ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পাপন কেরকেটা

উভয় পক্ষেরই দায়িত্ব রয়েছে

প্রকাশিত: ২১:০৯, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

উভয় পক্ষেরই দায়িত্ব রয়েছে

জীবনটা পুষ্পশয্যা নয়। ঝামেলারও শেষ নেই। জীবনকে টিকিয়ে রাখতে হলে সংগ্রাম করতে হয়। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে যেতে হয়। জীবনকে টিকিয়ে রাখা ও জীবিকা নির্বাহের জন্য শহরে পাড়ি জমাতে হয়। তবে শহরে পাড়ি জমালেই শেষ নয়। ভাড়া বাসায় থেকে মৌল মানবিক চাহিদা পূরণ করতে হয়। কিন্তু ভাড়া বাসায় থাকার অভিজ্ঞতা ভিন্ন। সুখের চেয়ে তিক্ততার অভিজ্ঞতা অনেক। চাকরির বেতন নির্দিষ্ট সময়ে না পেলেও বাসা ভাড়ার টাকা সময়মতো দিতেই হয়। ভাড়ার টাকা নেয়ার ক্ষেত্রেও বৈষম্য দেখা যায়। কোন নিয়মনীতি না থাকায় একই এলাকায় সম-আয়তনের কক্ষ ও সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও বাড়িওয়ালা একেক জনের কাছে একেক ভাড়া নিয়ে থাকেন। কারও কাছে কম নেন, আবার কারও কাছে বেশি। বাড়িওয়ালাা স্বার্থের মায়াজালে আবদ্ধ। নেই পরিমিত গ্যাস, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা। বাসায় যথেষ্ট পরিমাণ সুযোগ-সুবিধা না দিয়ে বরং অর্থের মোহে ন্যায্য ভাড়ার চেয়ে লাগামহীনভাবে মাসের পর মাস মাসিক ভাড়া ক্রমবর্ধমান হতে থাকে। লাগামহীন ভাড়া পরিশোধ করতে স্বল্প আয়ের চাকরিজীবীদের হিমশিম খেতে হয়। অনেক সময় আর্থিক সঙ্কট থাকা সত্ত্বেও বাড়িওয়ালা টাকা নেয়ার জন্য নাছোড়বান্দা হয়ে থাকেন। সময়মতো টাকা দিতে না পারলে চাপ প্রয়োগ, খারাপ আচরণ ও কুরুচিপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করে থাকেন। যা একজন সভ্য মানুষের আচরণ হতে পারে না। ফলে তাদের মধ্যে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। সম্প্রতিকালে করোনাভাইরাসে মানুষের জীবন-যাত্রা যেখানে বাঁচা-মরার মাঝখানে সেখানে বাড়িওয়ালাদের রাজত্ব কমেনি। করোনাভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য ভাড়াটিয়ারা চাকরি ছেড়ে, বাসা তালা দিয়ে শহর থেকে গ্রামে পাড়ি দিচ্ছে। নেই কোন চাকরি, নেই কোন অর্থ। তবু বাড়িওয়ালাা ফোন করে বলেন মাসিক ভাড়া পরিশোধ করেন, না হয় জিনিসপত্র নিয়ে যান। বাড়িওয়ালা নিজস্ব কর্তৃত্ব ইচ্ছামতো প্রয়োগ করেন। মানুষ শুধু অর্থের পেছনে ছুটছে, হারিয়ে যাচ্ছে মানবিকতা। বাড়িওয়ালাা ভাড়াটিয়াদের প্রতি মানবিকতা না দেখিয়ে অর্থের ঝুলি বৃদ্ধি করছে। অর্থ অর্জনই তাদের মূল বিষয়। মানুষ তাদের কাছে বড় বিষয় নয়। অনেক ভাড়াটিয়া কোন উপায় না পেয়ে বাড়িওয়ালাদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। ভাড়াটিয়াদেরও কিছু না কিছু অজুহাত রয়েছে। ঠিকই তারা বিলাসিতায় থাকেন কিন্তু মাসিক ভাড়া দিতে অনেক টাল-বাহানা করেন। তাছাড়াও ভাড়াটিয়ারা অন্যের বাসা মনে করে ইচ্ছেমতো বাসা ব্যবহার করেন এবং সঠিক যত্ন নেন না। তারা ময়লা আবর্জনা যত্রতত্র ফেলে পরিবেশকে নোংরা করেন। প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাস ও পানির সঠিক ব্যবহার না করে অপচয় করে থাকেন। যার ফলে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন ও ঝামেলা দেখা যায়। মিঠাপুকুর, রংপুর থেকে
×