ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ট্যাক্স দিলে মিষ্টি, না দিলে ফাইন ॥ মেয়র আতিক

প্রকাশিত: ০০:১৫, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

ট্যাক্স দিলে মিষ্টি, না দিলে ফাইন ॥ মেয়র আতিক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিটিকে সুন্দর করতে গেলে সিটি কর্পোরেশনকে ট্যাক্স দিতে হবে। যারা ট্যাক্স দেবেন মিষ্টি খাবেন, আর যারা ট্যাক্স দেবেন না, তারা ফাইন (জরিমানা) খাবেন, বলেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম। মঙ্গলবার সকাল দশটায় গুলশান-২ গোলচত্বরে অবৈধ বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়। এক ব্যবসায়ী ডিএনসিসি থেকে পূর্বেই অনুমোদন নিয়ে নির্ধারিত মাপে সাইনবোর্ড স্থাপন করায় মেয়র তাকে মিষ্টি খাওয়ান। এ সময় মেয়র নাগরিকদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন। এছাড়াও জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখা তাদের সাইনবোর্ডের জন্য নির্ধারিত ফি জমা দেয়ায় ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকেও তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে মিষ্টি খাওয়ান। অভিযান চলাকালে অন্যদের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক ও উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরিদর্শনকালে মেয়র বলেন, আমি সবাইকে বলব এই শহরটা কিন্তু আমাদের, এই শহরে আমরা উপার্জন করি। আমাদের বাচ্চারা পড়াশোনা করে, এই শহরে আমারা বড় হয়েছি। এ শহরকে ভালবাসতে হবে। যে ঘরে আমি থাকি সেই ঘরের প্রতি যদি মায়া না করি, যে ঘরে থাকি সে ঘরে যদি থুথু ফেলি, তাহলে হবে না। বড় বড় ডেভেলপাররা কীভাবে তাদের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিল, সিটি কর্পোরেশনকে কোন ট্যাক্স না দিয়ে? এই শহরে আপনাদের এত বড় বড় ব্র্যান্ডিং করবেন, আপনি ব্যবসা করবেন, আর সিটি কর্পোরেশনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কোন ট্যাক্স দেবেন না, এটি হতে পারে না। মেয়র বলেন, আমি সবাইকে বলতে চাই, শহরে কোন ধরনের সাইনবোর্ড লাগাতে গেলে, আগে দেখুন সিটি কর্পোরেশনের নিয়ম কি? বিদেশে তো আপনারা এ রকম করতে পারবেন না। এদেশে কেন করবেন? এই দেশেরও গার্জিয়ান আছে। জনগণ চায় সিটি পরিষ্কার থাকুক। জনগণ চায় তারা ফুটপাথ দিয়ে যেন নির্বিঘেœ হাঁটতে পারে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ফুটপাথ সড়কে অবৈধভাবে থাকা বিভিন্ন সামগ্রী নিলাম করে দিচ্ছি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আজ সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড ইত্যাদি অপসারণ করছি। আমি জনগণকে অনুরোধ করব, আপনারা আমাদের জানান, কোন কোন ফুটপাথ ও রাস্তায় নির্মাণসামগ্রী আছে। মেয়র আরও বলেন, এই শহরে তারা ব্যবসা করছেন, তারা কিন্তু ‘ফিলান্থ্রোপি’ করছেন না। তারা ট্যাক্স দেবে না কেন? সিটিকে সুন্দর করতে গেলে সিটি কর্পোরেশনকে ট্যাক্স দিতে হবে। আজকে আমরা গুলশান, বনানী এবং প্রগতি সরণিতে অভিযান শুরু করেছি। বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড স্থাপন করার জন্য নীতিমালা আছে। এগুলো লাগানোর সময় নীতিমালা মানতে হবে। আমরা এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি, মিডিয়ায় প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানিয়েছি, প্রত্যেকটি গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, এমনকি মাইকিংও করা হয়েছে। অনেকেই গত দুই দিনে নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে অনুমোদন নিয়েছেন। একটি শহরের ভেতরে এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রম চলতে পারে না। তিনি বলেন, এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি ফুটপাথ ও সড়কে রাখা অবৈধ মালামাল উচ্ছেদ অব্যাহত থাকবে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার গুলশান-২ এর প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হামিদ মিয়ার নেতৃত্বে প্রায় ১৫০টি অবৈধ সাইনবোর্ড ও বিলবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়। বনানী ১১ নম্বর সড়কে অঞ্চল-৭ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এ সময় প্রায় শতাধিক সাইনবোর্ড ও বিলবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়া সড়ক ও ফুটপাথ অবৈধভাবে দখল করে জনগণের চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি করায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া প্রগতি সরণিতে অঞ্চল-৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরিনের পরিচালনায় উচ্ছেদ অভিযানে মোট ৫২টি সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়া ফুটপাথ ও সড়কে অবৈধভাবে মালামাল রাখায় তা নিলামে ৬৬ হাজার ৭০০ টাকা বিক্রি করা হয় এবং নয় মামলায় ৪৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
×