ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে কোটিপতির সংখ্যা ৩ হাজার ৪১২ জন

প্রকাশিত: ২২:১১, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

দেশে কোটিপতির সংখ্যা ৩ হাজার ৪১২ জন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ করোনা মহামারীকালে যেখানে সাধারণ মানুষের আয় কমে গেছে, সেখানে দেশে নতুন করে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে গেছে। গত মার্চ থেকে জুন এই তিন মাসে ব্যাংকে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৩ হাজার ৪১২ জন। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, এই বছরের জুন মাস শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৬ হাজার ৩৭ জন। গত মার্চ শেষে এই সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৬২৫ জন। এদিকে জাতিসংঘের ফুড এ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের সহযোগিতায় প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ আয়োজিত এক ওয়েবিনারে জানানো হয়, করোনার কারণে আয় কমেছে শতকরা ৭২ দশমিক ৬ শতাংশ পরিবারের। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে সেসব পরিবার, যাদের বাৎসরিক আয় ১ লাখ টাকার কম। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত এক বছরে কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে ৫ হাজার ৬৪১ জন। এর মধ্যে করোনাকালেই বেড়েছে ৩ হাজার ৪১২ জন। অর্থাৎ গত বছরের জুন মাস শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার ৩৯৬ জন। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর থেকে ব্যাংকে কোটিপতির সংখ্যা কমে যায়। কিন্তু করোনাকালে (চলতি বছরের মার্চ থেকে জুন) হঠাৎ বেড়ে গেছে এই সংখ্যা। যদিও ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৭৯ হাজার ৮৭৭ জন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বিগত ১১ বছর ধরে কোটিপতির সংখ্যা বাড়ছে। ২০০৯ সালের জুন মাস শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ২১ হাজার ৪৯২ জন। এখন এই সংখ্যা ৮৬ হাজার ৩৭ জন। অর্থাৎ গত ১১ বছরে ৬৪ হাজার ৫৪৫ জন মানুষ কোটিপতির তালিকায় নতুন করে নাম লেখিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ২০২০ সালের জুন শেষে ৫০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা ব্যক্তি রয়েছেন এক হাজার ২৬৯ জন। ৪০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা ব্যক্তি রয়েছেন ৪১৮ জন। ৩৫ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ২২৪ জন। ৩০ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন ৩৮৩ জন। ২৫ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ৬০৫ জন। ২০ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ৯৯২ জন। ১৫ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ১ হাজার ৪৩০ জন। ১০ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ৩ হাজার ৩০৫ জন। পাঁচ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ৯ হাজার ৫২৯ জন। এক কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা আমানত রাখা ব্যক্তি ৬৭ হাজার ৮৮২ জন। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি ছিলেন মাত্র পাঁচ জন। ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বরে এই সংখ্যা বেড়ে ৪৭ জনে দাঁড়ায়। ১৯৮০ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৮ জনে। এরশাদ সরকারের পতনের সময় ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা ছিল ৯৪৩ জন। ১৯৯৬ সালের জুনে কোটিপতি ছিলেন দুই হাজার ৫৯৪ জন। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এ সংখ্যা দাঁড়ায় পাঁচ হাজার ১৬২ জনে। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ৮৮৭ জনে। ২০০৮ সালে ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ১৯ হাজার ১৬৩ জন।
×