেয়া হচ্ছে। প্রাণী কল্যাণ আইন- ২০১৯ বলছে, মালিকবিহীন প্রাণী নিধন বা অপসারণ সম্পূর্ণ বেআইনী। কোন কিছুর তোয়াক্কা না করেই অমানবিক কায়দায় চলে কুকুর অচেতন ও অপসারণ প্রক্রিয়া। রাষ্ট্রীয় আইনের পরিপন্থী এমন খামখেয়ালি কর্মকান্ডে হতাশ প্রাণীপ্রেমীরা। পিপল ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান স্থপতি রাকিবুল হক এমিল বলেন, সে কি বাঘ নাকি সিংহ যে তাকে এভাবে অপসারণ করতে হবে। এই ধরনের কাজ একেবারে ঘৃণ্য। স্পর্শকাতর এই কার্যক্রমে কোন পশু চিকিৎসক না থাকা অমানবিক বলছেন তারা। তিনি আরও বলেন, অজ্ঞান করার জন্য একজন ভেট লাগবে। ভেট তাদের শারীরিক পরিস্থিতি দেখবে। এদিকে, দক্ষিণ সিটির মেয়রের সম্মতি থাকলেও কুকুর অপসারণে আপত্তি খোদ ভেটেরিনারি কর্মকর্তার। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ভেটেরিনারি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, মেয়র বলেছেন কুকুর কমাতে হবে। কিন্তু আমি বলেছি এভাবে করা যাবে না। কুকুর অপসারণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে আইনী পদক্ষেপ নিতে পারে সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো।
×