ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভাই হত্যার বিচার দাবিতে সিনহার বোনের ব্যতিক্রমী আবেদন

প্রকাশিত: ২৩:১৯, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

ভাই হত্যার বিচার দাবিতে সিনহার বোনের ব্যতিক্রমী আবেদন

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যা মামলায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে ব্যতিক্রমী আবেদন জানিয়েছেন শারমিন ফেরদৌস। সিনহার বোন ও সিনহা হত্যাকা-ের বাদী শাহরিয়ার ফেরদৌস তার আবেদনে আশা প্রকাশ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার বৃদ্ধ মা, আমাদের এবং জাতিকে হতাশ করবেন না। ভাইয়ের হত্যাকা-ে জড়িতদের অবশ্যই সুষ্ঠু বিচার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তার ভাই অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহাকে যেখানে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল, ঠিক ওই জায়গায় গিয়ে দু’হাত উঁচু করে এই প্রতিবাদ জানান সিনহার বড়বোন শারমিন। তিনি বলেন, সিনহা যেভাবে দু’হাত উঁচু করে গাড়ি থেকে নেমে এসেছিল, দু’হাত উপরে উঠিয়ে নামলে অস্ত্র কি পুলিশের দিকে তাক করা যায়? সেটি বাস্তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরীক্ষা বা যাচাই করে দেখলেন তিনি। মেজর সিনহা হত্যা মামলার বাদী সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বলেন, মেজর সিনহা গাড়ি থেকে নামার আদেশ পেয়ে দু’হাত উপরে তুলে সিনহার দিকে পিস্তল তাক করা লিয়াকতের উদ্দশ্যে ‘কামডাউন’ উচ্চারণ করে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে নামার সময়ই পর পর চারটা গুলি করে হত্যা করা হয় সিনহাকে। সাক্ষীদের কাছ থেকে জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে বোনের এ অভিনব প্রতিবাদ দেশবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ব্যাপকভাবে। তিনি ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে সিনহা হত্যার বিচার চেয়ে মামলা দায়ের করার পর থেকে এ পর্যন্ত ৪১ দিনে বাংলাদেশের একজন মানুষকেও বন্দুকযুদ্ধের নামে প্রাণ দিতে হয়নি। এই কারণেও প্রতিবাদী বোনের নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে বলে মন্তব্য করেন কক্সবাজার জজ আদালতের সিনিয়র আইনজীবী মোঃ জাহাঙ্গীর। জানা গেছে, দেশের এই সময়ের সবচেয়ে আলোচিত-সমালোচিত ঘটনা সেনা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক দেহরক্ষী চৌকস এই অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গত ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়া আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশ চেকপোস্টে বাহারছড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত তাকে বুকে চারটি গুলি করে হত্যা করেছিলেন। পরে মৃত অবস্থায় বরখাস্ত ওসি প্রদীপও বুকে লাথি ও গলায় পা চাপা দিয়ে রেখে সিনহার মৃত্যু নিশ্চিত করে বলে প্রত্যক্ষদর্মীরা জানিয়েছেন। কিন্তু চরম আক্রমণ আঁচ করতে পেরেছিলেন চৌকস সিনহা। তাই পুলিশ তার গাড়ি দাঁড় করানোর সঙ্গে সঙ্গে তিনি ‘কাম ডাউন’ বলে দু’হাত তুলে নিজে নত স্বীকার করে নেমে এসেছিলেন। কিন্তু তারপরও নিষ্ঠুর লিয়াকতের মনে দয়া আসেনি। মুহূর্তেই পরপর চারটি গুলি করে সিনহাকে নির্মমভাবে হত্যা করেন।
×