ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সৌমিক মোল্লা

করোনার দুর্যোগে...

প্রকাশিত: ২১:১১, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

করোনার দুর্যোগে...

বাংলাদেশ বিশ্বের জনবহুল দেশগুলোর মধ্যে একটি। দেশটির আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যার হার বেশি। ভাড়া বাসায় বসবাস দেশের অধিকাংশ নাগরিকের জন্য তিক্ত ও চরম বাস্তবতা। বনের পাখির নিজস্ব বাসা থাকলেও সব নগরবাসীর নিজস্ব বাসা-বাড়ি থাকে না। পাখি নিজ নীড়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করে। অপরদিকে ভাড়া বাসায় ভাড়াটিয়াদের তিক্ত বাস্তবতার মধ্য দিয়ে জীবন অতিবাহিত করতে হয়। নগর জীবনে সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর বাসা খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ভাড়া বাসার সন্ধান করতে গিয়ে ভাড়াটিয়াদের বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। বাড়িওয়ালার কটুকথা শোনা, অবহেলিত হওয়া, অপমানিত ও লাঞ্ছিত হয়ে ফিরে আসা এরূপ বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয় ভাড়াটিয়াদের। এতকিছুর পরেও সাধ্যের মধ্যে সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর বাসার সন্ধান মেলে না। সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাসার জন্য প্রয়োজন মোটা অঙ্কের অর্থ। যা সব ভাড়াটিয়ার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। আবার বস্তিবাসী ভাড়াটিয়াদের অবস্থা আরও করুণ। যাদের লক্ষ্য বসবাসের জন্য কোন রকম একটি বাসা খুঁজে পাওয়া তারা বাসার আশপাশের পরিবেশ কেমন হবে তা বিচার করে না। নিরুপায় নাগরিক চিপা-চাপায় কবুতরের খোপের মতো ছোট ঘরে বসবাস করতে বাধ্য হয়। এ যেন ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। অনিচ্ছা সত্ত্বেও ভাড়াটিয়াদের এই নির্মম বাস্তবতা মেনে নিতে হয়। প্রকৃতপক্ষে এ রকমটি হওয়া উচিত নয়। সব নাগরিক সুন্দর, স্বাস্থ্যকর ও স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনযাপন পছন্দ করে। তবে বাস্তবতা বিপরীত হয়ে থাকে। সকল ভাড়াটিয়া সম্পর্কে বাড়িওয়ালা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। ভাড়াটিয়া কেমন হবে ? তার চাল-চলন, আচার-আচরণ কেমন? এরূপ নানা প্রশ্ন বাড়িওয়ালা মনের আকাশে উঁকি মারে। যার ফলে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়ার সম্পর্কের মাঝে দূরত্ব থেকে যায়। ভাড়াটিয়াদের নানা শর্ত মেনে নিয়ে ভাড়া বাসায় উঠতে হয়। যেখানে উল্লেখ থাকে মাসের প্রথমে অথবা চলতি মাসের শেষে বাসার ভাড়া পরিশোধ করতে হবে। বাড়িওয়ালার সঙ্গে ভাড়াটিয়ার সম্পর্ক সুখকর হতেও পারে আবার বেদনাদায়কও হতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে উভয়ের মাঝে সম্পর্ক স্বাচ্ছন্দ্যকর হয় না। যার ফল ভোগ করতে হয় ভাড়াটিয়াদের । ভাড়া বাসার ভাড়া বাড়লেও বৃদ্ধি পায়নি বাসার সুযোগ-সুবিধা। আবার সব বাসার পরিবেশও স্বাস্থ্যকর নয়। মহামারী করোনাভাইরাস ভাড়াটিয়দের জীবন আরও বিপন্ন করে দিচ্ছে। সকল ভাড়াটিয়া এই দুর্যোগকালীন সময়ে ভাড়া পরিশোধে সক্ষম নয়। ফলে অনেকে বাসা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। ভাড়া বাসার নিয়মনীতি কি এর কারণ হতে পারে? ভাড়া বাসার কোন নিয়মনীতি নেই। যার ফলে ভাড়াটিয়াদের এরূপ অপদস্থ হতে হয়। সুতরাং বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের সার্বিক দিক বিবেচনা করে সুপরিকল্পিত কিছু নিয়মনীতি থাকা উচিত। যা উভয়পক্ষের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে সহায়তা করবে এবং ভাড়াটিয়ারা উপকৃত হবেন। রমনা, ঢাকা থেকে
×