ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

করোনাকালে জন্মহার নাটকীয়ভাবে বেড়েছে

প্রকাশিত: ২৩:৫৫, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

করোনাকালে জন্মহার নাটকীয়ভাবে বেড়েছে

করোনা মহামারীর মধ্যেই বিশ্বে নাটকীয়ভাবে জন্মহার বেড়েছে। ফলে প্রসূতিপূর্ব স্বাস্থ্য সেবার দিকে আরও নজর দেয়া উচিত গবেষকরা জানিয়েছেন। তা না হলে এ অবস্থা নতুন আশঙ্কার কারণ হয়ে উঠতে পারে। জন্মহার নিয়ে করা নতুন এই গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা মহামারী শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত সারাবিশ্বে গর্ভধারণ অনেকাংশে বাড়লেও গর্ভবস্থায় শিশু মৃত্যুহার কিন্তু অব্যাহতই রয়েছে। নেপালের নয় হাসপাতালে প্রসব সংক্রান্ত বিষয়ে আগত ২০ হাজারেরও বেশি প্রসূতিকে নিয়ে গবেষণাটি করা হয়েছে। এটি সম্প্রতি দ্য ল্যানসেন্ট গ্লোবাল হেলথ জার্নালে প্রকাশ হয়েছে। গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আশীষ কে.সি. এবং তার সহকর্মীরা। গবেষকরা জানিয়েছেন, কিছু দেশে প্রসূতি নারীদের যতটা যতœ-আত্তি দরকার তাদের প্রতি আসলে ততটা সেবা-যতœ নেয়া হয় না। তবে এসব নারীর প্রতি সেবা-যতœ কম নেয়ার কারণ হিসেবে তারা বিভিন্ন দেশে লকডাউনের ফলে সৃষ্ট সীমাবদ্ধতা ও ভঙ্গুর স্বাস্থ্য অবস্থাকেই দায়ী করেছেন। তারা জানিয়েছেন, জন্মহার বৃদ্ধির পেছনে এসব সীমাবদ্ধা ও সঙ্কটও দায়ী। অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সমুদ্র উপকূলীয় শহর এডিলিয়াডির ‘দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া ইউনিভার্সিটি’র প্রসূতিতন্ত্র বিভাগের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জেনি ওয়ারল্যান্ড জন্মহার বৃদ্ধির বিষয়ে বলতে গিয়ে প্রশ্ন রাখেন, ‘আমরা যখন কোভিড-১৯ থেকে গর্ভবতী নারীদের রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করছি, ঠিক তখন আমরা কী করলাম যে, জন্মহার এভাবে অপ্রত্যাশিতভাবে বৃদ্ধি পেল?’ গবেষণায় দেখা গেছে, চলতি বছর মার্চের শেষের দিকে করোনাভাইরাস মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর নেপালে লকডাউন দেয়া হয়। দেখা গেছে, সেখানে লকডাউনের আগে জন্মহার ছিল হাজারে ১৪ শতাংশ, তবে পরে মে’র শেষে এসে সে অবস্থা দাঁড়ায় হাজারে ২১ শতাংশ। অর্থাৎ প্রায় ৫০ শতাংশ জন্মহার বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটিতে লকডাউনের প্রথম চার সপ্তাহে জনগণকে শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়ের জন্য বাসার বাইরে যেতে দিতে অনুমোদন দেয়া হতো। অধ্যাপক আশীষ কে.সি.’র নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষণায় দেখা যায়, করোনার সময়ে জন্মহার তুলনামূলক বৃদ্ধি পেলেও অন্য সব উপাদান অনেকটাই অপরিবর্তিত রয়েছে। তাতে দেখা গেছে, হাসপাতালে প্রতি সপ্তাহে আগে যেখানে ছয় শ’ ৫১ শিশু জন্ম নিত, লকডাউনের মধ্যে সেখানে এক হাজার দুই শ’ ৬১ শিশু জন্ম নিয়েছে। তবে এমনটা হওয়ার পেছনে আর কি কারণ থাকতে পারে গবেষকরা তা এখনও খতিয়ে দেখছেন। অধ্যাপক আশীষ কে.সি. জানান, কোভিড-১৯’র কারণেই এমনটা হয়েছে তা আসলে ঠিক নয়, তবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনার একটি নেপথ্য প্রভাব থাকতে পারে। তিনি আরও জানান, অনেকেই করোনার ভয়ে হাসপাতাল যেয়ে সেবা নেননি। আশীষ কে.সি. বলেন, ‘নেপাল স্বাস্থ্য সেবায় গত ২০ বছরের চেয়ে অনেক উন্নতি করেছে।’ কিন্তু গত কয়েক মাসে এ সেবার মান পড়ে গেছে বলেও তিনি জানান। -নেচার জার্নাল অবলম্বনে।
×