ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দল শক্তিশালী করতে সাংগঠনিক সফরের সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত: ২২:৩৭, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

দল শক্তিশালী করতে সাংগঠনিক সফরের সিদ্ধান্ত

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ তৃণমূলের সাংগঠনিক কর্মকা-কে গতিশীল ও মজবুত করতে সভাপতিম-লীর সদস্যদের প্রধান করে টিমওয়ারী সাংগঠনিক সফরে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এই সাংগঠনিক সফরের মাধ্যমে দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়া জেলা-মহানগরসহ সব স্তরের সম্মেলনের মাধ্যমে দলকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলবে দলটি। একইসঙ্গে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যেসব জেলা-উপজেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি সেখানে পূর্ণাঙ্গ কমিটি এবং উপ-কমিটির তালিকা সম্পূর্ণ করা এবং ত্যাগী ও দুঃসময়ের নেতাদের মূল্যায়ন করার নির্দেশ এসেছে দলটির পক্ষ থেকে। বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার সরকারী বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর রুদ্ধদ্বার সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয় বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সাংগঠনিক সফরের মাধ্যমে দলকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে সভাপতিম-লীর সদস্যদের প্রধান করে ৮টি বিভাগীয় কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যেসব জেলা-উপজেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি সেখানে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট নেতাদের। এছাড়া দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়া জেলা-উপজেলা ও মহানগরের দ্রুত সম্মেলন করারও তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক শেষে সংসদ ভবনস্থ তার সরকারী বাসভবন থেকে ব্রিফিং করে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সম্পাদকদের উপ-কমিটির তালিকা জমা দিতে বলেছেন। একইসঙ্গে সম্মেলন সম্পন্ন হওয়া জেলাগুলোর মধ্যে যারা এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা জমা দেননি, তাদের আগামী সপ্তাহের মধ্যে তা জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সারাদেশে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদারের লক্ষ্যে ৮টি বিভাগীয় কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক ছাড়াও সভাপতিম-লীর সদস্যরা এসব কমিটি গঠনের দায়িত্বে থাকবেন এবং বিভিন্ন বিভাগীয় কমিটিতে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্যরাও থাকবেন। এছাড়া তৃণমূল পর্যন্ত দলকে পুনর্গঠন করার লক্ষ্যে যেসব জেলা ও মহানগর সম্মেলন হয়নি তাদের কমিটি গঠন করতে হবে। তবে তার আগে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে সম্মেলনের কাজ শেষ করতে হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ইতোপূর্বে যেসব উপজেলা, জেলা, মহানগর এবং সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন হয়েছে, তাদের মধ্যে যারা এখনও কমিটি জমা দেয়নি- তাদের আগামী সাতদিনের মধ্যে চূড়ান্ত কমিটি জমা দিতেই হবে। এ সময়ে তিনি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলার কমিটি করে জেলা সম্মেলন করার নির্দেশ দেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিভিন্ন পর্যায়ে উপ-কমিটিতে ত্যাগী নেতাকর্মীদের এবং দুঃসময়ে দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাদের মূল্যায়ন করতে হবে। কমিটি করার সময় কোনভাবেই স্বজনপ্রীতি দেখানো যাবে না। তিনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পর্যায়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদারেরও আহ্বান জানান। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মবার্ষিকী পালনের লক্ষ্যে সারাদেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মিলাদ মাহফিল, দোয়া এবং সীমিত আকারে সবপর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে দিবসটি পালনের আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। দেশের মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজনের অনুরোধও জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বৈঠক সূত্র জানা গেছে, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর দক্ষিণ এবং সহযোগী সংগঠনের জমা দেয়া পূর্ণাঙ্গ কমিটিগুলো দ্রুত ঘোষণা করার জন্য দলের সাধারণ সম্পাদককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ওবায়দুল কাদের শীঘ্রই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তা ঘোষণা করবেন। এছাড়া চলমান বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের সেকেন্ডওয়েভ তথা দ্বিতীয় পর্যায়ে সংক্রমণ বেড়ে গেলে দলীয়ভাবে করণীয় ও আগাম প্রস্তুতি নিয়ে বিশদ আলোচনা হয় বৈঠকে। সভায় উপস্থিত সভাপতিম-লীর সদস্যরা এ ব্যাপারে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন এবং করণীয় নির্ণয়ে পরামর্শ দেন। সভাপতিম-লীর বৈঠকে মহামারী করোনার ধাক্কার মধ্যেও দেশের মানুষকে রক্ষা করা এবং অর্থনীতির চাকা সচল রাখায় সরকার প্রধান শেখ হাসিনাকে দলের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়। এছাড়া আসন্ন পাঁচটি সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ের লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশনা দিয়ে নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয় সেদিকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ সভাপতিম-লীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফর উল্লাহ, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ড. আবদুর রাজ্জাক, লেঃ কর্নেল (অব) মুহম্মদ ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, আবদুল মতিন খসরু, আবদুল মান্নান খান, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×